আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
১৭ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে নেমেছে যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্বের হার। বর্তমানে দেশটিতে সার্বিক বেকারত্বের হার কমে ৩ দশমিক ৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। খবর রয়টার্স, এনডিটিভি।
এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রে মোট ১ লাখ ৬৪ হাজার নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে। এ সময় বেকারত্ব কমে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৯ শতাংশে। যা ২০০০ সালের ডিসেম্বরের পর সবচেয়ে কম। যদিও এপ্রিলে ১ লাখ ৯০ হাজার নতুন কর্মসংস্থানের প্রত্যাশা করেছিলেন অর্থনীতিবিদরা।
আফ্রিকা বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকদের মধ্যে বেকারত্বের হার কমে ৬ দশমিক ৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এখন থেকে ৪৬ বছরের বেশি সময় আগে এ-সংক্রান্ত রেকর্ড সংগ্রহ শুরুর পর যা সর্বনিম্ন। প্রায় ছয় মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্ব ৪ দশমিক ১ শতাংশে স্থির ছিল। এ অবস্থায় বেকারত্ব হ্রাসের খবরকে স্বাগত জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
একের পর এক রাজনৈতিক কেলেঙ্কারিতে বিপর্যস্ত মার্কিন প্রেসিডেন্টের জন্য নিঃসন্দেহে সুখবর এটি। টেক্সাসে ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশনের এক সম্মেলনে এ প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, ‘এ শতাব্দীর শুরুর দিকের পর থেকে এই প্রথম বেকারত্ব ৪ শতাংশের নিচে নামতে দেখলাম।’
এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সব খাতেই কর্মসংস্থান হয়েছে। এর মধ্যে ব্যবসায় সেবা, স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা, নির্মাণ এবং ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে সবচেয়ে বেশি নিয়োগ হয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এ নিয়ে টানা ৯১তম মাস ধরে এসব খাতে কর্মসংস্থান বাড়ছে। পূর্ববর্তী তিন মাসে এসব খাতে গড়ে ২ লাখ ৮ হাজার কর্মসংস্থান হয়েছে; যা গত বছরের ১ লাখ ৮২ হাজারের চেয়েও বেশি। তবে এপ্রিলে গাড়ি নির্মাণ, সরকারি এবং পাইকারি ব্যবসা খাতে নিয়োগ কমেছে। তবে মার্চে দুর্বল নিয়োগের পর এপ্রিলে প্রত্যাশা অনুযায়ী নিয়োগ হয়নি বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। এছাড়া শ্রমবাজারে অংশগ্রহণের হারও জানুয়ারির পর সর্বনিম্নে নেমেছে। একইসঙ্গে অনেকেই কাজ খোঁজা ছেড়ে দিয়েছে, যা বেকারত্বের হার কমাতে অন্যতম ভূমিকা রেখেছে।
অর্থনীতিবিদরা আরও বলছেন, হঠাৎ করে কর্মহীনদের সংখ্যা কমে যাওয়ার অর্থ শ্রমশক্তির আকার বাড়েনি। আর শ্রমশক্তি বৃদ্ধি না হওয়ার ফলে প্রয়োজনীয় কর্মী পাওয়া কঠিন হওয়ার পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বেরেনবার্গ ক্যাপিটাল মার্কেটের মিকি লেভি শ্রমবাজারের প্রতিবেদনকে ‘মিশ্র ব্যাগ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তবে কর্মসংস্থানকে ‘সন্তোষজনক’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ আর্থিক বাজার, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে চলমান অস্থিরতা এবং উৎপাদন ব্যয়সহ অন্যান্য চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও অর্থনীতি নিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো এখনও আশাবাদী। যার প্রতিফলন দেখা গেছে নিয়োগ এবং বিনিয়োগে।’
কর্মসংস্থান বেড়ে যাওয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের সুদহার বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখছেন অর্থনীতিবিদরা। এ প্রসঙ্গে আরডিকিউ ইকোনমিকসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আসন্ন জুন বৈঠকে ফেড সুদের হার বাড়াতে পারে। সর্বশেষ মার্চে সুদের হার বাড়িয়েছে ফেড এবং চলতি বছর আরও দুই দফায় সুদের হার বৃদ্ধির আভাস দেয়া হয়েছে। যদিও আরডিকিউ ধারণা করছে, চলতি বছর ফেড চার দফায় সুদের হার বৃদ্ধি করবে।
দৈনিক দেশজনতা/ টি এইচ