২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৪:৩৩

রাশিয়াকে কৌশলগত অংশীদারিত্বের প্রস্তাব পাকিস্তানের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

স্নায়ুযুদ্ধকালে রাশিয়া ও পাকিস্তান পরস্পরের প্রতিপক্ষ ছিল। এখন দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের ঘনিষ্ঠতা তাৎপর্যপূর্ণভাবে উন্নীত হয়েছে। এ বছর দুই দেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৭০তম বার্ষিকী উদযাপন করছে। এর মধ্যেই রাশিয়াকে ‘বহুপাক্ষিক কৌশলগত অংশীদারিত্বের’ প্রস্তাব দিয়েছে পাকিস্তান।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতর থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা বিশ্বাস করি দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি বহুপাক্ষিক কৌশলগত অংশীদারিত্ব পাকিস্তান ও রাশিয়ান ফেডারেশনের জনগণের জন্য উপকারী হবে এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করবে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সাম্প্রতিককালে বেশ কিছু পদক্ষেপের কারণে পাকিস্তান-রাশিয়া সম্পর্ক ঐতিহাসিক উচ্চতায় পৌঁছেছে। তাই কূটনীতিক সম্পর্কের বার্ষিকী উভয় দেশে বেশ জাঁকজমকের সঙ্গে উদযাপন করা হচ্ছে।

পরিবর্তিত আঞ্চলিক দৃশ্যপটে পাকিস্তান ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্কের এরই মধ্যে অসামান্য উন্নতি হয়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে দুই দেশেই পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষার্থে এই সম্পর্ককে এগিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু এই প্রথমবারের মতো পাকিস্তান এ সম্পর্ককে দ্বিতীয় পর্যায়ে উন্নীত করার ব্যাপারে তাদের আকাঙ্ক্ষার কথা জানাল।

এই পদক্ষেপকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে এবং রাশিয়ার সঙ্গে আরও বৃহৎ সহযোগিতার ক্ষেত্রে পাকিস্তানের মনোভাবের পরিবর্তনটি এখানে ফুটে উঠেছে। পাকিস্তানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের যে কঠোর অবস্থান, সে কারণেই পাকিস্তানের দৃষ্টিভঙ্গির এ পরিবর্তন এসেছে। রাশিয়া নিজেও পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে চায়। কারণ তাদের দীর্ঘদিনের মিত্র ভারত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তুলছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ড. মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, পাকিস্তান-রাশিয়া বন্ধুত্ব দ্রুত একটি পরিণত অংশীদারিত্বের দিকে যাচ্ছে। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক এখন পারস্পরিক আস্থা, স্বার্থের অভিন্নতা এবং গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ইস্যুতে সমমতের ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত।

ড. ফয়সাল আরও বলেন, অভিন্ন প্রতিবেশী দেশগুলোতে স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে দুই দেশের অবস্থান কাছাকাছি এবং আঞ্চলিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির ব্যাপারে উভয়ের দৃষ্টিভঙ্গি একই। তিনি বলেন, সম্পর্কের ঊধ্বগতিটাকে শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে উচ্চপর্যায়ের যোগাযোগ রক্ষা এবং ব্যাবসা বাণিজ্য, ব্যাংকিং ও অর্থায়ন এবং জ্বালানি ও অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিভিন্ন খাতে সহযোগিতাকে জোরদার করার মাধ্যমে বজায় রাখা হচ্ছে।

পাকিস্তানের মুখপাত্র বলেন, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোতেও পরস্পরকে সহযোগিতা করেছে দুই দেশ। রাশিয়া এসসিওতে (সাংহাই কোঅপারেশান অর্গানাইজেশানে) পাকিস্তানের সদস্যপদের শক্ত সমর্থক ছিল। সেখানেও অভিন্ন স্বার্থের বিষয়গুলো নিয়ে সহযোগিতা করার আরেকটি ক্ষেত্র উন্মুক্ত হয়েছে। তিনি বলেন, পাকিস্তান রাশিয়াকে গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বশক্তি, উন্নয়ন সহযোগী এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার পক্ষে নীরবে অবদান রেখে যাওয়া দেশ হিসেবে বিবেচনা করে।

আফগানিস্তানসহ বেশ কিছু আঞ্চলিক ইস্যুতে পাকিস্তান, রাশিয়া ও চীন ঐকমত্য গড়ে তুলেছে বলে মনে হচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির বিপরীতে তিনটি দেশেরই অবস্থান হল আলোচনার মাধ্যমে আফগানিস্তানের সংঘাতের অবসান ঘটানো।

দৈনিক দেশজনতা/ টি এইচ

প্রকাশ :মে ৬, ২০১৮ ১২:২৭ অপরাহ্ণ