নিজস্ব প্রতিবেদক:
খুলনার পাইকগাছা উপজেলায় সনাতন পদ্ধতি ছেড়ে আধা নিবিড় (সেমি ইনটেন্সি) চিংড়ি চাষে ঝুকছে চিংড়ি চাষীরা। সরকারি সহায়তা পেলে এ পদ্ধতির চাষ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেমি ইনটেন্সি পদ্ধতির চিংড়ি চাষ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে সরকার থেকে প্রতি বছর আরো হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব পাবে বলে সংশিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, উপজেলায় আশির দশকে সনাতন পদ্ধতিতে লবণ পানির চিংড়ি চাষ শুরু হয়। গত বছর এ পদ্ধতির চাষ করে ৪ হাজার ৭১০ মেট্রিক টন চিংড়ি রপ্তানী করে ২শ ৩৬ কোটি টাকার রাজস্ব পায়। যার ঘের সংখ্যা ৩ হাজার ৯৪০টি, আয়তন- ১৭ হাজার ৭৫ হেক্টর। একর প্রতি ২৩২ কেজি চিংড়ি উৎপাদন হয়। চলতি বছর এ পদ্ধতির চাষ থেকে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজার মেট্রিক টন চিংড়ি।
এদিকে আধা নিবিড় তথা সেমি ইনটেন্সি চাষ পদ্ধতিতে গত বছর একর প্রতি উৎপাদন হয়েছে ২ হাজার ৫শ কেজি। সাপোয়ান একুয়া কালচারের ম্যানেজার সমর দাশ জানান, আধা নিবিড় চিংড়ি চাষে একরপ্রতি গত বছর খরচ হয়েছে প্রায় ৮ লাখ টাকা। যা থেকে আয় হয়েছে ২০ লাখ টাকা। যার ওজন ১৫-২০টিতে কেজি। ৫ মাস বয়সে দুটি সার্কেলে এ মাছ চাষ করা হয়। অথচ, সনাতন পদ্ধতিতে একর প্রতি চিংড়ি উৎপাদন হয়েছে ১০২ কেজি। যার মূল্য ৫শ টাকা কেজি দরে ৫১ হাজার টাকা। সনাতন পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষে ভাইরাস জাতীয় রোগে আক্রমণ হলেও সেমি ইনটেন্সি নিবিড় চাষে রোগ বালাইয়ের পরিমাণ খুবই কম এবং উৎপাদনের পরিমাণ অধিক হওয়ায় ইতোমধ্যে পাইকগাছায় ৫টি এ ধরণের প্রজেক্ট গড়ে উঠেছে। প্রজেক্টগুলো হলো- সাফোয়ান একুয়া কালচার, সাফায়াত একুয়া কালচার, সি ফুড ফার্মেসিং এ প্রসেসিং, সুমাইয়া একুয়া কালচার ও ইসফি একুয়া কালচার।
সনাতন পদ্ধতির চিংড়ি চাষী মোবারেক সরদার জানান, সরকার সেমি ইনটেন্সি বা নিবিড় চিংড়ি চাষের ক্ষেত্রে সহায়তা করলে সনাতন পদ্ধতির চিংড়ি চাষের বিলুপ্তি ঘটবে। বিপুল পরিমাণ চিংড়ি উৎপাদিত হলে তার থেকে সরকার হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব পাবে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শহীদুল্লাহ জানান, সনাতন পদ্ধতির চিংড়ি চাষের সময় ফুরিয়ে আসছে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চিংড়ি উৎপাদিত হলে চিংড়ি চাষীরা যেমন লাভবান হবে, তেমনি সরকার পাবে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা।
দৈনিক দেশজনতা/ এমএইচ