চাঁদপুর প্রতিনিধি:
তর যেন আর সইছে না। কখন নামবে নদীতে! কখন যে পরিবারের মুখে হাসি ফুটাবে। দেখে মনে হয়, এমনিভাবে অপেক্ষার প্রহর গুণছে চাঁদপুরের সরকার নিবন্ধিত ৫১ হাজার জেলে। জেলে পাড়াগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে আনন্দের বন্যা। দীর্ঘ দু’মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে নামার আনন্দ। ১ মে রাত ১২টা এক মিনিট থেকে নদীতে জেলেরা মাছ ধরতে পারবেন। দেশের ইলিশ রক্ষায় সরকার প্রতি বছর ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল দু’মাস অভয়াশ্রম কর্মসূচি ঘোষণা করে।
সোমবার বিকেলে সদর উপজেলার বড় স্টেশন, হরিণা ও বহরিয়া এলাকার জেলে পাড়াগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, তাদের চোখে-মুখে আনন্দের ঝিলিক। মাছ ধরার প্রস্তুতিতে জেলেরা মহাব্যস্ত। ইতোমধ্যে নৌকা মেরামত, জাল ঠিক করা, নৌকার দাঁড় তৈরি করা, রাত জেগে নদীতে থাকার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এমনকি অনেকে দাদন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধও হয়েছেন। আলাপকালে জেলে রহমান, খায়ের, লিটন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা সরকারের নিয়ম মাইন্যা না খাইয়া মরছি, আর কেউ কেউতো পলাইয়া পলাইয়া মাছ ধইরাতো অনেক টাকা বানাইছে, তখন সরকার কই আছিলো।’
চাঁদপুরের হামইচর উপজেলার ৪ নম্বর নীলকমল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন সরদার জানান, এ বছরই প্রথম কর্মসূচির পূর্বেই জেলেদের হাতে খাদ্য সহায়তা পৌছে দেয়া সম্ভব হয়েছে। যে কারণে জেলেরাও এ কর্মসূচি সফল হতে সহযোগীতা করেছে। অবশ্য কিছু কিছু অসাধু জেলে নদীতে নামলেও এর অধিকাংশ জেলে চাঁদপুর জেলার বাহিরের জেলাগুলো থেকে এসেছে।
যদিও জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকী জানান, আশা করছি এ বছর আশানুরূপ ইলিশ ধরা পড়বে। কারণ জেলে পেশার সাথে সম্পৃক্ত সকলেই এ বছর অভয়াশ্রম কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহযোগীতা করেছেন। এছাড়াও আমরা নিবন্ধিত ৫১ সহস্রাধিক জেলেকে বরাদ্দকৃত ৪০ কেজি করে চাল বিতরণ অব্যাহত রেখেছি।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত দুই মাসে ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ প্রশাসন, কোস্টগার্ড এবং মৎস্য বিভাগ ইলিশ সংরক্ষণে এবং জাটকা রক্ষায় সাড়ে চার শতাধিক অভিযান মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে দেড়শ জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে। ২৭ লাখ বর্গমিটার কারেন্ট জাল জব্দ করে ধ্বংস করা হয়েছে। অভিযানে ১২ মেট্রিক টন জাটকা আটক করে গরিব-দুঃস্থ ও এতিমদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি