২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৯:০০

আরেকটি আরব বসন্ত অনিবার্য: আঞ্চলিক বিশেষজ্ঞ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার কয়েকটি দেশে ২০১০ সালে গড়ে উঠা সেই ‘আরব বসন্তের’ ৮ বছর পেরিয়েছে। অর্থনৈতিক মন্দা, অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও বেকারত্বের চ্যালেঞ্জের মুখে এই অঞ্চলটি আরেকটি বিদ্রোহের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। ২০১০-১১ সালে গণবিদ্রোহের মুখে কয়েকটি আরব দেশের শাসকদের ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছে। অন্যদিকে ক্ষমতার অপব্যবহরও অনেক কমেছে। কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠিত আল জাজিরার এক ফোরামে আঞ্চলিক বিশেষজ্ঞরা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, এটা ‘অনিবার্য’ যে, বিশ্বের অধিক সংখ্যক যুব সমাজের মাধ্যমে এই অঞ্চলে একটি পরিবর্তন আসবে। সুদানের খার্তুম বিশ্ববিদ্যালয়ের সোশ্যাল সায়েন্সের অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহজাব হারুণ বলেন, ব্যাপকভাবে অনিয়ন্ত্রিত নগরায়ণ, চাকরির বাজারে চাপ, অন্যান্য সামাজিক-অর্থনৈতিক বিষয়গুলির মধ্যে রয়েছে আরব সমাজের যুবকদের অধিক প্রত্যাশার প্রধান কারণ। মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার কয়েকটি দেশে ‘আরব বসন্তে’র ৩ টি কারণ তিনি উল্লেখ করেছেন। তার মধ্যে বাজারজাত করণ, অর্থনীতি এবং অনিয়ন্ত্রিত ও অপরিকল্পিত নগরায়ণ। তিনি বলেন, যতদিন এই অবস্থা স্থিতিশীল থাকবে ততদিন আরব সমাজে প্রতিষ্ঠিত শাসন ক্ষমতা হ্রাস করার চেষ্টা চলবে।

সভায় বক্তারা আরও বলেছেন, আরব বিশে^ ৪০০ মিলিয়ন মানুষ রয়েছে যাদের বয়স ২৫ বছরের চেয়ে কম। আরব বিশ্বের ভবিষ্যতে যেকোনো উন্নয়নে তাদের বড় ভুমিকা থাকবে। তারা বলেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অভাব এবং সমাজে আইনের শাসনের কঠোন নিয়ন্ত্রণ আরেকটি ‘আরব বসন্তে’র কারণ হতে পারে।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ১৮ ডিসেম্বর  তিউনিসিয়া থেকে শুরু হয়েছিল ‘আরব বসন্ত’ বা আরব বিদ্রোহ। দেশটির এক মফস্বল শহর সিদি বাউজিদে মুহাম্মদ বুয়াজিজি নামে ২৬ বছরের এক ফল বিক্রেতা প্রশাসনের দুর্নীতি আর বেকারত্বের জীবনে ক্ষুব্ধ হয়ে নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এঘটনার মধ্যদিয়েই সৃষ্টি হয় ‘আরব বসন্তের’। মাত্র ২৭ দিনের মাথায় প্রেসিডেন্ট জয়নুল আবেদিন বেন আলীর ২৩ বছরের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটে।

বিক্ষোভের মুখে বাধ্য হয়ে বেন আলী পালিয়ে যান সৌদি আরবে। তিউনিসিয়ার পর আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে  আলজেরিয়া, জর্ডান, মিসর এবং ইয়েমেনসহ আরবের অন্যান্য দেশে। এতে করে কয়েক দশক ধরে গড়ে ওঠা শাসনযন্ত্র তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে। দীর্ঘদিন স্বৈরশাসন বা চরম রাজতন্ত্র, মানবাধিকার লঙ্ঘন, সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দুর্নীতি, দুর্বল অর্থনীতি, অর্থনৈতিক মন্দা, বেকারত্ব, চরম দরিদ্রতা ও শিক্ষিত হতাশাগ্রস্ত যুবসমাজ বিশেষ করে শিক্ষিত বেকার যুবকদের অসন্তোষ এই বিপ্লবের পেছনে প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছিল।

এ ছাড়াও এসব দেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ মুষ্টিমেয় কয়েকজনের হাতে ছিল। যে কারণে তারা কয়েক দশক ধরে ক্ষমতায় ছিল। সম্পদের সুষম বণ্টন হয়নি। ফলে খরা ও খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে আন্দোলনের পথ বেছে নিতে বাধ্য হয় সাধারণ মানুষ। সূত্র: আল জাজিরা

 

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি

প্রকাশ :এপ্রিল ৩০, ২০১৮ ১:৩৫ অপরাহ্ণ