অনলাইন ডেস্ক:
লে পারিসিয়েন নামে এক ফরাসি পত্রিকায় গত রোববার একটি খোলা চিঠিতে মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ পবিত্র কোরআন শরিফের বিরুদ্ধে ইহুদি বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, ‘বিদ্বেষমূলক’ আয়াতগুলো কোরআন শরিফ থেকে মুছে ফেলার জন্য। আর এমন একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করে সমর্থন জানিয়েছেন ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজি। তার সঙ্গে আছেন জনপ্রিয় ফরাসী অভিনেতা জেরার্ড দেপার্দিউসহ ৩০০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি।
চিঠিতে দাবি করা হয়, সম্প্রতি ফ্রান্সে ১১ জন ইহুদি খুন হয়েছে। এগুলোর জন্য দায়ী করা হয় মুসলিম উগ্রবাদীদের। মিরিয়েলে নল নামে ৮৫ বছর বয়সী বৃদ্ধের উল্লেখ করা হয়, যাকে গত মাসে নিজ বাসায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। এটাকেও মুসলিমদের কাজ বলে দাবি করা হয়।
পত্রিকায় প্রকাশিত চিঠি নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে দেশজুড়ে। ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন মুসলিম নেতারা। প্যারিসের গ্র্যান্ড মসজিদের ইমাম দালিল বুবাকেউর বলেন, এই চিঠিতেই বিভেদ আর বিদ্বেষ ছড়ানো হয়েছে। ইহুদি বিদ্বেষ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত। কিন্তু মুসলিমদের টার্গেট বানানোও ঠিক নয়।
বোর্দো শহরের প্রধান মসজিদের ইমাম তারেক ওব্রোউ বলেন, সংঘাত-সহিংসতার কথা অনেক ধর্মগ্রন্থেই আছে। কিন্তু শুধু মুসলিমদেরই দোষারোপ করা হয় কেন?
কোরআনের আয়াত বাদ দেয়ার যে দাবি উঠেছে, তার তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের ইসলামের বিষয়ে ‘মূর্খ’ বলে অভিহিত করেছেন অনেকে। কেউ লিখেছেন, “রংধনু থেকে যেমন কোন একটি রং কেড়ে নেয়া চলে না, তেমনি কোরআন থেকে কোনো আয়াত মুছে ফেলা সম্ভব নয়।”
এদিকে ইহুদিদেরই একটি সংগঠন ‘দ্য ইউনিয়ন অফ ফ্রেঞ্চ জিউস ফর পিস’ চিঠির প্রতিবাদে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে সব ধরনের ইসলাম বিদ্বেষের সমালোচনা করা হয়। ফ্রান্সের ইহুদিদের নিয়ে চিন্তিত হলেও, ফিলিস্তিনে যে জাতিগত নিধন চলছে, সে বিষয়ে নীরব থাকার জন্য নিন্দা জানানো হয় চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের। বলা হয়, ইসরায়েলের সমালোচনাকেই ইহুদি বিদ্বেষ বলে চালিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা করছে একটি গোষ্ঠী।
দৈনিক দেশজনতা/ টি এইচ