আবহওয়া ডেস্ক :
পয়লা বৈশাখ থেকেই দেশের কোথাও না কোথাও আঘাত হানছে ঝড়। গতকাল রোববারও কালবৈশাখীর ঝাপটায় ঢাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এলাকায় গাছপালা উপড়ে পড়ে। বজ্রপাতে কিশোরগঞ্জ ও হবিগঞ্জ জেলায় ছয়জন মারা গেছে। কালবৈশাখী ও বজ্রঝড়ের রেশ শিগগির কমছে না। আজ সোমবারও সারাদেশে ঝোড়ো হাওয়াসহ বিজলি চমকানো বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আজ সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে জানানো হয়, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বিজলি চমকানো বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টিও হতে পারে।
বজ্রমেঘের মধ্যে থাকা পানির কণা ভেঙে নেগেটিভ চার্জ ও পজিটিভ চার্জ সৃষ্টি হয়ে থাকে। নেগেটিভ চার্জ থাকা মেঘের সঙ্গে পজিটিভ চার্জ রয়েছে—এমন আলাদা আরেকটি মেঘের সংঘর্ষ হলে বিজলি চমকায়। আবার একই মেঘের মধ্য থেকেও বিজলি চমকাতে পারে। এতে প্রাণহানি হয় না। কেবল বিদ্যুৎ চমকায়। তবে মাটিতে নেগেটিভ চার্জ থাকে। তাই পজিটিভ চার্জ থাকা মেঘ মাটি বা ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি চলে এলে বজ্রপাত সৃষ্টি। এই ব্রজপাত প্রকৃতির জন্যও ক্ষতিকর এবং প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে থাকে।
আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক গণমাধ্যমকে বলেন, বাংলাদেশে গ্রীষ্মকালে জলীয় বাষ্প আসে আবর সাগর ও বঙ্গোপসাগর থেকে। আরব সাগরের বাতাস শুষ্ক ও গরম থাকে এবং বঙ্গোপসাগর থেকে আসা বাতাস আর্দ্র ও উষ্ণ থাকে। এই দুই বাতাস মিলে বজ্রঝড় হয়। মৌসুমি বায়ু আসার আগে দেশে এ ধরনের ঝড় হয়। ১৯৫১ থেকে ২০১৭ সালের তথ্য পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এই ঝড়ের স্থায়িত্ব কম। সাধারণত বিকেল চারটা থেকে রাত আট কিংবা দশটা পর্যন্ত ঝড় হয়। আবার ভোররাত চারটা থেকে সকাল আটটার সময়ও কালবৈশাখী বয়ে যায়। উত্তরাঞ্চল থেকে মধ্যাঞ্চলের দিকে চলে আসে। একটি এলাকায় এক ঘণ্টা থেকে বড় জোড় তিন ঘণ্টার বেশি ঝড় স্থায়ী হয় না।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়, রাজধানী ঢাকায় দক্ষিণ পশ্চিম অথবা দক্ষিণ দিক থেকে অস্থায়ীভাবে ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।
গতকাল সকাল ছয়টা থেকে আজ সকাল ছয়টা পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে বাগেরহাটের মোংলা ৪৯ মিলিমিটার। একই সময়ে রাজধানী ঢাকায় বৃষ্টি হয়েছে ৫ মিলিমিটার।
ঝড়বৃষ্টি হলেও গরম খুব একটা কমছে না। তাপমাত্রা তুলনামূলক বেশি দেশের দক্ষিণ ও উত্তরাঞ্চলে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৩৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানীতে এটি ছিল ৩৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
দৈনিক দেশজনতা/ টি এইচ