নিজস্ব প্রতিবেদক:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে এক লঞ্চ মাস্টারকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার বেলা দুইটার দিকে সদরঘাটের পন্টুনে এ ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার আশরাফুল ইসলাম (৩৫) পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলা থেকে ঢাকা নৌপথে চলাচলকারী লঞ্চ এমভি মহারাজ-৭-এর মাস্টার (দ্বিতীয় শ্রেণির চালক) পদে কর্মরত রয়েছেন।
জানা গেছে, শনিবার বিকেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুল ইসলামসহ শাখা ছাত্রলীগের ছয়জন নেতা-কর্মী ভান্ডারিয়া লঞ্চঘাট থেকে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী এমভি মহারাজ-৭ লঞ্চে ওঠেন। ঢাকার উদ্দেশে আসার পথে সন্ধ্যার দিকে লঞ্চটি ডুবোচরে আটকে যায়। এ সময় তরিকুল ইসলামসহ ছাত্রলীগের অন্য নেতা-কর্মীরা লঞ্চের মাস্টার ব্রিজের ছাদের ওপর উঠে ঘোরাফেরা করতে থাকেন। এতে আশরাফুল ইসলাম তাঁদের ছাদ থেকে নামতে বলেন। এ নিয়ে আশরাফুলসহ লঞ্চের অন্য কর্মচারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বাগ্বিতণ্ডা ঘটে। পরে লঞ্চে অবস্থানরত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মুঠোফোনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিষয়টি জানান।
পরদিন রোববার দুপুর থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের শতাধিক নেতা-কর্মীরা সদরঘাট টার্মিনালে এসে অবস্থান নেন। বেলা দুইটার দিকে লঞ্চটি সদরঘাটের পূর্ব দিকের পল্টুনে ভিড়ালে তৎক্ষণাৎ টার্মিনালে অবস্থানরত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁদের সভাপতির উপস্থিতিতে লঞ্চের তৃতীয় তলায় মাস্টার ব্রিজে (চালকের কক্ষ) ঢুকে আশরাফুল ইসলামকে কিলঘুষি মারতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন। পাশাপাশি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আশরাফুলকে কান ধরে ওঠবস করান। তখন লঞ্চের অন্য কর্মচারীরা এসে তাঁকে রক্ষা করেন।
হামলায় আহত আশরাফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মাস্টার ব্রিজের ছাদে ওঠা নিষেধ থাকা সত্ত্বেও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সেখানে উঠে ঘোরাফেরা করতে থাকেন। আমি তাঁদের ছাদ থেকে নামতে বলি। তখন ছাত্রলীগের সভাপতিসহ অন্যরা আমার ওপর চড়াও হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। পরদিন বেলা দুইটার দিকে আমাদের লঞ্চটি সদরঘাট ভিড়লে টার্মিনালে অবস্থানরত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আমাকে বেদম মারধর করেন। আমার পরনের গেঞ্জি ও প্যান্ট ছিঁড়ে ফেলে। জোর করে আমাকে কান ধরে ওঠবস করান।’
এমভি মহারাজ-৭ লঞ্চের সুপারভাইজার দীপক দাস বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আশরাফুলের বাগ্বিতণ্ডার বিষয়টি তৎক্ষণাৎ মীমাংসা করে দেওয়া হয়েছিল। তারপরেও নিজেদের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝির কারণে এ ঘটনা ঘটে।’ ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট টার্মিনালের পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত উপসহকারী পরিদর্শক আবদুস ছাত্তার বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনিনি। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করতে আসেনি।’
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি