মারুফ শরীফ, নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেছেন, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটলে এর সকল দায়-দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে।
তিনি বলেন, চেয়ারপারসনের যথাযথ চিকিৎসার জন্য আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি, অথচ সরকার বিন্দুমাত্রও কর্ণপাত করছে না। বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য কারাগারে ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে বলে আমরা যে খবর পাচ্ছি, এতে সারা দেশ ও জাতি উৎকণ্ঠিত। বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে নোংরা রাজনীতি না করে তাঁকে মুক্তি দিয়ে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করারও আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।
আজ শনিবার বেলা সোয়া ১১টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
গতকাল শুক্রবার বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা কারাকর্তৃপক্ষের অনুমতি নেয়ার পরও তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারেননি এমন অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ১৮ এপ্রিল আমিসহ আমাদের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য জনাব মির্জা আব্বাস ও জনাব নজরুল ইসলাম খানকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। অথচ সুস্পষ্টভাবে কোনো কারণ দেখানো হয়নি। জেলের ভেতর থেকে টেলিফোনের মাধ্যমে জনাব মির্জা আব্বাসকে জানানো হয় যে আজ ম্যাডামের সঙ্গে দেখা করা সম্ভব হচ্ছে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, ১০ দিন যাবৎ পরিবারের সদস্যরা বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পাননি। এতে সকলের উদ্বেগ আরও বেড়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে তাঁকে এবং তাঁর দলকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া। গণবিচ্ছিন্ন ও রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে যাওয়া সরকারের ২০১৪-এর একতরফা নির্বাচনের মতো প্রহসনের মধ্য দিয়ে আবারও ক্ষমতা দখলই হচ্ছে তাদের মূল উদ্দেশ্য।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, কারাগারের যে কক্ষে তাঁকে রাখা হয়েছে, তা সংবিধান পরিপন্থী। সরকারি ডাক্তারদের সুপারিশকৃত অর্থোপেডিক বেড তাঁকে সরবরাহ না করা, তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা না করানো, দলের নেতৃবৃন্দ ও পরিবারের সদস্যদের তাঁর সঙ্গে দেখা করতে না দেয়া অত্যন্ত হীন এবং উদ্দেশ্যমূলক।
মির্জা ফখরুল বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য বিষয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি করে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চায় সরকার। বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে এবং আসন্ন নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চায় সরকার। বেগম খালেদা জিয়াকে তাদের এত ভয় কেন?
সরকারকে উদ্দেশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সাহস আপনাদের(সরকারের) নেই। আপনারা এখন জনগণ থেকে এ কারণেই বিচ্ছিন্ন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ