নাটোর প্রতিনিধি:
বিয়ের প্রলোভনে একাধিকবার ধর্ষণ। সর্বশেষ বিয়েও করেছেন। কেবল তাকে স্বীকৃতি দেননি প্রতারক স্বামী ইমরান হোসেন (২৬) ও তার পরিবার। স্বামীর ঘরে ফিরে সংসার বাঁধতে চেয়েছিলেন ওই গৃহবধূ মাহবুবা মাসুদ রুসমিলা লরিন (২৫)। সেই আশায় শুক্রবার বিকালে স্বামীর বাড়িতে অবস্থান করেন তিনি। সেখানে নূণ্যতম আশ্রয়ও জুটেনী। কেবল শারিরীক নির্যাতন, লাঞ্চনা-ভৎসনাই পেয়েছেন।
ওই গৃহবধূ মাহবুবা মাসুদ রুসমিলা লরিন অভিযোগ করেন,- শুক্রবার বিকালে গুরুদাসপুর পৌর সদরের চাঁচকৈড় মধ্যমপাড়া মহল্লায় তার স্বামীর বাড়িতে (মোশারফ ভিলা) যান। এসময় শশুর মোশারফ ও শাশুরীসহ শশুরবাড়ির লোকজন তাকে জোরপূর্বক বাড়ি থেকে বের করে দেন। এরপর তিনি বাড়ির মূল ফটকের সামনে অবস্থান করছিলেন। রাত আটটার দিকে শশুর মোশারফের ইন্ধনে সোহেল রানা, রুবেল হোসেন, মিন্টু ও বাটুল তাকে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। গালমন্দ লাঞ্চনা-ভৎসনা করে। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। রাতেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
তিনি আরো অভিযোগ করেন,- গুরুদাসপুর পৌর সদরের চাঁচকৈড় মধ্যমপাড়া মহল্লার বাসিন্দা মোশারফ হোসেনের ছেলে ইমরান হোসেনের সাথে প্রায় দুই বছর আগে তার প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ইমরান তাকে দুই বছর ধরে ধর্ষণ করে আসছিলেন। ইমরানকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে ২৮মার্চ ইমরারান বড়াইগ্রামের বনপাড়ায় তার খালার বাড়িতে নিয়ে যান। ১ এপ্রিল ইমরানের পিতা মোরাশফসহ তার পরিবারের লোকজন উপস্থিত থেকে তাদের বিয়ে দেন। পরে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘটা করে তাকে শশুরবাড়িতে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। সর্বশেষ শুক্রবার বিকালে স্বামীর বাড়িতে গেলে তাকে শারিরিকভাবে নির্যাতন করে বের করে দেয়।
ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূর বাবা মাসুদুর রহমান এ্যাপোলো জানান,- ইমরান তার মেয়েকে ঘর ছাড়া করেছে। জাকির সোনার, ইমরানের দুলাভাই মজনুসহ নেতৃত্ব স্থানীয়রা মেয়েটির বিয়ে দিয়েছেন। এখন স্বীকৃতি দিচ্ছে না। মেয়েকে স্ত্রীর মর্যাদা না দিলে মেয়ের আত্মহত্যা ছাড়া কোন পথ থাকবে না। তিনি তার মেয়ের স্বীকৃতি চান।
ওই গৃহবধূর শশুর মোশারফ হোসেন দাবি করেন,- প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠার কারনে তার ছেলে ইমরানের সাথে গত মাসে তিনি মেয়েটির বিয়ে দেন। ছেলেটি বাড়িতে না থাকায় ছেলের বউকে ঘরে তোলা হয়নি।
খোঁজনিয়ে জানাগেছে,- বাবা মোশারফ হোসেন প্রভাবশালী হওয়ায় এরআগেও অভিযুক্ত নেশাগ্রস্থ ইমরান এ ধরনের অনেক ঘটনা ঘটিয়েছেন। বিয়ের প্রলোভনে অনেক মেয়েকেই তিনি ধর্ষণ করেছেন। পরে টাকার জোড়ে এসব ঘটনা ধামাচাপা পড়েছে। অভিযুক্ত ইমরান এলাকার বাহিয়ে থাকায় তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দিলীপ কুমার দাস বলেন, মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। ছেলের বাবা মোশারফকে থানায় ডাকা হয়েছিল। তিনি তার ছেলের বিয়ের কথা স্বীকার করেছেন। ২৫ এপ্রিল তার ছেলেকে থানায় নিয়ে এসে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে বাড়ি নিয়ে যাবেন।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ