নাহিদ হোসেন, নাটোর প্রতিনিধি :
গোপালপুর ডিগ্রী কলেজ থেকে ডিগ্রী পাশ। তবুও গরুর খামারি। তবে শুধু খামারেই সীমাবদ্ধ থাকতে চান না তিনি। স্বপ্ন তার শিল্পপতির খাতায় নাম লেখানো।
বলছিলাম সবুজ(২৮) নামের এক বেকার যুবকের কথা। পুরো নাম সালাহউদ্দিন কবির সবুজ। মাটিতে বাস করলেও স্বপ্ন যার আকাশছোয়া। তিনি নাটোরের লালপুর উপজেলার কেসবপুর গ্রামের মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে। চাকরী পেতে ব্যর্থ হলেও নিরাশ হয়ে বসে থাকেনি সবুজ। স্বপ্ন দেখেন বিকল্প পদ্ধতিতে কোটিপতি হবার।
আর সে কারনেই ২০১৭ সালে নাটোর যুব উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে ৫টি গরু কিনে আড়াই লক্ষ টাকা খরচে একটি খামার তৈরি করেন। মাত্র দুই মাস পালন করেই সাড়ে তিন লক্ষ টাকায় বিক্রি করেন। এখন তার খামারে মোট ৬টি উন্নত সিন্ধী জাতের ষাড়, ২টি গাভি ও চারটি বাছুর রয়েছে। যার ক্রয় মূল্য প্রতিটি পঞ্চাশ হাজার টাকা। তিন মাসের ব্যবধানে তিনি প্রতিটি গরু দেড় লক্ষ থেকে দুই লক্ষ টাকা বিক্রয় করতে পারবেন বলে আশা করেন ।
তার এই ঈর্শনীয় সাফল্য দেখে ব্যক্তি উদ্যোগে অনেক বেকার যুবক গরু পালনে আগ্রহী হচ্ছে। ইতিমধ্যে সবুজের পরামর্শ নিয়ে ব্যক্তি উদ্যোগে খামার করার লক্ষ্যে লালপুর উপজেলার ফুলবাড়িয়া গ্রামের আক্কাস আলীর ছেলে বাবলু(২৫), গুরুদাসপুরের কুদ্দুস মোল্লার ছেলে মোবারক হোসেন, নাটোরের আব্দুল কাদেরের ছেলে নাহিদ হোসেন যুব উন্নয়ন থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
খামার ব্যবসায়ী স্বাবলম্বী যুবক সবুজ বলেন, পড়াশোনা শেষ করে খুবই হতাশাগ্রস্থ হয়েছিলাম। কারণ চাকরী পাওয়াটা আমার জন্য খুবই দুরূহ ব্যপার হয়ে দাড়ায়। সমাজে কিভাবে মাথা তুলে দাড়াবো সে কথা ভেবে আমার রাতের ঘুম হারাম হয়ে যায়। পরে ভাবলাম চাকরী নয়। অন্য উপায় অবলম্বন করে আমাকে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। আমি টেলিভিশনে শাইখ সিরাজের কৃষি বিষয়ক একটি প্রোগ্রাম দেখে গরুর খামার করতে উদ্বুদ্ধ হই। সে কারনেই নাটোর যুব উন্নয়ন অফিস থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে গরুর খামার করি। প্রথমে ৫টি গরু ক্রয় করে খামার তৈরি করি। মাত্র দুই মাস পালন করেই এক লক্ষ টাকা লাভ করি। তারপর থেকে প্রতি তিন মাস পরপর গরু বিক্রি করে আমার লাভের অংশ অনেক বেড়ে যায়। শুধু তাই নয়, গাভীর দুধ বিক্রি করে প্রতি মাসে ২১ হাজার টাকা ও গরুর গোবর থেকে প্রতি মাসে দুই হাজার টাকা আয় করি।
তিনি আরো বলেন, আমি নিজস্ব অর্থায়নে খামার করে স্বাবলম্বী হয়েছি। বর্তমানে আরো দুইজন কর্মচারী রেখেছি। তবে সরকারী সহায়তা পেলে আমার খামার আরো বৃদ্ধি করতে পারবো। এলাকার আরো বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান তৈরি করতে চাই। আমি একদিন এই এলাকায় একটি শিল্পকারখানাও তৈরি করতে চাই। সেই স্বপ্ন নিয়েই সামনের দিনগুলোতে এগুতে চাই।
দৈনিক দেশজনতা/ টি এইচ