নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীতে দুই বাসের চাপায় পড়ে হাত হারিয়ে জীবন হারানো রাজীব হোসেনের দুই ছোট ভাইয়ের শিক্ষা এবং চাকরির নিশ্চয়তা দিয়েছেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।
এরই মধ্যে দুই কিশোরকে সরকারি শিশু পরিবারে নেয়ার নির্দেশ জারি হয়েছে। মন্ত্রী জানান, রাজীবের দুই ভাই ১৪ বছর বয়সী আবদুল্লাহ হৃদয় এবং ১৫ বছর বয়সী মেহেদী হাসান বাপ্পী যত পড়াশোনা করতে চায়, তার ব্যবস্থা করবে তার মন্ত্রণালয়। পড়াশোনো শেষে তাদের চাকরির ব্যবস্থাও করা হবে।
বুধবার সচিবালয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মেনন। বলেন, ‘রাজীবের দুই ভাইকে শুধুমাত্র পড়ালেখার দায়িত্ব নয়, কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করে তাদের চাকরির ব্যবস্থাও করে দেব।’
রাজীবের ভাইদের মতো যারা অসহায় অবস্থায় আছেন, তাদের সহায়তায় সম্পদশালীদের প্রতি আহ্বানও জানান মেনন। বলেন, ‘আমরা জানি সমাজে এমন অসহায় মানুষের অভাব নেই। বিত্তবানদের আমি অনুরোধ করব তাদের পাশে দাঁড়াতে।’
গত ৩ এপ্রিল রাজধানীতে দুই বাসের পাল্লাপাল্লিতে বিআরটিসির দ্বিতল বাসের দরজার দাঁড়িয়ে থাকা রাজীবের ডান হাত চাপা পড়ে। এর সেটি ছিড়ে পড়ে যায় এবং রাজীব পড়ে গিয়ে মাথায়ও আঘাত পান।
পথচারীরা এই তরুণকে সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করান। পরে সেখান থেকে তাকে নেয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ১৭ এপ্রিল প্রথম প্রহরে লাইফ সাপোর্ট থাকা রাজীব চলে যান পৃথিবী ছেড়ে।
এই তরুণের মৃত্যুর পর তার পরিবারের করুণ কাহিনি সামনে আসে। বাবা-মা হারানো রাজীব তার ছোট দুই বাইয়ের পড়াশোনার দায়িত্ব পালন করছিলেন। তার মৃত্যুর পর দুই কিশোর ভাই কীভাবে চলবে এ নিয়ে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে।
রাজীব তাঁর মাকে হারান যখন তাঁর বয়স ছিল আট বছর এবং তাঁর ছোট ভাইয়ের বয়স ছিল ১০ মাস। এরপর থেকে বাবাই তাদের বড় করছিলেন। কিন্তু তিন ভাইকে অনাথ করে দিয়ে বাবাও মারা যান ২০০৭ সালে।
২০১২ সালে রাজীব এইচএসসি পাস করার পর তাঁর ভাইদের লেখাপড়ার খরচ জোগাড় করতে গ্রাফিক ডিজাইনিংয়ের কাজ শুরু করেন। পাশাপাশি রাজধানীর তিতুমীর কলেজে পড়ছিলেন তিনি।
এরই মধ্যে চলচ্চিত্র অভিনেতা এবং পোশাক ব্যবসায়ী অনন্ত জলিল রাজীবের দুই ভাইয়ের দায়িত্ব নেয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন।
দৈনিক দেশজনতা /এন আর