আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এটিএমে টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। যা নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। ক্ষোভে ফুঁসছে রাজধানী দিল্লি থেকে অন্ধ্রপ্রদেশ। এ পরিস্থিতিতে মুখ খুললেন বিজেপি কাণ্ডারি প্রধানমন্ত্রী মোদির ঘোর বিরোধী পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তারপর কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। দেশের মানুষের এ সমস্যা নিয়ে তারা চুপ করে বসে থাকতে পারলেন না। মমতা প্রশ্ন তুলেছেন, দেশে কী অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা চলছে?
আর রাহুল গান্ধী সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে দায়ী করে বলেছেন, মোদিজি ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। এটিএমে নোট আকালের কারণে এভাবেই ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন তারা। অরুণ জেটলি ড্যামেজ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করলেও এই আকাল নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি টুইট করে বলেন, ‘?রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন রাজ্যের এটিএম থেকে টাকা তোলা যাচ্ছে না। বড় নোট গায়েব হয়ে গিয়েছে। নোট বাতিলের দিনগুলো আবার মনে পড়ে যাচ্ছে। দেশে কী আর্থিক জরুরি অবস্থা চলছে??
কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী সাংবাদিকদের বলেন, ‘মোদিজি ব্যাংকিং ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছেন। নীরব মোদি ৩০ হাজার কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী একটি কথাও বলেননি। জোর করে লাইনে দাঁড় করিয়ে ৫০০ ও ১০০০ আমাদের পকেট থেকে ছিনিয়ে নিয়ে নীরব মোদির পকেট ভর্তি করেছেন।’?
মঙ্গলবারও ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের এটিএমে টাকা তুলতে গিয়ে হয়রানির শিকার হন সাধারণ মানুষ। টাকা তুলতে না পেরে হাহাকার পড়ে যায়। নিজের গচ্ছিত রাখা টাকা এটিএম থেকে তোলা যাচ্ছে না। এটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না গ্রাহকরা। অবস্থা বেগতিক দেখে দেশের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি টুইট করে বলেন, ‘আর্থিক এই পরিস্থিতি নজরে এসেছে। ব্যাংকের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। পর্যাপ্ত টাকা আছে দেশে। চিন্তার কোনো কারণ নেই।
তবে এটিএমগুলো থেকে হঠাৎ টাকা তোলা বেড়ে যাওয়ায় নোটের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।’ এ সংকট সাময়িক। জানিয়েদিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। কিন্তু কতদিনে এ সংকট মিটবে তা সুনিশ্চিত করে কিছু বলেননি তিনি। আসাম, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, কর্নাটক, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশের অধিকাংশ শহরেই এটিএম-এ টাকা পাওয়া যাচ্ছে না।
একাধিক এটিএম বন্ধ, যেগুলো খোলা রয়েছে সেগুলোতে টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি রাজধানী দিল্লির অনেক এটিএমে টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। যেগুলোতে টাকা মিলছে সেই এটিএমগুলোর বাইরে লম্বা লাইন। যেন নতুন করে নোট সংকট দেখা দিয়েছে দেশে। আরবিআইয়ের তরফে জানানো হয়েছে, স্বাভাবিকের থেকে বেশি পরিমাণ টাকা তোলার কারণেই এই নগদ সংকট দেখা দিয়েছে অধিকাংশ রাজ্যে। একের পর এক উৎসব গিয়েছে বিভিন্ন রাজ্যে। কোথাও বিহু, কোথাও বৈশাখী। সে কারণেই বেশি টাকা তোলা হয়েছে এটিএমগুলো থেকে।
জম্মুকাশ্মীরেও তৈরি হয়েছে একই পরিস্থিতি। টাকা না পেয়ে উত্তেজিত জনতা কুপওয়ারার একটি এটিএমে ভাংচুর চালায়। পরিস্থিতি মোকাবেলায় কেন্দ্রীয় অর্র্থ মন্ত্রণালয় রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। ব্যাংকগুলিতে অবিলম্বে এটিএমে টাকা সরবরাহের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নইলে পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠবে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি