লাইফ স্টাইল ডেস্ক:
কর্মব্যস্ত সময় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কত কাজ থাকে। এর মাঝে আলাদাভাবে প্রতিদিন বাজারে যাওয়ার সময় কারও কাছেই নেই। তাই প্রতিদিন বাজার করার ঝামেলা এড়াতেই আমরা সবজি, মাছ-মাংস কিনে ফ্রিজে সংরক্ষণ করি। ফ্রিজ ভর্তি করে দিনের পর দিন বাজারের ঝঞ্জাট এড়াতে পারি।
বিশেষ করে মাংসটা আমরা অনেক দিন ফ্রিজে রেখে দেই। কিন্তু, ফ্রিজে রাখলে কতদিন সেগুলো ভালো বা খাওয়ার উপযোগী থাকে, এ ব্যাপারে আমরা কতটুকু জানি? তাই চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক ফ্রিজে মাংস কতো দিন রেখে খাওয়া ভালো। সঠিক নিয়মে আর নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় যদি মাংস রাখা হয়, তবে সেগুলো অনেকদিন ভালো থাকবে। তাই মাংস তাজা থাকা অবস্থায়ই ফ্রিজে ঢুকিয়ে ফেলুন। কারণ, তাজা অবস্থাতেই সংরক্ষণ করা শুরু না করলে স্বাদ এবং উপযোগ দুটিরই হেরফের ঘটে।
তাজা মাংস অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল প্যাক বা প্লাস্টিক (পলিথিন) ব্যাগে ভালো করে মুড়িয়ে ফ্রিজে রাখলে সেটা অনেকদিন পর্যন্ত তাজা এবং সুস্বাদু থাকবে। মোড়ানোর পরে প্যাকের গায়ে দিন-তারিখ লিখে রাখুন। সংরক্ষিত মাংস জাতীয় খাদ্যদ্রব্য সঠিকভাবে ফ্রিজে সংরক্ষণ করার জন্য একটি নূন্যতম তাপমাত্রার দরকার। এই তাপমাত্রা হলো শূন্য (০) ডিগ্রি ফারেনহাইট। আজকাল প্রায় সব রেফ্রিজারেটরেই তাপমাত্রার একটি রেগুলেটর দেওয়া থাকে।
যদি আপনার ফ্রিজে রেগুলেটর না থাকে অথবা রেগুলেটরের কাঁটা যদি আপনার কাছে বিদঘুটে লাগে সেজন্যেও আছে এক সহজ সমাধান। আপনি ফ্রিজে আইসক্রিম বা বরফ রাখুন, সেটা যদি পাথরের মতো শক্ত থাকে তাহলে বুঝতে হবে যে আপনার রেফ্রিজারেটর শূন্য ডিগ্রি তাপমাত্রা বা তার নিচে আছে, যা মাংস সংরক্ষণের জন্য পুরোপুরি উপযুক্ত।
বলা হয়ে থাকে ‘শূন্য ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় সংরক্ষিত খাদ্যদ্রব্য অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত খাওয়ার উপযোগী থাকে।’ যদিও ‘খাওয়ার উপযোগী’ আর ‘খেতে সুস্বাদু’ ব্যাপার দুটির মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে। সাধারণত রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষিত খাদ্যদ্রব্য পঁচে না গেলেও একটা নির্দিষ্ট সময় পরে সবগুলোই স্বাদ এবং উপযোগিতা হারায়। সময়সীমাগুলো মোটামুটি এ রকম-
খাদ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, মাংস (গরু, খাসি, ভেড়া ইত্যাদি) রেফ্রিজারেটরে রাখলে কাঁচা মাংস চার মাস থেকে এক বছর, চপ- চার থেকে ছয় মাস, রোস্ট বা তেলে ভাজা মাংস– চার থেকে বার মাস এবং সসেজ এক থেকে দুই মাস পর্যন্ত ভালো থাকে।
মুরগির মাংস : মুরগির মাংস সাধারণত রেফ্রিজারেটরের মধ্যে এক বছর পর্যন্ত ভালো থাকে। তবে সংরক্ষণের নয় মাসের মধ্যে খেয়ে ফেলাই উত্তম।
মাছ : যেকোনো ধরনের মাছ রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণের ব্যাপারে প্রথমে খেয়াল করতে হবে যে মাছটা কতটা চর্বিযুক্ত। স্বাদ এবং উপযোগ বজায় রাখতে হলে কম ফ্যাটযুক্ত মাছ সাধারণত ছয় মাস পর্যন্ত এবং বেশি ফ্যাটযুক্ত মাছ দুই থেকে তিন মাস পর্যন্ত ফ্রিজে সংরক্ষণ করা যেতে পারে।
রান্না করা মাছ বা মাংস: কাঁচা মাছ-মাংসের মতো রান্না করা মাছ কিংবা মাংস খুব বেশি সময় ধরে ফ্রিজে রাখা যায় না। গরু, ছাগল কিংবা ভেড়ার রান্না করা মাংস সাধারণত দুই থেকে তিন মাস এবং রান্না করা মুরগির মাংস সর্বোচ্চ চার মাস পর্যন্ত ফ্রিজে ভালো থাকে।
কিছু টিপস:
ফ্রিজে সংরক্ষিত মাছ-মাংসের বরফ যেভাবে গলাতে প্রথমে রেফ্রিজারেটর সুইচ অফ করে নিন। ভেতরে জমা বরফ হালকা হয়ে গেলে প্যাকেট থেকে ছাড়িয়ে ঠান্ডা পানিতে ডুবিয়ে রাখুন।
বরফ গলানোর জন্য পর্যাপ্ত সময় নিন এবং প্রতি আধা ঘণ্টা পরপর পানি পরিবর্তন করুন। বাইরের দিকের বরফ গলে গেলেই খাওয়া কিংবা রান্না করা আরম্ভ করবেন না। কারণ, এতে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে। সর্বোপরি সংরক্ষিত খাবারের ঘ্রাণ যদি ঠিক মনে না হয় তবে সেটা না খাওয়াই ভালো। আর প্যাকেটের গায়ে লেখা তারিখ দেখে নিতে ভুলবেন না।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি