নিজস্ব প্রতিবেদক:
সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবি ‘যৌক্তিক’ বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান। বুধবার বেলা ১২টার দিকে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “কোটাবিরোধী’ শব্দ ব্যবহার করা যৌক্তিক নয়। তবে কোটা সংস্কারের দাবি যৌক্তিক। আমি কোটা সংস্কারের এই যৌক্তিক দাবি সমর্থন করি এবং সরকারের প্রতি বিষয়টি বিবেচনার দাবি জানাই।’
তিনি বলেন, ‘কোটা সংস্কারের আন্দোলন গণতান্ত্রিক। এই আন্দোলনের প্রতি আমি পূর্ণ সমর্থন জানাই। আমি আইজিপি’র (পুলিশের মহাপরিদর্শক) প্রতি আহ্বান জানিয়েছি, ক্যাম্পাসে যেন পুলিশ প্রবেশ না করে। তবে সবার নিরাপত্তার দাবি জানাই।’ এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিও কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। বুধবার এক বিবৃতিতে সরকারের প্রতি দ্রুত কোটা সংস্কার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের দাবিতে আজ বুধবার (১১ এপ্রিল) ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন, সড়ক অবরোধ, মিছিল ও বিক্ষোভ করছেন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়েছেন। চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রসঙ্গে শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে মেধাবীদের খুব বেশি প্রয়োজন। মেধাবীরা সামনে এগিয়ে আসলে আমাদের দেশ আরও এগিয়ে যাবে। তাই মেধার যথাযথ মূল্যায়নে কোটা সংস্কার প্রয়োজন। ’ মঙ্গলবার (১০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম গত সোমবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও চায়, কোটা সংস্কার হোক। সেই জায়গা থেকে আমরা তোমাদের আন্দোলনে সংহতি জানাই।’
প্রসঙ্গত, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা ১০ শতাংশে নামিয়ে আনাসহ পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। গত রবিবার (৮ এপ্রিল) থেকে আন্দোলন আরও বেগবান হয়েছে। এদিন শাহবাগে অবস্থানরত আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ হামলা চালালে নতুন করে সারা দেশে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কোটা সংস্কারের বিষয়টি বিবেচনার জন্য সরকার আগামী ৭ মে পর্যন্ত সময় চেয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট ঘোষণার দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন আন্দোলনকারীরা। তাদের অন্য দাবিগুলো হলো-কোটার শূন্য পদগুলোতে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ, চাকরি পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একবারের বেশি নয়, কোটায় বিশেষ নিয়োগ বন্ধ এবং চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা অভিন্ন করতে হবে।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি