নিজস্ব প্রতিবেদক:
জামালপুর ও গাজীপুরের দুটি কেন্দ্রে এইচএসসির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ের এমসিকিউ পরীক্ষা ভুল প্রশ্নে অনুষ্ঠিত হওয়ায় তুলকালাম ঘটনার অবতারণা হয়েছে। এ খবর প্রকাশ পেলে এই দুটি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীরাই বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তবে গাজীপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান, সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভের ঘটনাও ঘটেছে।
জামালপুর সংবাদদাতা সেলিম আব্বাস জানান, সোমবার এইচএসসির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ের এমসিকিউ পরীক্ষার প্রশ্নের কোড ছিল ১৮৬ ‘ওলকপি’। সকল কেন্দ্রে এই সেটের প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়া হলেও শহীদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে ২৩৭ নম্বর কোডের ‘লাউ’ সেটের প্রশ্ন দিয়ে। এ খবর প্রকাশ হলে কেন্দ্র থেকে বের হওয়ার পর পরীক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে।
কয়েকজন পরীক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে তাদের এই পরীক্ষা খারাপ হয়েছে। ভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দেওয়ায় সবার থেকে তাদের নম্বর আলাদা হবে। এতে সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে তাদের। এ বিষয়ে শহীদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম তফিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি এবং তার কলেজের কর্মকর্তারা উত্তেজিত হয়ে যান এবং জানতে চান এ খবর কে জানিয়েছে।
তিনি জানান, এ ভুলটি হঠাৎ করেই হয়েছে। তাই সমাধানের জন্য তিনি যথাযথ কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছেন এবং মোট ২৯২ জন পরীক্ষার্থীর খাতা এই প্রশ্ন দিয়েই মূল্যায়ন করা হবে। গাজীপুর জেলা শহরের কাজী আজিম উদ্দিন কলেজ কেন্দ্রে গতকাল সোমবার আইসিটির এমসিকিউর ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার প্রতিবাদে গাজীপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান, সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানায়, কাজী আজিম উদ্দীন কলেজ কেন্দ্রে গাজীপুর সরকারি মহিলা কলেজ, লিংকন কলেজ, গাজীপুর জেলা কলেজ, অক্সফোর্ট কলেজের প্রায় ১৩০০ পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেয়। সোমবার আইসিটির এমসিকিউ প্রশ্নে এক নং সেটের পরিবর্তে দুই নং সেটের প্রশ্নপত্র সরবরাহ করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। ওই সেটেই এ কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেয়। পরীক্ষা শেষে শিক্ষার্থীরা অন্য কেন্দ্রের সহপাঠী পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানাতে পারে তারা ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিয়েছে। এ ঘটনায় ওই কেন্দ্রের শিক্ষার্থীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
বিকাল পৌনে ৪টার দিকে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা একত্রিত হয়ে গাজীপুর সরকারি মহিলা কলেজের সামনে রাজবাড়ী সড়কের ত্রিমোড়ে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করতে থাকে। এ পর্যায়ে তারা বিক্ষোভ মিছিল সহকারে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এসে অবস্থান নেয়।উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের জানান, এ ব্যাপারে শিক্ষা বোর্ডের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সব শিক্ষার্থীরা যেন পূর্ণ নম্বর পায় সে ব্যাপারে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরে শিক্ষার্থীরা এলাকা ত্যাগ করে।
ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেবেকা সুলতানাকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপজেলা সমবায় অফিসারকে শোকজ ও প্রত্যাহার করা হয়েছে।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি