২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৫:০৯

রমজানে চুলের জন্য চাই বাড়তি যত্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

স্বাভাবিক সময়ের চাইতে, রোজার মাসে দীর্ঘ একটা সময় খালি পেটে থাকে। শরীরে পানির অভাব, এছাড়া গরম তো আছেই। সঠিক পুষ্টির অভাবের ফলে অনেকেরই মাথার চুলগুলো কেমন যেন নিষ্প্রাণ দেখা যায়। রোজায় ত্বক ভালো রাখার সঙ্গে সঙ্গে নজর দিতে হবে চুলের দিকেও। এছাড়া এই সময়ে রান্নাঘরের ঝামেলা একটু বেশিই থাকে। আবার সেই সঙ্গে চলে অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খাওয়া। পরিমাণমতো পানি পান করা হয় না। এসব ব্যাপার চুলের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। কম পানি পান করায় রোজায় আমাদের চুল হয়ে পড়ে রুক্ষ আর নিষ্প্রাণ। তাই এ সময় চাই বাড়তি যত্ন।

চুল ভালো রাখতে প্রথমেই নজর দিতে হবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায়। নিয়মিত চুলে শ্যাম্পু করা দরকার। যারা বাইরে রোদে পুড়ে কাজ করেন বা দিনের বেশির ভাগ সময় রান্নাঘরে থাকেন, তাদের দরকার প্রতিদিন শ্যাম্পু করা। তাতে চুলে ময়লা জমবে না। তেল চিটচিটে হবে না। ভালো থাকবে চুল। চুলে মৃদু শ্যাম্পু ব্যবহারের সঙ্গে অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে কন্ডিশনার। চুল নিষ্প্রাণ দেখাবে না।

মাথার ত্বক এবং চুলের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার সঙ্গে নজর দিতে হবে খাবারদাবারেও। ইফতার থেকে সেহেরি পর্যন্ত যে সময়টুকু, তাতে দু-তিন লিটার পানি অবশ্যই পান করতে হবে। ভাজাপোড়া যতটা সম্ভব এড়িয়ে যেতে হবে। ঘরে তৈরি ফলের রস খেতে হবে। তাহলে চুল আর্দ্রতা হারাবে না।

খাদ্যতালিকায় প্রচুর ফলমূল ও শাকসবজি রাখতে হবে। মৌসুমি ফলগুলো বেশি করে খেতে হবে। ইচ্ছে হলে সেসব ফলের শরবত করেও খেতে পারেন। এ সময় চা-কফি যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। এসব ফল আর স্বাস্থ্যকর খাবারের প্রভাবেই রোজায় চুল ভালো থাকবে।

আর বাড়ির বাইরে বের হওয়ার সময় মাথায় স্কার্ফ বা ওড়না পেঁচিয়ে নিতে পারেন। এতে বাইরের ধুলাবালি চুলে কম প্রবেশ করে। প্রয়োজনে ছাতা ব্যবহার করা যায়। রান্নাঘরে ভাজাপোড়া কিংবা অন্য যেকোনো রান্নাই হোক, তেল ছিটে চুল নষ্ট হয়ে যায়। তাই রান্নাঘরে যাওয়ার আগে মাথায় ওড়না দিয়ে চুল ঢেকে রাখতে হবে, নয়তো ক্যাপও পরে নেওয়া যায়।

রোজার মাসে চুল সুস্থ রাখার পাশাপাশি চুলকে ঝকঝকে ও উজ্জ্বল করার জন্য বেশ কয়েকটি প্যাক ব্যবহারের পরামর্শ দেন গীতি বিল্লাহ।

সপ্তাহের তিন দিন তিন টেবিল চামচ মধুর সঙ্গে পাঁচ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে মাথায় ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে চুল স্বাভাবিকভাবে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন। যাদের চুল শুষ্ক আর আর্দ্রতার অভাবে আরও শুষ্ক হয়ে পড়েছে, তাদের জন্য এই প্যাকটি বেশ উপকারী।

ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে পাঁচ থেকে ছয় টেবিল চামচ টকদই ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এবার এই প্যাকটি চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত লাগিয়ে নিন। ২০ মিনিট অপেক্ষা করে চুলের ধরন অনুযায়ী শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুল ধুয়ে নিন। এই প্যাকটি চুলের রুক্ষতা দূর করে চুলকে মসৃণ করে তুলবে। এটি ব্যবহার করবেন সপ্তাহের দুদিন।

শুষ্ক চুলের কন্ডিশনার হিসেবে কলা দারুণ কার্যকরী। তাই শুষ্ক চুলের যত্ন নিতে এক চা-চামচ মধু, আধা চা-চামচ দুধের সর ও এক চা-চামচ আমন্ড অয়েল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। এবার পুরো পেস্ট চুলের আগা পর্যন্ত লাগিয়ে নিন। এক ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে নিন। এই প্যাক ব্যবহারে চুল হবে নরম আর মসৃণ।

আগের রাতে মেথি, শিকাকাই ও আমলকীর গুঁড়া পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। ভুলে গেলে কমপক্ষে তিন ঘণ্টার জন্য ভিজিয়ে রাখুন। এবার এসব উপকরণ একসঙ্গে বেটে নিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। চুলে এক ঘণ্টা রেখে এ প্যাকটি শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। এতে চুলের রুক্ষতা দূর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনি পাবেন ঝলমলে আর সুন্দর চুল।

দৈনিক দেশজনতা/ এমএইচ

প্রকাশ :মে ৩০, ২০১৭ ১:৩৭ অপরাহ্ণ