২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ভোর ৫:১৪

বড়াইগ্রামে ভূমিদস্যু আমজাদ বাহিনীর হাতে জিম্মী হাজারো মানুষ

নাটোর প্রতিনিধি :

নাটোরের বড়াইগ্রামের ৪ নং নগর ইউনিয়নের ভূমিদশ্যু এবং ছিনতাইকারী আমজাদ বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকার সাধারন মানুষ। নগর ইউনিয়নের মেরীগাছা-দোগাছি এলাকার কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষের দিন কাটে আতঙ্কে। শুধু এলাকার সাধারণ মানুষই নয়। এই এলাকার সন্ধ্যার পর সাধারণ পথিকদের চলাফেরাও চলে আতঙ্কের মধ্য দিয়ে। আর এই আতঙ্কের একমাত্র কারণ এলাকায় ভূমিদশ্যু ও ছিনতাকারী হিসেবে পরিচিত আমজাদ ও তার বাহিনী। এই বাহিনী দিনে যেমন ভূমিদখলে ব্যস্ত তেমনি রাতের বেলায় চলে অভিনব কায়দায় রাস্তার পথিক ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নগদ অর্থ ছিনতাই করা।সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসী ও ভুক্তভূগিদের কাছে জানা যায়, আমজাদ ও তার বাহিনী জমি জবর দখল, চাঁদাবাজি, মারধর, পুকুরে মাছ লুট, ব্যবসায়ীদের পাটসহ বিভিন্ন ভূসিমাল লুটপাটের অভিযোগ আছে। এলাকার প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থেকে তারা বিভিন্ন অপকর্ম করেন বলে কেউ অভিযোগ দেওয়ারও সাহস পায়না। তারা আরো বলেন, যখন যে সরকার ক্ষমতায় আসেন আমজাদ ও তার বাহিনী সেই সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে ছত্রছায়ায় থেকে তারা বিভিন্ন অপকর্ম করেন। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে অসংখ্য অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
জমি দখল ঃ উপজেলার মশিন্দা গ্রামের মকছেদ আলী বলেন, আমার দোগাছি ও মেরীগাছা মৌজার ২ একর ৬৬ শতাংশ জমি পৈত্রিক সূত্রে দেড়শত বছর যাবৎ বংশ পরম্পরায় ভোগ দখল করে আসছিলাম। কিন্তু ০১/১২/২০১৬ ইং তারিখে আমজাদ ও তার লোকজন আমার জমিটি নিজের বলে জবর দখল করে নেয়। আমি ফেরত চাইলে তারা বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। পরে বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরে ঘুরে প্রশাসনের সহায়তায় জমিটি উদ্ধার করতে সক্ষম হই। তারা অযথায় আমাকে হয়রানি করেছে। দোগাছি গ্রামের আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমার নিজের ক্রয় করা ৪৪ শতাংশ জমি হঠাৎ করেই আমজাদ ও তার বাহিনীরা জবর-দখল করেছিলো। অথচ ক্রয় করার পর থেকে খাজনা খারিজ করে আমি ভোগ দখল করে আসছিলাম। তারা নিজের জমি বলে আমার জমি জবরদখল করার চেষ্টা করে। আমি বাধা দিতে গেলে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখায়। পরে বড়াইগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে প্রশাসন আমাদের জমি উদ্ধার করে দেয়। ভুক্তভুগি আবুল কালাম আজাদের পিতা আব্দুল হাকিম বলেন, ০৪/০৮/২০১৮ তারিখে আমার নিজস্ব জমিতে হঠাৎ করেই ঘর নির্মাণ করার জন্য ইট ফেলে। আমি বাধা দিতে গেলে তারা দেশীয় অস্ত্রসহ আমাকে তাড়া করে । আমি অবশেষে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আমার জমিটি ফেরত পাই। কিন্তু তারা বিভিন্ন সময় আমার কাছে চাঁদা দাবী করে। আমি তা দিতে অস্বীকার করলে গত ৩১ মার্চ রাত আনুমানিক সাড়ে আটটার দিকে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বাড়ি ফেরার পথে পূর্ব থেকে পরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্রসহ আমজাদ ও তার বাহিনীর(সামাদ, আলমগীর, বিশু, নাজমুলসহ) ১০ থেকে ১৫ জন সন্ত্রাসী আমাকে ঘিরে ধরে। তারা আমার কাছে থাকা ব্যবসার নগদ ২ লক্ষ টাকা নিয়ে নেয়। যার মধ্যে ১০০ টা এক হাজার টাকার নোট, পাঁচশ টাকার নোট এবং ৫০০ টা একশ টাকার নোট ছিলো। এছাড়াও পঞ্চাশ হাজার টাকার গ্রামীণ কার্ড ছিলো । আমি এ বিষয়ে বড়াইগ্রাম থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি। এ বিষয়ে অভিযুক্ত কথিত আমজাদ বাহিনীর সর্দার আমজাদ তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ উঠেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) শাহরিয়ার খান বলেন, ছিনতাইয়ের বিষয়ে আমার জানা নাই। তবে তাদের মধ্যে পূর্ব শত্রুতা রয়েছে।

দৈনিক দেশজনতা/ টি এইচ

প্রকাশ :এপ্রিল ৩, ২০১৮ ৯:১৩ অপরাহ্ণ