নিজস্ব প্রতিবেদক:
একটি জাতীয় দৈনিকে লেখা কলামে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ উঠার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পেলেন মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আখতারুজ্জামান বিষয়টি সোমবার সন্ধ্যায় নিশ্চিত করেছেন। পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় বিষয়টি চূড়ান্ত হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৬ মার্চ দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকায় প্রকাশিত ‘জ্যোতির্ময় জিয়া’ শীর্ষক প্রবন্ধে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননার অভিযোগ এবং তদপরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভুত পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক সকল কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার দফতর থেকে পাঠানো এক পত্রের মাধ্যমে জানানো হয়েছে ‘এই আদেশ তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে।
ঢাবির বিএনপিপন্থি অধ্যাপক মোরশেদ হাসান খান ‘জ্যোতির্ময় জিয়া’তে লিখেন, ‘আওয়ামী নেতাদের বেশিরভাগই তাদের পরিবার পরিজন সহ ভারতে চলে গেলেন, এ দেশবাসীকে মৃত্যু ফাঁদে ফেলে দিয়ে নেতৃত্বহীন অবস্থায়। যাকে ঘিরে এ দেশের মানুষ স্বপ্ন দেখত সেই শেখ মুজিবুর রহমানও।’ স্বাধীনতার ডাক এসেছিল শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেফতার হওয়ার পর, তার আগে নয়। আমার জানা মতে তিনি কোনো স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি।’ অথচ ২০০৯ সালের ২১ জুন হাইকোর্ট ‘ জিয়া নয়, বঙ্গবন্ধুই স্বাধীনতার ঘোষক’ বলে রায় দেয়।
এর আগেও ২০১৬ সালে ৩০ মে দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকায় ‘স্মৃতিময় জিয়া’ শিরোনামে এক লেখাতেও এই অধ্যাপক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অবমাননা করেছিলেন।
অধ্যাপক মোরশেদ হাসান খানের নিবন্ধ ‘জ্যোতির্ময় জিয়া’ প্রকাশিত হওয়ার পর চারিদিকে সমালোচনা, বিক্ষোভ শুরু হয়। ছাত্রলীগ ২৭ মার্চ ব্যবসায় অনুষদের সামনে বিক্ষোভ করে তাকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে। একইদিন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারের কাছে দাবি জানায়। অধ্যাপক মোর্শেদ খান ‘জ্যোতির্ময় জিয়া’ তে অসচেতনতাবশত কিছু লাইন লিখেছন উল্লেখ করে ২৭ মার্চ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে লেখাটির জন্য ক্ষমা চান এবং লেখা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
অধ্যাপক মোর্শেদকে অব্যাহতির তথ্যটি নিশ্চিত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান ইত্তেফাক অনলাইনকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট মিটিংয়ে তার বিষয়ে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে’
দৈনিক দেশজনতা /এন আর