নিজস্ব প্রতিবেদক:
মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় জীবনের মায়া ত্যাগ করে যুদ্ধাহত ব্যক্তিদের সেবাদানকারী যুক্তরাজ্যের লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্টের হাতে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে।
বরিশালে বসবাসরত বাংলাদেশপ্রেমী লুসি হল্টের হাতে আজ শনিবার বিকালে গণভবনে বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিকত্বের সনদটি তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় জাতির জনকের ছোট মেয়ে শেখ রেহানা এবং শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ হোসেনও উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারি সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় তাকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে তাকে বিনা ফিতে ১৫ বছরের ভিসা দেওয়া হয়। যা গত ৮ ফেব্রুয়ারি বরিশাল নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লুসির হাতে তুলে দেন।
উল্লেখ্য, ৫৭ বছর আগে অক্সফোর্ড মিশনের একজন কর্মী হিসেবে ব্রিটিশ নাগরিক লুসি বাংলাদেশে এসেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় যশোরে অবস্থানকালে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে যুদ্ধাহতদের স্বাস্থ্যসেবা দিয়েছেন তিনি। স্বাধীনতার পরও বাংলাদেশ ছেড়ে যাননি লুসি। বরং বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনে চাকরি নেন। মৃত্যুর পরও তাকে বরিশালের মাটিতে সমাধিস্থ করার ইচ্ছা পোষণ করেছেন লুসি হল্ট।
প্রতিবছর ভিসা নবায়ন ফি দিতে সমস্যা হওয়ার ফলে ফি মওকুফসহ বাংলাদেশের নাগরিকত্বের জন্য দাবি জানিয়েছিলেন তিনি। এর আগে জেলা প্রশাসন থেকে লুসির ওই আবেদন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। এটা তাদের আওতাভুক্ত না হওয়ায় কোনো ফল পাওয়া যায়নি। বর্তমান জেলা প্রশাসক আসার পরপরই নতুন করে আবেদন তৈরি করা হয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তা পাঠানো হয়। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই লুসি হল্টের ভিসা ফি মওকুফ করে ১৫ বছরের অগ্রিম ভিসা দেওয়া হয়।
১৯৩০ সালের ১৬ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের সেন্ট হ্যালেন্সে জন্মগ্রহণ করা লুসির বাবা জন হল্ট ও মা ফ্রান্সিস হল্ট। লুসি ১৯৬০ সালে প্রথম বাংলাদেশে আসেন। কর্মজীবন থেকে ২০০৪ সালে অবসরে যাওয়া লুসি এখনও দুস্থ শিশুদের মানসিক বিকাশ ও ইংরেজি শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি শিশুদের জন্য তহবিলও সংগ্রহ করছেন।
দৈনিক দেশজনতা /এন আর