নিজস্ব প্রতিবেদক :
গ্রীষ্ম শুরু না হতেই রাজধানীতে দেখা দিয়েছে পানির চরম সংকট। গত কয়েকদিন থেকেই পানি পাচ্ছেন না নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দা। এছাড়া অনিয়মিত পানি সরবরাহ ও ময়লা-দুর্গন্ধে চরম পানিকষ্টে নগরবাসী।
অভিযোগ রয়েছে, গরম আসলেই নিয়মিত পানি সরবরাহ দিতে পারে না ওয়াসা। আর ওয়াসা বলছে, পাম্পের যান্ত্রিকত্রুটির কারণে সাময়িক পানি সরবরাহ বন্ধ আছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, সংকট নিরসনে দীর্ঘ মেয়াদী সমাধান দরকার। রাজধানীর উত্তর বাড্ডার সাতারকুল রোড, একমাস ধরে পানি পাচ্ছেন না এলাকাবাসী। রীতিমতো ছোটাছুটি করে লাইনে দাঁড়িয়ে অন্যের বাড়ি থেকে পানি সংগ্রহ করতে হয় তাদের। এজন্য ক্ষোভ এলাকাবাসীর। স্থানীয় এক নারী বলেন, লাইনে অনেকদিন ধরেই পানি নাই। পানি টানতে টানতে আমরা অসুস্থ হয়ে গেছি।
পানির লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা আরেকজন বলেন, কেউ পানি দিতে চায় না। পানি দিয়ে রান্না করি, সেটাও হচ্ছে না ঠিকমতো। আরেক ভুক্তভোগী জানান, আমরা কারওয়ানবাজরের হেড অফিসে অ্যাপ্লিকেশন করেছি। উনারা জোনাল অফিস থেকে বলছেন, রাস্তার লাইন উঁচু। পাইপের লাইন উঁচু আছে।
একসপ্তাহ পানি নেই মতিঝিলের আরামবাগে। দীর্ঘদিন ধরে একদিন পর পর রাতে পানি পাচ্ছেন মনিপুরের কাঠালপাড়াবাসী। এছাড়া দুর্গন্ধ ময়লাযুক্ত পানি মগবাজার, গেন্ডারিয়া ও ধোলাইখালে। পানির কষ্ট রয়েছে মিরপুর, আগারগাঁও, খিলগাঁও, মান্ডা, পূর্ব জুরাইন ও পুরান ঢাকার নাজিরাবাজারেও। গেন্ডারিয়ার এক বাসিন্দা জানান, ‘আমাদের এই এলকার পানিতে অনেকদিন ধরেই দুর্গন্ধ। পানির রং হলুদ। আরামবাগের এক নারী জানান, ‘এক সপ্তাহ ধরে আমাদের পানি নেই। আমরা অনেক কষ্ট করছি। গোসল করতে পারি না।
এ গরমে পানির সমস্যা সমাধানে কর্তৃপক্ষ আন্তরিক না হলে চরম দুর্ভোগ নেমে আসবে রাজধানীবাসীর। তাই এখনই যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে চলমান সঙ্কটের সমাধান চাইছেন ভুক্তভোগীরা। ওয়াসার তথ্যমতে, নগরীতে পানির চাহিদা প্রতিদিন ২৩০ থেকে ২৩৫ কোটি লিটার। উৎপাদন হয় চাহিদার চেয়েও বেশি ২৪২ কোটি লিটার। কিন্তু সামান্য কিছু অবৈধ সংযোগের কারণে কিছু এলাকায় ময়লা পানি যাচ্ছে। কয়েকটিতে রয়েছে যান্ত্রিক ত্রুটি।
ঢাকা ওয়াসা ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান বলেন, ‘৭৮০টি পাম্প থেকে আমরা আন্ডারগ্রাউন্ড পানি এক্সট্র্যাক্ট করি। হরহামেশাই এই একটা দুটো পাম্প যখন খারাপ থাকে, তখন ওই এলাকায় সামান্য একটু সমস্যা হয়। আমরা এঠাকে বলছি পকেট সমস্যা। আমাদের সামগ্রিক উৎপাদন প্রতিদিনই টোটাল ডিমান্ডের চেয়ে বেশি।’ তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, জনদুর্ভোগকে প্রাধান্য দিয়ে পুরো ব্যবস্থাটাকে সাজানো দরকার।
ঢাকা ওয়াসার সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. ফিরোজ আহমেদ বলেন, ‘ব্যালেন্স নেটওয়ার্কের কথা যদি চিন্তা করি, তাহলে এখানে সিস্টেম ডিজাইনই অন্যরকম। সেটা হলো যে, একটা মাদার পাইপলাইন থাকবে। যাতে করে কোনো সমস্যা হলে সেই পাইপ থেকে পানি অন্যখানে ট্রান্সফার করা যায়।’
দৈনিকদেশজনতা/ এফ আর