২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১১:০৫

উত্তাল বঙ্গোপসাগর, আরও অগ্রসর হয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’

নিজস্ব প্রতিবেদক:

পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সোমবার বিকেল ৩টায় সর্বশেষ বিশেষ বুলেটিন-১১তে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে ও তৎসংলগ্ন এলাকা থেকে কিছুটা উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে।

এই পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

অপরদিকে মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৫ নম্বর (পুনঃ) ৫ নম্বর বিপদসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এছাড়াও উপকূলীয় বেশ কয়েকটি জেলাকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় রাখা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়টি সোমবার বিকেল ৩টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব দিকে অবস্থান করছিল।

এটি আরও ঘণীভূত ও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে মঙ্গলবার সকাল নাগাদ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

এর প্রভাবে সোমবার বিকেল থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে ।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ৬২ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৭  নম্বর (পুনঃ) ৭  নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এছাড়া উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেত (পুনঃ) ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

এদিকে উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৫ নম্বর বিপদ সংকেত (পুনঃ) ৫ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

আবহাওয়া বার্তায় বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’-এর প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

এতে আরও বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ অতিক্রমকালে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর জেলা সমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘন্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার গতিতে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার সমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

নদীবন্দর সমূহের জন্য আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবহাওয়ার বিশেষ বার্তা বলা হয় খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে পূর্ব/উত্তর-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০-৮০ কিলোমিটার গতিতে অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে ২ নম্বর (পুন:) ২ নম্বর নৌ-হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এছাড়া দেশের অন্য একই দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার গতিতে অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে ১ নম্বর (পুন:) ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

প্রতি ৩ ঘণ্টা পর পর আবহাওয়া অধিদপ্তর এই বিশেষ বুলেটিন প্রকাশ করে যাচ্ছে।

দৈনিক দেশজনতা /এমএম

 

প্রকাশ :মে ২৯, ২০১৭ ৫:৩২ অপরাহ্ণ