মৌলভীবাজার প্রতিবেদক:
মৌলভীবাজারের রাজানগর উপজেলার সাবেক মাদ্রাসা শিক্ষক আকমল আলী তালুকদারসহ চার রাজাকারের বিরুদ্ধে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধ মামলার রায় যে কোনো দিন দেওয়া হবে।
বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মঙ্গলবার প্রসিকিউশন ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখেন।
মামলায় এ চার আসামির বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, আটক, নির্যাতন, গুম, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের দু’টি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে।
আসামিদের মধ্যে আকমল আলী তালুকদার (৭৩) মঙ্গলবার আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি তিন আসামি পলাতক। তারা হলেন- মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার আব্দুন নূর তালুকদার ওরফে লাল মিয়া, আনিছ মিয়া ও আব্দুল মোছাব্বির মিয়া।
মামলায় প্রসকিউশনের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন সৈয়দ হায়দার আলী। তার সঙ্গে ছিলেন শেখ মুশফিক কবীর ও সায়েদুল হক সুমন। আর আসামি আকমলের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবদুস সোবহান তরফদার। পলাতক আসামিদের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আবুল হাসান।
প্রসিকিউটর মুশফিক বলেন, মামলায় একাত্তরে ৫৯ জনকে হত্যা, ছয়জনকে ধর্ষণ, ৮১টি বাড়িতে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ রয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে। প্রসিকিউশনের ১৩ জন সাক্ষীর মধ্যে পাঁচজন একাত্তরে আসামিদের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজন ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। এছাড়া সাক্ষী বারীন্দ্র মালাকার ও সুবোধ মালাকার গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। ফলে এ মামলায় আসামিদের ছাড় পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে আমরা মনে করি। তাই প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করা হয়েছে।
২০১৫ সালের ২৬ নভেম্বর মৌলভীবাজারের এ চার আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল। ওই দিনই রাজনগরের পাঁচগাঁও গ্রাম থেকে মৌলভীবাজার টাউন সিনিয়র কামিল মাদ্রাসার অবসরপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ আকমল আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাকে ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
২০১৬ সালের ২৩ মার্চ চার আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের পর গত বছরের ৭ মে অভিযোগ গঠন হয়। সূচনা বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় ৪ জুলাই। ২০১৭ সালের ৭ মে অভিযোগ গঠনের মধ্যে দিয়ে মামলার বিচার শুরু করে ট্রাইব্যুনাল।
দৈনিক দেশজনতা /এন আর