স্বাস্থ্য ডেস্ক:
জনবল সংকটে ঝিমিয়ে পড়েছে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের কার্যক্রম। এতে চিকিত্সাসেবা নিতে এসে মারাত্মক হয়রানি ও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও দেখা পাচ্ছেন না কাঙ্ক্ষিত চিকিত্সকের। এক রোগের চিকিত্সা নিতে এসে অন্য রোগের চিকিত্সককে দেখাতে বাধ্য হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিত্সকের ২৭টি পদের মধ্যে ১৪টি পদ শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে সিনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি), সিনিয়র কনসালটেন্ট (অর্থ সার্জারি), সিনিয়র কনসালটেন্ট (চক্ষু), সিনিয়র কনসালটেন্ট (অ্যানেসথেসিয়া), জুনিয়র কনসালটেন্ট (পেডিয়েট্রিক্স), জুনিয়র কনসালটেন্ট (ইএনটি), জুনিয়র কনসালটেন্ট (প্যাথলজি), জুনিয়র কনসালটেন্ট (এ্যানেসথেসিয়া), আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার, রেডিওলজিস্ট, মেডিক্যাল অফিসারের (হোমিও/ ইউনানী/ আয়ুর্বেদী) একটি ও মেডিক্যাল অফিসারের দুইটি পদসহ ১৪টি পদ শূন্য রয়েছে।
এছাড়াও নার্সিং সুপার ভাইজার, স্টাফ নার্স, সহকারী নার্স ও স্টোর কিপারের একটি করে ও সিনিয়র স্টাফ নার্সের পাঁচটি পদ শূন্য রয়েছে।
সরজমিনে সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, রোগীদের দীর্ঘ লাইন। সেবা নিতে আসা সবার মুখেই হতাশার ছাপ। যারা ডাক্তার দেখাতে পারছেন তারাও খুশি নন। কারণ যে রোগের চিকিত্সক দেখাতে এসেছেন, সেই ডাক্তার নেই।
এমনই একজন তালা উপজেলার মীর্জাপুরের ভ্যানচালক জাহাঙ্গীর হোসেন। দীর্ঘদিন দুটি চোখ নিয়ে ভুগছেন তিনি। এসেছিলেন চোখের ডাক্তার দেখাতে। কিন্তু চোখের ডাক্তার না থাকায় সাধারণ মেডিক্যাল অফিসারকে দেখাতেই বাধ্য হলেন তিনি।
সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে নিউমোনিয়া নিয়ে ভর্তি রয়েছে শ্যামনগর উপজেলার দামদরকাঠির শাহীদ উদ্দিনের তিন মাসের ছেলে। শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে সদর হাসপাতালে এসেও চিন্তামুক্ত হতে পারেননি তিনি। কারণ সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞের পদটি শূন্য। শিশু ওয়ার্ড চালাচ্ছেন ইন্টার্ন চিকিত্সক নাজমুল হাসান ও মেডিক্যাল অ্যাসিসটেন্ট শফিউল্লাহ মুন্না।
শূন্য রয়েছে আরএমওর মতো গুরুত্বপূর্ণ পদটিও। এ পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন ডা. হাফিজউল্লাহ। জনবল সংকটে চিকিত্সা সেবা ব্যাহত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বহির্বিভাগের রোগী সামলাতেই রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। কিন্তু আমাদের তো কিছু করার নেই।
সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন তৌহিদুর রহমান জানান, সদর হাসপাতালে জনবল সংকেটর কারণে চিকিত্সা সেবা কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে কয়েকবার অবহিত করেছি। ব্যক্তিগতভাবে স্বাস্থ্য সচিবের সাথেও দেখা করেছি। তিনি দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ