২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ২:৪৬

বাংলাদেশ ‘স্বৈরতন্ত্রের তালিকায়’ দেখে আমরা লজ্জিত : মির্জা ফখরুল

মারুফ শরীফ, নিজস্ব প্রতিবেদক :

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগরি বলেন, জার্মান ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘বেরটেলসম্যান স্টিফটুং’-এর সমীক্ষা মতে বিশ্বের ৫ স্বৈরাতান্ত্রিক দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম দেখে আমরা ‘লজ্জিত’ হয়েছি। এতোটা নিম্নগমন আমরা আশা করিনি।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথসভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে দেশে গণতন্ত্রের অনুপস্থিতির কথা বলে আসছিলাম। এখানে বিরোধী মত ও পথের লোকদের কথা বলার অধিকার নেই, সভা-সমাবেশের অধিকার নেই, আইনের শাসন নেই, মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে, ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে, বিরোধী দলের নেতাকর্মী সমর্থকদের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে।

বেরটেলসম্যান স্টিফটুং-এর প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশসহ ওই পাঁচটি দেশ গণতন্ত্রের ন্যূনতম মানদন্ড পূরণ করছে না। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পর্যালোচনা চলাকালে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড, মৌলবাদীদের হামলা সংঘটিত হতে দেখা গেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, জার্মান একটি প্রতিষ্ঠানের গবেষণার ভিত্তিতে বিবিসি অনলাইন একটি নিউজ ছাপিয়েছে, যেটা আজ সব পত্রিকায় এসেছে। পৃথিবীর রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ নিম্নের দিকের পাঁচটি দেশের অন্যতম একটি। যেখানে গণতন্ত্র বিদায় নিয়েছে। এবং স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজ আমাদের সেইসব কথা সত্য হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হয়েছে বাংলাদেশে এখন স্বৈরশাসন চলছে। একটা গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশকে স্বৈরাতান্ত্রিক দেশের তালিকায় দেখে আমরা লজ্জিত।

হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টির সোহরাওয়ার্দীতে জনসভা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, আজ ২৪ শে মার্চ গণতন্ত্র হত্যা দিবস। স্বৈরাচারী হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ আজ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করছে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে। অথচ ২৪ মার্চ হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে, একজন নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে সরিয়ে দিয়ে জোর করে ক্ষমতা দখল করেছিলেন। এ জন্য আদালত তাকে সাজা দিয়েছে এবং সংবিধান লংঘন করায় দোষারোপ করেছে।

ফখরুল বলেন, আজকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করার অনুমতি দেয়া হয়েছে এরশাদকে। দুর্ভাগ্যক্রমে আমরা যারা স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোল করেছি, সংগ্রাম করেছি তাদেরকে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়া হয়নি। কয়েকবার চাওয়ার পরও অনুমতি দেয়নি। আমরা আবারও ২৯ তারিখে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েছি। অনুমতি পাওয়ার জন্য সব রকম নিয়মতান্ত্রিক পথ আমরা অবলম্বন করেছি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার জন্য একটি ডেলিগেটস টিম গঠন করা হয়েছে জানিয়ে ফখরুল বলেন, আমাদের দলের সিনিয়র নেতাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি ডেলিগেটস টিম যাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে। আমাদের সভা করার অনুমতি এবং গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো প্রয়োগ করার সুযোগ দেবে, তুলে নেবে কালাকানুনগুলো এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

তিনি বলেন, ঢাকা মহানগরে সরকারের অনুমতি ছাড়া সভা করা যাবে না। অথচ আওয়ামী লীগ প্রতি দিন সভা করছে। তারা সোহরাওয়ার্দীতে সভা করছে, মিছিল করছে। ওয়ার্কাস পার্টিও সোহরাওয়ার্দীতে সভা-সমাবেশ করছে। অথচ আমরা যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছি তারা অনুমতি পাচ্ছি না। এই বিষয়ে কথা বলার জন্য এবং সভার অনুমতি চাওয়ার জন্য নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে একটি দল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে যাবেন। আমরা আশা করব, সরকার অবশ্যই অনুমতি দেবে।
সুপ্রিমকোর্ট বার এসোসিয়েশন নির্বাচনে বিজয়ী বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেলকে অভিনন্দন জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ফখরুল বলেন, গত পরশু সুপ্রিমকোর্ট বার এসোসিয়েশনে যে নির্বাচন হয়েছে সেখানে ১৪টি পদের মধ্যে ১০টিতে নীলদল নির্বাচিত হয়েছে। এজন্য সকলকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আইনের শাসনের এই ক্রান্তিলগ্নে তাদের নির্বাচিত হয়ে আসায় আমরা মনে করি আমাদের গণতান্ত্রিক ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার আন্দোলন আরও বেগবান করবে।

দৈনিকদেশজনতা/ এফ আর

প্রকাশ :মার্চ ২৪, ২০১৮ ২:৪৩ অপরাহ্ণ