সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে ৫ বছরের শিশু ইয়ামিন মিয়ার ডান হাতের ৩ আঙ্গুল কেটে দেয়া জঘন্য যুবলীগ নেতা ও পিআইসি সভাপতি আব্দুল অদুদ এখনও গ্রেফতার হয়নি। গত রবিবার তার ছোট ভাই আলম মিয়াকে পুলিশ গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরন করলেও ৭ দিন পার হলেও তাকে গ্রেফতার করতে পারে নি। ফলে স্থানীয় এলাকাবাসীর মাঝে চাপা ক্ষোব বিরাজ করছে।
এ ঘটনায় আদুদ ও তার সহোদর আলম মিয়াকে আসামী করে গত সোমবার রাতে ১১টায় ইয়ামিন মিয়ার বাবা শাহানুর মিয়া বাদী হয়ে তাহিরপুর থানায় মামলা দায়ের করেছে। তাকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্থির দাবি জানিয়ে গত রবিবার সুনামগঞ্জ শহরে ঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধন পালন করেছে খেলা ঘর আসর সুনামগঞ্জ জেলা শাখা। শহরের আলফাত স্কায়ারে খেলা আসর সংঘটনরে জেলা শাখার সভাপতি বিজন সেন রায় সহ অনেকেই বক্তব্য রাখেন। মানববন্ধনে বক্তাগন বলেন, অদুদ মিয়া যে দলের হউক সে অপরাধী, অন্যাকারী। শুধু অন্যায়কারীই নয় জঘন্য অন্যাকারী। যে একটি ছোট শিশুকে এমন ভাবে আঘাত করতে পারে তার কঠিন শাস্থি দিয়ে সবাইকে বুজাতে হবে আইন কোন দল বুজে না। অন্যাকারী অপরাধী বুজে। অদদু মিয়াকে গ্রেফতার করে আইনের মাধ্যমে কঠিন শাস্থির দাবী জানান তারা।
তাহিরপুর উপজেলায় অনেকেই ক্ষোব প্রকাশ করে জানান, সে কি এমন ক্ষমতাশালী লোক যাকে পুলিশ এখনও ধরতে পারছে না। ৭ দিন পার হয়ে যাচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে দ্রুত গ্রেফতার করা হউক। তাকে বাঁচাতে অনেকেই গোপনে আপোষ মিমাংসা করার চেষ্টা করেছিল। কোন ভাবেই এমন জঘন্য কাজের ক্ষমা করা যায় না। তাকে কঠিন শাস্থি দিতে হবে যাতে করে এমন জঘন্য কাজ করতে একবার হলেও শাস্থির কথা চিন্তা করে যে কোন মানুষ। না হলে ভবিষত্বে আরো এমন অঘটন ঘটবে।
এদিকে, এই বর্বরচিত ন্যাক্ষার জনক ঘটনাটিকে ও যুবলীগ নেতাকে বাচাঁতে গোপনে আপোষে মিমাংষা করার চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে দক্ষিন শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যার বিশ্বজিৎ সরকারে বিরোদ্ধে। তিনি একাধিবার অদুদ সহ একাধিক ব্যাক্তির সাথে ফোনে কথা বলে ঘটনাটি গোপনে আপোষ মিমাংসা করার চেষ্টা করেন বলে জানাযায়। এ ব্যাপারে চেয়ারম্যার বিশ্বজিৎ সরকারের সাথে ফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নন্দন কান্তি ধর বলেন,‘পুলিশ এঘটনায় আব্দুল অদুদ মিয়ার ছোট ভাই আলম মিয়া (৩০) কে রবিবার রাতে আটক করে গত সোমবার দুপুরে সুনামগঞ্জ জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। ঐ পিআইসি প্রলাতক থাকায় থাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না। গ্রেফতার করার সর্বোচ্ছ চেষ্টা করছি। ইয়ামিন মিয়ার বিষয়ে খোঁজ নিয়েছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, পুলিশ প্রধান, ডিআইজি। অদুদের সাথে ফোনে কথা বলে গোপনে আপোষে মিমাংষা করার চেষ্টা করেন দক্ষিন শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যার বিশ্বজিৎ সরকার। তিনি একাধিবার গোপনে মিমাংসা করার জন্য তাকেও অনুরোধ করেন। অদুদ কে গ্রেফতার করতে আমরা পুলিশ বাহিনী রাত দিন সবোর্চ্চ চেষ্টা করছি। আমাদের দুটি টিম ও বিভিন্ন সোর্স অলরেডি মাঠে জোরালো ভাবে কাজ করছে থাকে গ্রেফতার করার জন্য। আশা করি খুব শীর্ঘই থাকে গ্রেফতার করতে পারব’।
উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় মহালিয়া হাওরের ময়না খালি বাঁধে উঠায় গত শনিবার বিকালে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় ৫ বছরের শিশু ইয়ামিন মিয়ার ডান হাতের ৩টি আঙ্গুল কেটে দেয় যুবলীগ নেতা ও মহালিয়ার হাওরের ২৮নং পিআইসির সভাপতি আদুদ। যুবলীগ নেতা আব্দুল অদুদের বর্বরতার শিকার হবার এই ঘটনার পর পর বিভিন্ন গনমাধ্যমে খবরটি জোরালো ভাবে প্রকাশের পর সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে রবিবার রাতে ছুটে যান এবং শিশুর চিকিৎসার খোজঁ খবর নেন এবং ইয়ামিন মিয়ার চিকিৎসার সকল ব্যায় ভার নিয়েছেন সুনামগঞ্জ জেলার সুযোগ পুলিশ সুপার বরকত উল্লাহ খান। এছাড়াও রবিবার রাতে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক সাবিরুল ইসলামসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাগন সহ ইয়ামিন মিয়াকে দেখতে যান। এবং তার সার্বিক বিষয়ে খোজঁ খরব নেন।
এদিকে, সুনামগঞ্জ ১ আসনের এমপি ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন শিশু ইয়ামিন মিয়ার বাড়ি সোলাইমাননপুর গিয়ে তার স্বজনদের সান্তনা দেন এবং নগত ১০হাজার টাকা হাতে তুলে দেন।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি