নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীতে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটউটের জন্য ৯১২ কোটি ৮০ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এক্সপানশন অব ন্যাশনাল ইন্সটিটউট অব নিউরো সায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটাল প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৪২০ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলানগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় এসব প্রকল্পসহ ১৬টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়।
এদিকে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের মাধ্যমে নিরাপত্তা জোরদারে সরকার পার্বত্য জেলাগুলোতে ভারত ও মিয়ানমারের সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় ৩১৭কিলোমিটার সীমান্ত সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে এক হাজার ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে একনেক। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সীমান্ত সুরক্ষা বাড়বে বলে আশা করছে সরকার।
‘সীমান্ত সড়ক (রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা) নির্মাণ (১ম পর্যায়)’ প্রকল্পসহ মোট ১৬টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ হাজার ৬৮০ কোটি ৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ব্যয় হবে ৯ হাজার ৫৯১ কোটি ৩ লাখ টাকা এবং ৮৯ কোটি ২ লাখ টাকা পাওয়া যাবে সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে।
সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রকল্প সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, পার্বত্য এলাকায় আমাদের মোট ৫৪০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে, যেখান হতে দুস্কৃতকারীরা অবাধে চোরাচালন, অবৈধ অস্ত্র ও ড্রাগসের মতো ব্যবসাসহ মানব পাচারের মতো ধ্বংসাত্মক কাজ করে যাচ্ছে। তাই সীমান্ত এলাকায় সুরক্ষা ও পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ আনার জন্য প্রয়োজন নিরবচ্ছিন্ন এবং নির্ভরযোগ্য যোগাযোগ ব্যবস্থা। এ লক্ষে সীমান্ত সড়ক নির্মাণ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে।
পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং পার্বত্য এলাকায় পর্যটন শিল্প বিকাশে সীমান্ত সড়ক বিশেষ ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, বান্দরবান জেলার নাইক্ষংছড়ি উপজেলা, রাঙ্গামাটির জুরাইছড়ি, বড়কল ও রাজস্থলি উপজেলা, কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলা এবং খাগড়াছড়ি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় ৩১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক নির্মাণ হবে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের আওতায় সড়ক ও জনপথ অধিদফতর জুলাই,২০১৭ হতে জুন,২০২১ মেয়াদকালে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
একনেকে অনুমোদন পাওয়া ১৬ প্রকল্পের মধ্যে ১২টি নতুন প্রকল্প এবং চারটি সংশোধিত প্রকল্প রয়েছে।
একনেকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্পসমূহ হচ্ছে- পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনায় প্রয়োজনীয় অবকাঠামো সুবিধাদির উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে তিন হাজার ৩৫০ কোটি ৫১ লাখ টাকা। জেলা মহসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্পের (ঢাকা জোন) খরচ ধরা হয়েছে ৫৫৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। ভবেরচর-গজারিয়া- মুন্সীগঞ্জ জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৮০ কোটি ৬ লাখ টাকা। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৪৭ কোটি ২৮ লাখ টাকা।
এছাড়া জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা কার্যালয়ের ২০ তলার ২টি বেইজমেন্টসহ ১০ তলা প্রধান কার্যালয় নির্মাণ কাজ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪৯ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। নোয়াখালী সদরের সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২১৯ কোটি ৫ লাখ টাকা। বাংলাদেশ ডাক অধিদফতরের সদর দফতর নির্মাণ প্রস্তাবিত প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৯১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলাধীন তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙ্গন হতে বকসী লঞ্চঘাট হতে বাবুরহাট লঞ্চঘাট পর্যন্ত প্রতিরক্ষা ও ড্রেজিং এবং কুকরি-মুকরি দ্বীপ বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।
মেঘনা নদীর ভাঙন হতে ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলাধীন লর্ডহার্ডিঞ্জ ও ধলিগৌরনগর বাজার রক্ষা প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৪৩২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।নোয়াখালী জেলার হাতিয়া ও সুবর্ণচর উপজেলাধীন স্বর্ণদ্বীপ মেঘনা নদীর ভাঙ্গন হতে রক্ষাকল্পে নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৮৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা।
বিএডিসির উদ্যান উন্নয়ন বিভাগের সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে উদ্যান জাতীয় ফসল সরবরাহ ও পুষ্টি নিরাপত্তা উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। বাংলাদেশ ভূমি জরিপ শিক্ষর উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২৭৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। বাংলাদেশ সরকারের জন্য নিরাপদ ই-মেইল ও ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার স্থাপন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৬ কোটি ৩১ লাখ টাকা। বাসস।
দৈনিক দেশজনতা /এন আর