লাইফ স্টাইল ডেস্ক:
দৈহিক ওজন বৃদ্ধি সমস্যা সৃষ্টি করে। তাই সময় থাকতেই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। অতিরিক্ত ওজন কমানোর সহজ উপায় হলো সঠিক ও পরিমিত খাদ্য গ্রহণ এবং প্রচুর কায়িক পরিশ্রম অথবা ব্যায়াম প্রয়োজন। নিয়মিত হাঁটা খুব ভাল ব্যায়াম। প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে হাঁটতে পারেন, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা, ত্রিকোণ আসন, উস্থান আসন প্রভৃতি ওজন কমানোর জন্য খুবই উপকারী।
• এক কাপ গরম পানিতে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে সকালে নাস্তার ত্রিশ মিনিট আগে পান করুন।
• ভাত খাওয়ার সময় প্রতিদিন দুয়েক টুকরা লেবু খান। লেবুতে আছে হজমের জন্য সঠিক এনজাইম।
• প্রতিদিন তিন বেলা খাবেন। বাদ দেবেন না। দু’খাবারের মাঝে স্ন্যাক্স খাবেন না। খেতে হলে সবজি জাতীয় স্ন্যাকস খান।
• বিকাল চারটার পর হজমক্রিয়া কমতে থাকে। কাজেই বিকালে মিষ্টি, চর্বি ও শ্বেতসার খাবার এড়িয়ে চলুন। এছাড়া সব ধরনের ডেইরি সামগ্রী যেমন দুধ, মাখন, পনির ইত্যাদি এড়িয়ে চলুন। বিকালে খিদে লাগলে শশা, গাজর, আপেল, কমলা, শুকনো মুড়ি খান। তবে দধি পনিরের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে ক্লান্তি দূর হবে। চেহারা সতেজ হবে।
• রাতে খাবারের এক ঘণ্টা পর হালকা ব্যায়াম করুন। এছাড়া প্রতিদিন ২০ মিনিট যে কোনো ব্যায়াম করা উচিত। দ্রুত হাঁটলে, জগিং, নাচ ও স্কিপিং করলে রক্ত চলাচল বাড়বে।
• এলকোহল বর্জন করে জুস জাতীয় খাবার খান।
• কোল্ড ড্রিঙ্কসে প্রচুর সোডিয়াম ও সুগার থাকে। এতে হজমক্রিয়ার ব্যাঘাত করে। ডায়েট ড্রিঙ্কস পান করা যেতে পারে, তবে অবশ্যই বিকাল চারটার আগে।
• প্রতিবেলার খাবারে প্রোটিন আইটেম রাখুন। কারণ প্রোটিন হজম হতে সময় লাগে। এতে স্ন্যাকস জাতীয় খাবারের প্রতি আকর্ষণ কমবে।
• দিনের খাবার ছোট প্লেটে খান। কম খাবেন।
• সারাদিনে প্রচুর পানি পান করুন। খাবার গ্রহণের ১৫ মিনিট আগে ও পরে পান করুন। খাবার গ্রহণকালে পানি পান করবেন না।
• কম ক্যালরিযুক্ত দুধ (স্কিমড মিল্ক) পান করুন এবং সেদ্ধ খাবার বেশি খান। ননস্টিক ফ্রাইপ্যানে ভাজার কাজটি সারুন। এতে অল্প তেলে ভাজার কাজটি সম্পন্ন হবে।
• গরুর মাংস হজম হতে ৭২ ঘণ্টা সময় লাগে। তাই সপ্তাহে একবারের বেশি খাবেন না।
• প্রতিদিন ভিটামিন জাতীয় খাবার নিন।
• আস্তে আস্তে খান। সহজে হজম হবে। বেশি খাওয়ার ঝামেলা থেকে বাঁচবেন।
• বাদাম, চানাচুর, চিপস এড়িয়ে চলুন। চিনির ব্যবহার কমিয়ে আনুন।
• টেনশন মুক্ত থাকুন। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।
• ওজন কমানোর ভাবনায় হুট করে আপনার সমগ্র জীবনধারা পাল্টে ফেলবেন না। একই সঙ্গে খাওয়া কমিয়ে, খাদ্যাভাসে পরিবর্তন এনে, নানা রকমের ব্যায়াম অভ্যাস জগিং ইত্যাদি শুরু না করে পরিবর্তনটা আনুন ধীরে-সুস্থে এবং চেষ্টা করুন তা অভ্যাসে পরিণত করতে। এতেই মিলবে ইপ্সিত সাফল্য।
• লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে সময় নিন এবং এ ধারা বজায় রাখুন।
• বেশিক্ষণ ব্যায়াম করতে মোট সময়টা সারাদিনের জন্য ভাগাভাগি করে নিন। যেমন বিভিন্ন সময়ে তা তিনবারে করুন।
• দেহভঙ্গিমার ওপরও শারীরিক সৌন্দর্য অনেকটা নির্ভরশীল। সুতরাং দেহভঙ্গিমা টানটান ও সুন্দর রাখুন।
• লিফটে না ওঠে সিঁড়ি বেয়ে ওঠানামা করুন। চট করে গাড়িতে বা রিকশায় না চড়ে হাঁটার অভ্যাস করুন।
• দিনে অন্তত ১০ মিনিট সময় ছোটখাটো ভার উত্তোলনের অভ্যাস করুন। এতে আপনার মাংসপেশি দৃঢ় থাকবে।
• পরিমাণ মতো ঘুমান, যে সময় জেগে থাকবেন চেষ্টা করবেন কর্মচঞ্চল থাকতে।
• উৎকণ্ঠা সৌন্দর্যের প্রফুল্লতাকে নষ্ট করে। তাই দৈনন্দিন জীবনে পার্থিব কোনো বিষয় নিয়ে এমন উৎকণ্ঠা করবেন না যে, তার প্রভাবে স্বাস্থ্য নষ্ট হয়। জীবনের প্রতি আশাবাদী মনোভাব রাখার চেষ্টা করুন।
• খাবার দ্বিতীয়বার গ্রহণ করার আগে চিন্তা করুন যে, ‘খাবারের মজাটুকুতো আমি পেয়ে গেছি অতএব আর নয়।’ এভাবে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ থেকে সংযত রাখুন নিজেকে।
• একটু আগে খেয়েছেন কিন্তু এখন আবার ক্ষুধা পেয়েছে মনে হলে প্রথমে এক গ্লাস পানি পান করুন-১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন, তারপরও ক্ষিধে থাকলে খান, নয়তো খাবেন না।
• ধীরে-সুস্থে যথেষ্ট সময় নিয়ে বসে খান।
• রসনা উদ্দীপক (চিপস) দামাম, চকলেট ইত্যাদি খাবারগুলো দৃষ্টিসীমা ও হাতের নাগালের বাইরে রাখুন।
• টিভি দেখতে দেখতে বা অন্য কাজের মধ্যে থেকে খাবেন না। এভাবে খেলে তৃপ্তি আসে না বা কতোটুকু খেলেন তা নিজেও বুঝতে পারবেন না। কাজেই বসে খাবারের দিকে মনোযোগী হয়ে তা উপভোগ করে খান।
• খেতে বসে কম ক্যালরিযুক্ত (যেমন সালাদ, ফল, সবজি) খাবারগুলো আগে খান যাতে বেশি ক্যালিরিযুক্ত খাবার বেশি খেতে না হয়।
• সব সময় নিজেকে দুশ্চিন্তামুক্ত রাখুন। ইতিবাচক চিন্তা করুন।
• ক্যালোরি কমাতে ডিম খান সিদ্ধ করে।
• দুধের সর তুলে দুধ খান।
• মাছ খাবেন কম তেলে রান্না করে।
• মাংসের চর্বি ফেলে দিয়ে ঝোল করে খাওয়া ভাল ভুনা করার চেয়ে।
• ঘন থকথকে ডালের চেয়ে পাতলা ডাল উত্তম।
• কড়া ভাজা খাবার পরিত্যাগ করুন।
• ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলুন।
• সাদা ভাত খান, পোলাও এড়িয়ে চলুন।
• পরাটা, লুচি না খেয়ে হাতে তৈরি আটার রুটি খান।
• বেশি করে সবজি খান।
• কোনো রকম ড্রেসিং ছাড়া সালাদ খান।
• ফল খান টাটকা, কাস্টার্ড বা জুস পানের অভ্যাস কমিয়ে আনুন।
• যতটা সম্ভব কম তেল মশলায় রান্না সারুন।
• সফট ড্রিংক ও মিষ্টি জাতীয় খাবার পরিহার করুন।
• শরীর ফিট রাখতে প্রধান খাবারের মধ্যে তেমন কিছু না খেলেই ভাল।
• ভাল করে চিবিয়ে তবেই খাবার গেলা দরকার।
• বাচ্চার দুধ খাওয়ানোর সময় নিজে খাওয়া ঠিক নয়।
• বাচ্চার না খাওয়া খাবারটুকু যতই দামি হোক নিজে খাবেন না।
• প্রধান খাবার খেতে খেতে একটু একটু করে অনেকবার পানি খাবেন।
• পারতপক্ষে কারো সাহায্য নেবেন না।
• তরকারির ঝোলেই থাকে বেশিরভাগ খাদ্যপ্রাণ তাই কম ঝোল খান, পরিবর্তে ডাল নিন।
• যতটা সম্ভব নিজের কাজ নিজেই করুন- ‘এই এক গ্লাস পানি দে বা কলমটা/বইটা দে’ এ রকম হুকুম দেওয়া কমিয়ে ফেলুন। নড়াচড়া করুন।
• সারাদিন টেবিলে বসে কাজ করছেন তাই মাথা হয়তো ঝিমঝিম করতে পারে কিন্তু আপনার শরীর তো নড়েনি। তাই গেটের কাছে গাড়ি এনে বা উঠে বরং হেঁটে যান পার্কিং স্পটে।
• বাড়ির বাইরের কোনো খাবার খেতে খুব সাবধানি হোন।
• অল্প বয়সে শিশুকে বেশি খাবার অভ্যাস করাবেন না, তাহলে এ ভুলেই তাকে প্রাপ্তবয়সে বানাবে ওবিস বা অধিক মোটা।
• ভোরের মনোরম পরিবেশ উপভোগ করুন। ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি ওঠার অভ্যাস করলে ভাল। বিছানা থেকে যদি উঠতে পারেন তো চলে যান খোলা আকাশের নিচে। হাঁটুন, শরীর থাকবে চমৎকার।
• সবুজ প্রকৃতির দিকে তাকালে চোখের জ্যোতি বাড়ে। এটা প্রাচীন যুগের কথা। তাই ফেলে দেওয়ার নয় মোটেই।
• রাগ পরিহার করে চলা ভাল। মুখ বিকৃত করে কথা বললে বয়সের ছাপ আসে তাড়াতাড়ি।
• মাঝে মাঝে একা দাঁতের মাড়ি চেপে ধরুন এবং ব্রাশ করার আগে আঙ্গুল দিয়ে মাজুন। দাঁত শক্ত গাঁথুনিতে থাকবে ঝকঝকে।
• সপ্তাহে একদিন অন্তত তিতা জাতীয় কিছু খেতে চেষ্টা করুন।
• মাসে একবার শুধু ফল বা রস রকম খাবার খেয়ে থাকলে পাকস্থলি বিশ্রাম পাবে।
• ভাতের বদলে রুটি খাবার অভ্যাস করুন।
• বেশি রাত করে ডিনার করা ঠিক নয়। এমন যদি হয়েই যায় তো দেরি করে বিছানায় যাওয়া ভাল অর্থাৎ ভরাপেটে শোবেন না।
• অতিরিক্ত ওজন কমানোর সহজ উপায় হলো সঠিক ও পরিমিত খাদ্য গ্রহণ এবং পর্যাপ্ত কায়িক পরিশ্রম করা। যারা কায়িক শ্রম বেশি করেন তাদের ব্যায়ামের প্রয়োজন নেই।
• নিয়মিত হাঁটা খুব ভাল ব্যায়াম। প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে হাঁটতে পারেন, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা, ত্রিকোণ আসন, উস্থান আসন প্রভৃতি ওজন কমানোর জন্য খুবই উপকারী।
• চর্বি জাতীয় খাবার যেমন মাখন, তেল, গরু বা খাসির মাংস খুবই কম খাবেন।
• ক্ষুধা লাগলে শশা বা ফল খেয়ে নেবেন। কারণ শশা ও টকফল ওজন কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
• আজকাল অপারেশনের সাহায্যে ভুড়ি বা মেদ কমানো হচ্ছে। লাইপোসাকশন বা অ্যাবডমিনো প্ল্যাস্টির সাহায্যে মেদ কমানো হচ্ছে। কিন্তু এটার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও অনেক।
• শর্করা ও চর্বি জাতীয় খাদ্য ক্যালরির প্রধান উৎস। অধিক চর্বিযুক্ত কম ক্যালরির খাদ্যে স্থুল ব্যক্তির ওজন খুব দ্রুত কমে।
• মধু চর্বি ক্ষয়রোধে অত্যন্ত কার্যকর উপাদান। হালকা কুসুম গরম পানির সাথে মধু মিশিয়ে সকালে খালি পেটে পান করুন, উপকার পাবেন। কাঁচা মরিচ, রসুন ও টমেটো ফ্যাট কমাতে সহায়তা করে। পাশাপাশি এলাচ আর দারুচিনিও ফ্যাট কমাতে ভূমিকা রাখে।
• অনেকে মেদ কমাতে গিয়ে খাওয়া একেবারেই কমিয়ে দেন। এতে প্রয়োজনীয় শক্তির অভাবে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই ঢালাওভাবে সব খাবার না কমিয়ে প্রথমে তেল ও চর্বিযুক্ত খাবার কমান, এরপর ধীরে ধীরে অন্যান্য খাবার কমাবেন। তবে নির্দিষ্ট মাত্রায়।