২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৪:৩৯

রোহিঙ্গা ইস্যু: জাতিসংঘের কার্যক্রম বন্ধে আইন করবে মিয়ানমার

দৈনিক দেশজনতা অনলাইন ডেস্ক: 

জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থাগুলোর (আইএনজিও) কার্যক্রম বন্ধে আইন প্রণয়ন করতে যাচ্ছে মিয়ানমার। এ আইনের মাধ্যমে মিয়ানমারে জাতিসংঘসহ অন্য আন্তর্জাতিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কার্যক্রমের ওপর কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের জাতিগত নিধনের অভিযোগ করেছে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো। সংস্থাগুলো যাতে রাখাইনে প্রবেশ করতে না পারে সে লক্ষ্যে আইন প্রণয়ন করতে চাচ্ছে দেশটির সরকার। প্রস্তাবিত আইনটির খসড়ার একটি কপি পাওয়ার দাবি করে ওয়াশিংটন পোস্ট খবরটি জানিয়েছে।

মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের ঘটনাকে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন এরই মধ্যে জাতিগত নির্মূলের পাঠ্যপুস্তকীয় দৃষ্টান্ত আখ্যা দিয়েছে। মহাসচিব প্রশ্ন তুলেছেন দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ দেশ ছাড়তে বাধ্য হলে তাকে ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ’ ছাড়া আর কী নামে ডাকা হবে। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়ন ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণকে রোহিঙ্গা তাড়ানোর অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগও এনেছে জাতিসংঘ। তবে কোনোভাবেই আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের সেখানে প্রবেশাধিকার দিচ্ছে না তারা। এ বছরের জানুয়ারিতে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর অভিযোগ করে, মিয়ানমারে এখনও ত্রাণ সংস্থা, মিডিয়া ও অন্য স্বাধীনধারার পর্যবেক্ষকদের প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ করে রাখা আছে।

এবার আইন প্রণয়ন করে আন্তর্জাতিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর কার্যক্রমের ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করতে চাচ্ছে মিয়ানমার। আইনের খসড়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের কর্মকর্তারা এসব সংস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করবে এবং কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবে। এসব উন্নয়ন সংস্থার কার্যক্রম বন্ধে সরকারের এখতিয়ার সীমিত করারও কোনো সুযোগ নেই বললেই চলে। সে কারণে কিছু কিছু বেসরকারি সংস্থা আশঙ্কা করছে, মিয়ানমারে তাদের কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করতে আইনটি ব্যবহার করা হতে পারে।

মিয়ানমারে কার্যক্রম পরিচালনারত কয়েকটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার জোট (আইএনজিও ফোরাম) থেকে ফেব্র“য়ারিতে একটি পর্যালোচনা দেয়া হয়। সেখানে বলা হয়, ‘আইনটি প্রণয়নের পেছনে যে উদ্দেশ্যের কথা বলা হয়েছে তার মধ্য দিয়ে সরকার তাদের বিরুদ্ধে যায় এমন কর্মকাণ্ডগুলো দমন করতে এবং গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের সুরক্ষার প্রচেষ্টাকে খর্ব করতে পারবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা এবং কূটনীতিকরা পার্লামেন্টারি কমিটির সদস্যদের সঙ্গে লবিং করার চেষ্টা করছে যেন তারা আইনের খসড়াটি পর্যালোচনা করে সেখানে শব্দ পরিবর্তন কিংবা প্রত্যাহার করে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, খসড়াটি কে তৈরি করেছেন কিংবা এটি প্রেসিডেন্ট অথবা রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টার নির্দেশ মোতাবেক তৈরি করা হয়েছে কিনা তা এখনও জানা যায়নি। মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জ হটে জানিয়েছেন, খসড়া আইনের ব্যাপারে ‘পরিকল্পনা ও অর্থ মন্ত্রণালয়’-এর কাছ থেকে জানা যাবে। তবে পরিকল্পনা ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক উপমন্ত্রীর কাছ থেকে এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে উত্তর পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করেছে ওয়াশিংটন পোস্ট।

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি 

প্রকাশ :মার্চ ২০, ২০১৮ ১০:২৮ পূর্বাহ্ণ