মারুফ শরীফ, নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, বিরোধী দল দমনের হাতিয়ার হিসেবে দুদককে ব্যবহার করছে সরকার। গতকাল বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে সরকার আবারও প্রমাণ করল বিরোধী দল দমনের প্রধান হাতিয়ার হিসেবে দুদককে ব্যবহার করা হচ্ছে।
রিজভী বলেছেন, অ্যাটর্নি জেনারেল রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা হয়েও তাঁর সকল শক্তি দিয়ে বিএনপিকে দমন করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করীম শাহিন, কেন্দ্রীয় নেতা আবেদ রাজা, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী জানান, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আগামী ২৪ মার্চ বরিশালে বিভাগীয় সমাবেশের তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে। নতুন করে নেয়া সিদ্ধান্ত অনুসারে বরিশালের সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৭ এপ্রিল।
তিনি বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন ঠেকাতে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করেছে দুদক। গতকাল দুদকের পক্ষ থেকে লিভ টু আপিল করা হয়েছে। এর আগে অ্যাটর্নি জেনারেলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন রোববার পর্যন্ত স্থগিত রেখেছিলেন।
এ ঘটনা নজিরবিহীন উল্লেখ করে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী বলেন, তিনি রাষ্ট্রের আইন কর্মকর্তা নন, তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইন কর্মকর্তা।
রিজভী বলেন, যাই হোক তারপরও আমরা উচ্চ আদালত থেকে প্রতিকার পেয়ে থাকি। অ্যাটর্নি জেনারেলের হাজার চেষ্টার মধ্যেও যতটুকু প্রতিকার পাওয়া যায় এবং উচ্চ আদালত যাতে নিরপেক্ষ থাকে, সেটাই জনগণের প্রত্যাশা বলে মন্তব্য করেন রিজভী।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক লুট হয়ে গেল, সরকারি ব্যাংক লুট হয়ে বাংলাদেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেল। সেসব নিয়ে দুদক টুঁ শব্দটি করছে না। অথচ নির্দোষ বেগম খালেদা জিয়ার কারাবাস দীর্ঘ করার জন্য তাদের চেষ্টার অন্ত নেই।
‘কারাগারে নয়, হাসপাতালে মারা গেছেন মিলন’ আইজিপির এমন বক্তব্যের প্রতি নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে রিজভী বলেন, পুরো জাতি জানে রিমান্ডে নির্যাতনের কারণে তরতাজা তরুণ ছাত্রনেতা জাকির হোসেন মিলনের মৃত্যু হয়েছে। তার হাত ও পায়ের ২০টি নখ তুলে ফেলা হয়েছে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় বৈদ্যুতিক শকের চিহ্ন রয়েছে। বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুও পর তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়ত্বিরত চিকিৎসক মিলনকে মৃত বলেছেন। তার পরও আইজিপি কি করে বলেন, হাসপাতালে নেয়ার পর মিলনের মৃত্যু হয়েছে, ক্ষোভ প্রকাশ করেন রিজভী।
স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবুকে পুলিশ পুনরায় রিমান্ডে নেয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, শফিউল বারী বাবুর আবার রিমান্ড মানুষের মধ্যে এক অজানা আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। রিমান্ড মানে তো মেরে ফেলা, রিমান্ড মানে তো হাত-পা ভেঙে ফেলা, রিমান্ড মানে তো আঙুলের নখ তুলে ফেলা।
তিনি বলেন, বিএনপির কোনো নেতার যখন রিমান্ড হয়, একটা শীতল শিহরণ প্রতিটি নেতাকর্মীর মধ্যে বয়ে যায়। তাদের কাছে রিমান্ড মানে হচ্ছে ক্ষত-বিক্ষত উৎপীড়নের অপর নাম।
রিজভী বলেন, আমরা বাবুকে রিমান্ডে নেয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং বাবুসহ যেসব নেতাকর্মী রিমান্ডে আছে তাদের কাল্পনিক মামলা প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।
দৈনিক দেশজনতা /এন আর