২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৯:৩২

চারদিকে আগুন, মানুষ পুড়ছে-চিৎকার করছে

দৈনিক দেশজনতা অনলাইন ডেস্ক: 

চারদিকে মানুষের চিৎকার। আগুন গ্রাস করছে সবাইকে। মানুষ পুড়ছে। চিৎকার করছে। আগুনের শিখার কাছে পরাস্ত হয়ে পড়ে যাচ্ছেন অনেকে। সে এক ভয়াবহ অবস্থা।
সোমবার নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত বিমানে থাকা বাংলাদেশী শাহরীন আহমেদ (২৯) ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এ সব কথা বলছিলেন। তিনি আগুনে পুড়ে আহত হয়েছেন। এখন চিকিৎসা নিচ্ছেন কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজ টিচিং হাসপাতালে। সেখান থেকে তিনি নেপালের পত্রিকা দ্য হিমালয়ান টাইমসকে এসব কথা বলেছেন।

ওই দুর্ঘটনা থেকে তিনি কোনোমতে জীবন বাঁচাতে পেরেছেন। ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছিলেন যখন তিনি, তখন তার চোখ থেকে অঝোরে ঝরছিল অশ্রু। তিনি বার বার কেঁপে কেঁপে উঠছিলেন। পেশায় তিনি একজন শিক্ষক। কাঠমান্ডু ও পোখরা ভ্রমণে বেরিয়েছিলেন তিনি। বলেন, বন্ধুদের সঙ্গে আমি ভ্রমণ করছিলাম। বিমানটি অবতরণের পূর্বমুহূর্তে হঠাৎ বামদিকে মোড় নেয়। এ সময় যাত্রীরা সবাই চিৎকার শুরু করেন। আমরা পিছনে তাকিয়ে দেখি বিমানে আগুন। আমার এক বন্ধু আমাকে সামনে দৌড়াতে বললো। আমরা দৌড় শুরু করতেই আমার ওই বন্ধুকে গ্রাস করলো আগুন। সে পড়ে গেল। এ সময় মানুষ পুড়ছিল। সবাই চিৎকার করছিল। আগুনের তাপে পড়ে যাচ্ছিল সবাই।

জ্বলন্ত বিমান থেকে তিনজন মানুষ লাফিয়ে বেরিয়ে গেলেন। সে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি। সৌভাগ্য যে, কেউ একজন আমাকে নিরাপদে বের করে নিলেন। বলতে বলতে আবারো কেঁদে ফেলেন শাহরীন। ডা. নাজির খান বলেছেন, তার ডান পায়ে বেশ খানিকটা অংশে ক্ষত হয়েছে। পুড়ে যাওয়া স্থানে ফোলা কমে গেলেই আমরা তার অপারেশন করবো। তার শরীরের পিছন দিকের শতকরা ১৮ ভাগ পুড়ে গেছে।

ওই বিমানটিতেই আরেকজন বাংলাদেশী মেহদি হাসান প্রথমবারের মতো বিমানে সফর করছিলেন। সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী, এক কাজিন ও ওই কাজিনের এক মেয়ে। মেহেদি হাসান বলেছেন, আমার সিটটি ছিল বিমানের পিছন দিকে। আগুন দেখেই আমি আমার পরিবারের লোকজনের অবস্থা জানার চেষ্টা করলাম। জানালা ভাঙ্গার চেষ্টা করলাম। আমরা অপেক্ষায় রইলাম যে, কেউ আমাদেরকে উদ্ধার করতে আসে কিনা। আমি ও আমার স্ত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু আমার কাজিন ও তার মেয়ে নিখোঁজভ কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজ এন্ড টিচিং হাসপাতালে জীবিত যে ১২ জনকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে তার মধ্যে অন্যতম শাহরীন ও মেহেদি হাসান। ওই হাসপাতালে নেয়া আরো চারজনকে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে গ্রান্ডে ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতাল, নিউরো হাসপাতাল ও নেপাল মিডিসিটি হাসপাতালে।

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি 

প্রকাশ :মার্চ ১৩, ২০১৮ ১:৪৩ অপরাহ্ণ