১৮ই জানুয়ারি, ২০২৫ ইং | ৪ঠা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সন্ধ্যা ৬:৩০

সরকার পতনের সময় ঘনিয়ে এসেছে : মওদুদ

মারুফ শরীফ, নিজস্ব প্রতিবেদক :

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমদ বলেন, একটি জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলের প্রধানকে সাজানো মামলায় সাজা দিয়ে জেলে রাখা, তাঁর জামিন আটকে রাখা, সভা-সমাবেশ করতে না দেয়া, রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি থেকে অস্ত্র ঠেকিয়ে নেতাকর্মীকে আটক করা কোনো গণতান্ত্রিক দেশে অকল্পনীয়। এটা কখন করে একটা সরকার? কখন দিনের আলোতে এ ধরনের বেপরোয়া হয়ে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে? পতন যখন আসন্ন তখনই সরকার এ ধরনের আচরণ করে। সুতরাং এই সরকারেরও পতন আসন্ন।

বেগম খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করবেন, আবার ক্ষমতায় আসবেন! সরকারের এই অলীক স্বপ্ন পূরণ হবে না বলেও মন্তব্য করেন প্রবীন এই আইনজীবী।
শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এ আলোচনা সভা আয়োজন করে ‘বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরাম’ নামের একটি সংগঠন।

সংগঠনের উপদেষ্টা এম এ বাশারের সভাপতিত্বে এবং এর সভাপতি সাঈদুর রহমানের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদত হোসেন সেলিম, বিএনপি নেতা খালেদা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ লেবার পার্টির মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদী প্রমুখ।

বিএনপি মাঠে নামলেই দেশের রাজনীতির চিত্র বদলে যাবে উল্লেখ করে ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমদ বলেন, স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা নির্বাচনে আসব। বিএনপি এবং গণতান্ত্রিক শক্তিসমূহ মাঠে যখন নামবে তখন রাজনীতির চিত্র বদলে যাবে। ধীরে ধীরে এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন একটা চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে এবং আগামী সপ্তায় বেগম খালেদা জিয়া জামিনে মুক্তি পাবেন বলে আমরা আশা করছি।

মওদুদ বলেন, ‘বেগম জিয়ার নেতৃত্বে সমস্ত গণতান্ত্রিক শক্তি সমূহকে ঐক্যবদ্ধ করে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা হবে এবং দেশে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি, নিরাপত্তা ফিরে আসবে। সুতরাং যারা ভাবছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করবেন, আবার ক্ষমতায় আসবেন! সরকারের এই অলীক স্বপ্ন পূরণ হবে না।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু ও ঢাকা মহানগর (উত্তর) ছাত্রদলের সভাপতি মিজানুর রহমান রাজের গ্রেফতার প্রক্রিয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মওদুদ।

তিনি বলেন, পিস্তল উঁচু করে মাথায় ঠেকিয়ে, বুকে ঠেকিয়ে, পিঠে ঠেকিয়ে যেভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে তা গোটা জাতিকে ব্যথিত করেছে, স্তম্ভিত করেছে। রাজকে গ্রেফতারের সময় যেটা ঘটল, সেটা সারা জাতিকে অশ্রুসিক্ত করেছে। এটা কোনো গণতন্ত্রিক সরকারের কাজ হতে পারে না।
মওদুদ আরও বলেন, বিএনপির আজ সাড়ে চার হাজার নেতাকে জেলে বন্দি করে রাখা হয়েছে। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। ধরে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এটা কোন গণতন্ত্র?’

প্রবীন এই রাজনীতিক বলেন, বেছে বেছে আমাদের সত্যিকারের মাঠ পর্যায়ের নেতা, মধ্যম সারির নেতা প্রত্যেককে ধরে নিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু কেন? কারণ তারা ভয় পায়। ভয় পাওয়ার কারণেই তারা এগুলো করে।

ব্যারিষ্টার মওদুদ প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পদে থেকে ভোট চাওয়া বেআইনি ও অনৈতিক। তিনি দলীয় প্রধান হিসেবে ভোট চাইতে পারেন, কিন্তু জনগণের টাকায় নয়। আইনে বলা আছে- উন্নয়নমূলক কর্মসূচি দেখিয়ে বা জনগণকে প্রলুব্ধ করে ভোট চাওয়া যাবে না। তিনি যদি নিজের খরচে ভোট চান তাতে আপত্তি নেই। তিনিতো রাষ্ট্রের টাকায় ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন।

বাংলাদেশে যে গণতন্ত্র রয়েছে এ গণতন্ত্র পৃথিবীর কোথাও নেই উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আপনারা (আওয়ামী লীগ) ভোট চাইবেন, অথচ আমরা (বিএনপি) পারবো না, জেলে ঢুকিয়ে রাখবেন, এটা হতে পারে না।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার প্রতি ইঙ্গিত করে মওদুদ বলেন, তাদের এত জনপ্রিয়তা। এত বড় জনসভা, তাহলে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে সেই জনপ্রিয়তা যাচাই করুন। পারবেন না। কেন পারবেন না? আপনারা জানেন, আপনারা বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হবেন। সেই জন্যই আপনারা জনগণের সামনে যেতে ভয় পান।
ব্যারিষ্টার মওদুদ আরো বলেন, সরকার দাবি করে দেশ এখন উন্নয়নশীল। অথচ আধা ঘণ্টার বৃষ্টিতেই ঢাকা শহর পানির নিচে। নৌকা দিয়ে চলতে হয়। মশার কামড়ে ঘুমানো যায় না। রাস্তায় তীব্র যানজট। উন্নয়নশীল দেশ হতে হলে এসব থেকে মুক্তি দিতে হবে।

দৈনিকদেশজনতা/ এফ আর

প্রকাশ :মার্চ ৯, ২০১৮ ২:৩৭ অপরাহ্ণ