ভোলা প্রতিনিধি: : তেলাপিয়া মাছের চামড়া দিয়ে আগুনে পোড়ার চিকিৎসা উদ্ভাবন করেছেন ভোলার ক্ষুদে বিজ্ঞানী সংসদের বিজ্ঞানীরা। ভোলায় জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ এবং বিজ্ঞান মেলায় এ উদ্ভাবন তুলে ধরেন তারা। এছাড়া ফরমালিন ছাড়া ফল-মূল তাজা রাখা, পানি বিশুদ্ধ করার পদ্ধতিও উদ্ভাবন করেন তারা। শুক্রবার বিকালে জেলা প্রশাসক মোহাং সেলিম উদ্দিন বিজ্ঞান মেলা উদ্বোধন করেন।
তেলাপিয়া মাছের চামড়া দিয়ে আগুনে পোড়ার চিকিৎসা উদ্ভাবন করেন ক্ষুদে বিজ্ঞানী সংসদের সৌরভ গাঙ্গুলী ও স্বপ্ন দে। তাদের এ পদ্ধতি মেলায় ব্যাপক সাড়া ফেলে। তারা দেখিয়েছেন, তেলাপিয়া মাছের চামড়া আগুনে পুড়ে যাওয়া ক্ষত স্থানে লাগানো যায় এবং এটি প্লাস্টিক সার্জারির মতো কাজ করে।
তাদের উদ্ভাবনের বিষয়ে ভোলা সদর হাসপাতালের ডাক্তার নিরূপম সরকার বলেন, তেলাপিয়া মাছের গুণগত বৈশিষ্ট্যের কারণে এটি করা সম্ভব। এ ব্যাপারে সরকারিভাবে উদ্যোগ নেয়া হলে এর বাস্তব ব্যবহার শুরু করা যাবে। এতে আগুনে পুড়ে যাওয়া রোগীদের অল্প সময়ে কম খরচে চিকিৎসা হবে। প্রচলিত পদ্ধতির তুলনায় ব্যয় কমবে ৭৫ ভাগ। তিনি জানান, বর্তমান চিকিৎসায় সালভা রিয়েজন আগুনে পোড়া ক্ষত স্থানে লাগানো হয়। এজন্য প্রতিদিন ড্রেসিং করতে হয়। তেঁলাপিয়া মাছের চামড়া লাগালে প্রতিদিন ড্রেসিংয়ের প্রয়োজন হবে না। এ মাছের চামড়ায় আদ্রতা রয়েছে- যা আগুনে পুড়ে যাওয়া স্থানের জন্য খুবই উপযোগী।
ক্ষুদে বিজ্ঞানী সৌরভ গাঙ্গুলী জানান, তারা গত বছর থেকে বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করেন। দেশের গ্রাম-গঞ্জ থেকে সব জায়গায়ই ব্যাপক হারে তেলাপিয়া মাছের চাষ হয়। এটি খাওয়ার ক্ষেত্রে প্রোটিন ও আমিষের চাহিদা পূরণ করে। এর পাশপাশি এটি চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহার করা সম্ভব। এর প্রাথমিক ব্যবহারে সফলতা পেয়েছেন বলেও জানান সৌরভ।
এ ছাড়া ফরমালিন ছাড়াই ফল ও সবজি দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করার উপায় আবিষ্কার করেছেন তারা। এ পদ্ধতিতে তারা ব্যবহার করেন চুন, বালি ও তুলা। একটি ৩ ফুট দীর্ঘ বাক্সে তারা ওই পদ্ধতি ব্যবহার করে ফল, সবজি ৩ থেকে ৬ মাস সংরক্ষণ করে পরীক্ষায় সফলতা পেয়েছেন। এ ছাড়া ওই সংগঠনের বিজ্ঞানীরা উদ্ভাবন করেছে কিভাবে ঘরে বসেই পানি বিশুদ্ধ করা যায়। একটি বাক্সে মাত্র ৫ খণ্ড আয়না বসিয়ে স্বাভাবিক সূর্যের তাপকে ৩ গুণ বৃদ্ধি করে ওই প্রজেক্ট তৈরি করা হয়।
মেলায় বোরহানউদ্দিন, চরফ্যাশন, লালমোহন, তজুমদ্দিন ও দৌলতখান উপজেলার পাশাপাশি ভোলা সদর উপজেলার ১৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষুদে বিজ্ঞানীরা তাদের নতুন নতুন আবিষ্কার তুলে ধরেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাং সেলিম উদ্দিন, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহামুদুল হাসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সুব্রত কুমার সিকদার, সহকারী পুলিশ সুপার রিয়াজুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৃধা মুজাহিদুল ইসলাম, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামিমা আক্তার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ উদযাপন কমিটির সম্পাদক অমিতাভ অপু প্রমুখ।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি