২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৭:৫৭

দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করে বিচার হবে: মওদুদ আহমদ

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, এই সরকার তো শেষ সরকার না, তাদের একদিন বিদায় নিতে হবে। আমরা ক্ষমতায় গেলে এই সরকারের আমলে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি, শেয়ার বাজার লুট, হলমার্ক কেলেঙ্কারি ও ডেসটিনিসহ সংবাদপত্রে যেসব দুর্নীতির খবর বের হয়েছে এবং যত দুর্নীতি হয়েছে তার উপর একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হবে।
আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ২০ দলীয় জোট শরীক ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মওদুদ আহমদ এসব কথা বলেন। ২০ দলীয় জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
বর্তমান সরকার সব খাতে দুর্নীতি করছে এবং এটি মহামারী পর্যায়ে চলে গেছে দাবী করে মওদুদ আহমেদ বলেন, ‘বিশ্ব ব্যাংক যখন ঋণ দেয় তখন তারা প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় তা নিয়মিত মনিটরিং করে। বর্তমান সরকার জনগণের টাকায় বড়বড় প্রকল্প করছেন। কিন্তু সেখানে কোনো জবাবদিহিতা নেই, কোনো রকমের কোনো মনিটরিং নেই। কারণ মনিটরিং না থাকলে যত বড়বড় প্রকল্প তত বেশি দুর্নীতি করা যায়।’
খালেদা জিয়ার কারাবাস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ ছাড়া শুধু মাত্র রাজনৈতিক কারণে খালেদা জিয়াকে শাস্তি দেয়া হয়েছে। দুর্নীতির জন্য তাকে শাস্তি দেয়া হয়নি। পাঁচ বছর সাজা হলে এমনিতেই জামিন হয়ে যায়, এ ব্যাপারে আমাদের সুপ্রিম কোর্টের অনেক সিদ্ধান্ত আছে। আমরা আশা করেছিলাম, সেদিনই (২৫ ফেব্রুয়ারি) তার জামিন হয়ে যাবে। যত কৌশল, যত ষড়যন্ত্রই করেন না কেন বেগম খালেদা জিয়া জামিন পেয়ে মুক্ত হয়ে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে আসবেন এবং মুক্ত হয়ে তার জনপ্রিয়তা জেলে যাওয়ার আগে যা ছিল তার চেয়ে দ্বিগুণ হবে বলে আমি মনে করি।’
নির্বাচন কমিশনের কঠোর সমালোচনা করে মওদুদ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনকে আমরা একটি চিঠি দিয়েছিলাম। আজকে খবরের কাগজে দেখলাম তারা বলেছেন, তফসিল ঘোষণার পর থেকে কর্তৃত্ব গ্রহণ করবেন। আমাদের দেশে তফসিল ঘোষণা করা হয় নির্বাচনের দিনের ৪২ থেকে ৪৫ দিন আগে। ওই দেড় মাসে যে কোনো ধরণের নির্বাচন কমিশনের পক্ষে কি প্রশাসন ঢেলে সাজানো সম্ভব? এই বক্তব্যের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিয়েছেন তারা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে অক্ষম; যা কমিশন পরোক্ষভাবে দেশের মানুষকে জানিয়ে দিয়েছেন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি খরচে সারা দেশে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন অভিযোগ করে মওদুদ আহমেদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সরকারি খরচে সারাদেশে নির্বাচনী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। অথচ তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছেন না। আর যে দলের নেত্রী সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ক্ষমতাসীনদের পরাজিত করবে সেই দলের নেত্রী জেলখানায়, তার দল কোনো সভা সমাবেশ করতে পারেন না। কী চমৎকার গণতন্ত্রের দেশ! সেজন্য মানুষকে বোকা ভাবাটা ঠিক নয়। বাংলাদেশের মানুষ সব বোঝে, সব জানে। শুধু একবার যদি তারা ব্যালট বাক্সে একটি ভোট দেয়ার সুযোগ পায় আপনাদেরকে জবাব দিবে।’
ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, ‘সরকার আজ উন্নয়নের কৃতিত্ব দাবি করেন। কিন্তু দেশে যে উন্নয়ন হয়েছে তার কৃতিত্ব সরকারের নয়, দেশের মানুষের। দেশের অর্থনীতি মূলত যে তিনটি সেক্টরের উপর বেশি নির্ভর করে সেগুলো হলো কৃষি, বিদেশি রেমিট্যান্স ও পোশাক শিল্প। এ তিনটি খাত প্রতিষ্ঠা ও সম্প্রসারণ করেছে বিএনপি। এগুলোতে সরকারের কোনো অবদান নেই।’

দৈনিক দেশজনতা /এন আর

প্রকাশ :মার্চ ২, ২০১৮ ৩:৩৬ অপরাহ্ণ