নিজস্ব প্রতিবেদক:
নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালায় কিছু পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ জন্যে একটি খসড়া প্রস্তাবনা তৈরি করেছে সংস্থাটি। এতে রাজনৈতিক দল, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের কাছে মতামত জানাতে বলা হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময় শেষে ইসির নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের কেউই খসড়া নীতিমালাটির বিষয়ে কোনো মতামত দেয়নি।
যদিও নানা সময়ে বিভিন্ন নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থার বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে ছিল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি।
ইসি সূত্র জানায়, আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সংশোধিত নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালার খসড়াটি সবার মতামতের জন্য ১৭ মে ইসির ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়। মতামত দেওয়ার শেষ দিন ছিল ২৪ মে (বুধবার) পর্যন্ত। কিন্তু এতে কোনো রাজনৈতিক দল, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের কেউ কোনো মতামত দেয়নি। শুধু কয়েকটি নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা তাদের মতামত দিয়েছে। তবে এ সংখ্যাটাও খুবই নগণ্য।
সূত্র জানায়, মাত্র তিনটি নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত তাদের মতামত দিয়েছে। সংস্থা তিনটি হলো- ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ (ইডব্লিউজি), জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদ (জানিপপ) ও আইন সহায়তা কেন্দ্র (আসক)।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির জনসংযোগ পরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমকে জানান, এখনো পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালার বিষয়ে কোনো মতামত দেয়নি। তবে কয়েকটি নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা তাদের মতামত দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। আমাদেরকে যখন আলোচনার (সংলাপ) জন্যে ডাকা হবে তখন আমরা আমাদের মতামত দেব।’
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট রিয়াজুল কবীর কাওসার বলেন, ‘আগে যা ছিল এবারে খসড়াতে প্রায় একই বিষয় রয়েছে। ২০০৯ সালে ভালোভাবে রিভাইজ হয়েছিল। এখন অলমোস্ট সেমই। এ বিষয়ে আমাদের কোনো নতুন মতামত নেই।’
ইসি সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের পূর্বে আরপিও-১৯৭২ সংশোধন করে প্রথমবারের মতো নির্বাচন পর্যবেক্ষণের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। নবম সংসদ নির্বাচনের সময় প্রথমবারের মতো পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়। একইসঙ্গে পর্যবেক্ষক নীতিমালাও তৈরি করা হয়। এরপর ২০১০ সালে নীতিমালা সংশোধন করে তৎকালীন এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন পর্যবেক্ষকদের নিবন্ধনের মেয়াদ বাড়িয়ে পাঁচ বছর করে। সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নির্বাচন কমিশন ১৩৮টি নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করে। পরে বর্তমান সরকার ২০১৩ সালে নিবন্ধন নীতিমালা সংশোধন করে ১২০টি সংস্থাকে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। যাদের পাঁচ বছর মেয়াদকাল ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে শেষ হয়। পরে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন বিগত কমিশন নতুন করে নিবন্ধনের সুযোগ না দিয়ে ওই সংস্থাগুলোর নিবন্ধনের মেয়াদ এক বছর বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে সংস্থাগুলো মেয়াদকাল ২০১৭ সালে জানুয়ারিতে শেষ হয়ে যায়। কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বে কমিশনও নতুন করে নিবন্ধনের জন্য আবেদন না চেয়ে ২৮ মার্চ আরো ছয়মাস সময় বাড়ায়।
দৈনিক দেশজনতা/এমএম