নিজস্ব প্রতিবেদক:
জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) অনুবিভাগে অসন্তোষ ক্রমেই বাড়ছে। নতুন করে এই বিভাগের আরও ৪৩ কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন। এর আগে চলতি মাসের শুরুতে আরও ৩২ কর্মকর্তা পদত্যাগ করেন। টেকনিক্যাল এক্সপার্ট পদমর্যাদার এসব কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে তাদের চাকরি স্থায়ীকরণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু বারবার তাদের আশ্বস্ত করা হলেও বাস্তবায়ন না দেখে তারা পদত্যাগ করেন।
আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং অ্যাকসেস টু সার্ভিস প্রকল্পে (আইডিইএ) কর্মরত এসব কর্মকর্তা এনআইডি সংশোধন, স্মার্টকার্ডসহ জাতীয় পরিচয়পত্রের বিভিন্ন সেবা দিয়ে আসছিলেন। এভাবে গণপদত্যাগের ফলে এনআইডি সেবা বিঘ্নিত হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। পদত্যাগকারীদের মধ্যে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা বলেন, বিগত কাজী রকিব কমিশন ও বর্তমান সিইসি তাদের চাকরি স্থায়ীকরণের কথা বললেও এনআইডির কিছু পদস্থ কর্মকর্তার গড়িমসির কারণে তা থমকে আছে। বারবার আশ্বস্ত করা হলেও তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় বাধ্য হয়ে তারা পদত্যাগ করছেন। এ বিষয়ে জানতে এনআইডির মহাপরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সাইদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। ২০০৭ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন (পিইআরপি) প্রকল্পে টেকনিক্যাল ম্যানেজার, সহকারী টেকটিক্যাল ম্যানেজার ও টিম লিডার হিসেবে কাজ করে আসছেন ‘টেকনিক্যাল এক্সপার্ট’ পদমর্যাদার প্রায় একশ কর্মকর্তা। পরবর্তীতে তারা আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং অ্যাকসেস টু সার্ভিস প্রকল্পে (আইডিইএ) কাজ করছেন। প্রকল্পের মেয়াদ শেষে তাদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের আশ্বাস দেওয়া হয়। কয়েক দফা মেয়াদ বাড়ানোর পর চলতি ফেব্রুয়ারি মাসেই শেষ হচ্ছে এ প্রকল্পের মেয়াদ। সরকারি অর্থায়নে প্রকল্পের মেয়াদ ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত হচ্ছে। এই লক্ষ্যে করা আরডিপিপিতে টেকনিক্যাল এক্সপার্টদের ‘সহকারী প্রোগ্রামার’ ও টেকনিক্যাল সাপোর্টদের ‘ডেটা এন্ট্রি সুপারভাইজার’ পদমর্যাদার গ্রেড প্রদানের দাবি করেন তারা। ইসির কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রকল্পের এসব কর্মকর্তার এনআইডিতে প্রয়োজন। ভোটার তালিকা হালনাগাদ, স্মার্টকার্ড ও এনআইডি সংশাধনসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজে তাদের প্রয়োজন। তাদের মধ্যে অনেক দিন ধরেই অসন্তোষ। এ নিয়ে তারা সিইসি ও ইসি সচিবের সঙ্গে দেখা করে দাবির কথা জানিয়েছে। তখন বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছিলেন এনআইডি ডিজি। প্রকল্প মেয়াদ শেষে সুপারিশ অনুসারে পদক্ষেপ না নেওয়ায় এসব কর্মকর্তার মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এনআইডির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কর্মরত এসব কর্মকর্তা কর্মবিরতিতে গেলে ভোগান্তিতে পড়বেন সেবাগ্রহীতারা। বন্ধ হয়ে পড়বে দেশব্যাপী এনআইডি সেবা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়ার মতো ইসির পর্যাপ্ত জনবলও নেই।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ