আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বিতর্কিত কাশ্মিরে ভারতীয় ও পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মধ্যে কামানের ব্যাপক গোলাবর্ষণের মুখেসীমান্তের গ্রামগুলো থেকে শত শত ভারতীয় পালিয়ে যাচ্ছে। ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরের পুলিশ রোববার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। নতুন করে সীমান্তে গোলাগুলি শুরু হওয়ায় পারমাণবিক অস্ত্রধারী প্রতিবেশি প্রতিদ্বন্দ্বী এ দুই দেশের ১৫ বছরের যুদ্ধবিরতি চুক্তিও হুমকির মুখে পড়েছে।
মুসলিম অধ্যুষিত হিমালয়ের এ অঞ্চলকে বিভক্তকারী তথাকথিত লাইন অব কন্ট্রোলের উড়ি সেক্টরে শনিবার শুরু হওয়া গোলাবর্ষণের কারণ এখন পরিষ্কার নয়। তবে চলতি মাসের শুরুর দিকে ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরে দেশটির সেনাবাহিনীর ঘাঁটিতে হামলার পর উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। ওই হামলায় ভারতীয় ছয় সেনাসদস্য নিহত হয়েছে।
ওই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করছে ভারত। নয়াদিল্লি বলছে, ‘এই বিপজ্জনক কাজের জন্য তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশটিকে মাশুল দিতে হবে।’ ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরের পুলিশ সুপার ইমতিয়াজ হুসাইন বলেছেন, ‘পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ছোড়া কামানের গোলা উড়িতে পড়ছে। শত শত গ্রামবাসী তাদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়েছেন।’
ভারতীয় সেনাবাহিনীও কামানের গোলা নিক্ষেপ করছে বলে দেশটির সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। ২০০৩ সালে প্রতিবেশি এ দুই দেশের যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকরের পর এই প্রথম বিতর্কিত সীমান্ত রেখার আশ-পাশে ভারী অস্ত্র ব্যবহার করছে ভারত। গত কয়েক বছরে দেশ দুটির সম্পর্কের অবনতি হওয়ায় উভয় দেশের সেনাবাহিনীর সদস্যরা বিরতিহীনভাবে ক্ষুদে অস্ত্র ব্যবহার ও মর্টার শেল নিক্ষেপ করছে। তবে সর্বশেষ এই গোলাবর্ষণের ব্যাপারে পাকিস্তানের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
হুসাইন বলেছেন, ‘পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে পাক নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির সীমান্তের গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দিচ্ছে।’ তিনি বলেন, এ ঘটনার পর অন্তত ৭০০ মানুষ উড়ির স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন।
১৯৪৭ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর কাশ্মিরকে কেন্দ্র করে দুবার যুদ্ধে জড়িয়েছে ভারত এবং পাকিস্তান। প্রতিবেশি দুই দেশই পুরো কাশ্মিরের মালিকানা দাবি করলেও তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে আংশিক। ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিদ্রোহে পাকিস্তান উসকানি দিচ্ছে বলে অভিযোগ নয়াদিল্লির।
পাকিস্তানের মুসলমানরা কাশ্মির ইস্যুতে দেশটির সেনাবাহিনীকে কোনো ধরনের সহায়তা করতে অস্বীকার জানিয়েছে। তারা উভয় দেশের আলোচনার মাধ্যমে সংকটের অবসানের আহ্বান জানিয়ে আসছে। সূত্র : রয়টার্স।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ