নিজস্ব প্রতিবেদক:
পাবনায় বউভাতের দিন শ্বশুরবাড়ির গোসলখানা থেকে সাথী খাতুন (১৮) নামে এক নববধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার ঈশ্বরদী শহরের শেরশাহ রোডের একটি বাড়ি থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বর ও তার বাবাকে আটক করেছে। নিহত সাথী খাতুন ছলিমপুর ইউনিয়নের মানিকনগর গ্রামের সিরাজুল ইসলাম প্রামাণিকের মেয়ে। বরের নাম আবু হানিফ ওরফে অন্তু (২৭)। তিনি ঈশ্বরদীর শেরশাহ রোডের আবদুল আজিজের ছেলে। ওই এলাকায় আবু হানিফের দরজির দোকান রয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, দুই পরিবারের সম্মতিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে আবু হানিফের সঙ্গে সাথী খাতুনের বিয়ে হয়। শুক্রবার ছিল বউভাতের আয়োজন। এ জন্য প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনকে দাওয়াত দেয়া হয়। তবে বউভাত অনুষ্ঠান শুরুর আগেই সাথী খাতুন আত্মহত্যা করেছেন বলে জানাজানি হয়।
বর আবু হানিফ জানান, বউভাতের অনুষ্ঠানে তার বাবা ১৮০ জনকে দাওয়াত দেন। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তিনি বউভাতের অনুষ্ঠানের জন্য কিছু জিনিস কিনতে বাজারে যান। বেলা পৌনে ১১টার দিকে মুঠোফোনে তার বাড়ি থেকে খবর আসে সাথী গোসলখানার দরজা খুলছেন না। বাড়িতে এসে তিনি নিজেও দরজা ধাক্কাধাক্কি করেন। কিন্তু কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে ভিডিও অপারেটর আকাশ ও বাড়ির লোকজন গোসলখানার দরজা ভেঙে দেখতে পান সাথীর মরদেহ ঝুলছে। গোসলখানার দেয়ালের উপরিভাগে লোহার রডের সঙ্গে গলায় কাপড় দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় ছিল সাথী। পরে পুলিশ ও সাথীর পরিবারকে খবর দেয়া হয়।
বরের মা আক্তারি বেগম দাবি করেন, সাথীর অমতে এই বিয়ে হয়েছিল বলে তারা এখন শুনতে পাচ্ছেন। সাথীর বাবা-মা মেয়েকে জোর করে তার ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছেন। আবু হানিফের বাবা আবদুল আজিজ জানান, বিয়ের পর থেকেই সাথী চুপচাপ ছিলেন। শ্বশুরবাড়ির কারও সঙ্গেই খুব একটা কথাবার্তা বলেননি। এদিকে সাথীর বাবা সিরাজুল ইসলাম প্রামাণিক অভিযোগ করেন, তার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি। ঘটনাটি রহস্যজনক। সাথীর মৃত্যুর জন্য বর ও বরের পরিবারের লোকজনদের বিরুদ্ধে তিনি মামলা করেছেন।
ঈশ্বরদী থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) রুহুল আমিন জানান, নববধূর মরদেহ উদ্ধারের সময় শরীরের কোথাও কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না। ময়নাতদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ