স্বাস্থ্য ডেস্ক:
কফ কাশির সঙ্গে আমরা সবাই অল্প বিস্তর পরিচিত। কফ কাশি কোনো নির্দিষ্ট ব্যাধি নয়। বিভিন্ন ধরণের বক্ষ ব্যাধির উপসর্গ হচ্ছে কফ-কাশি। নানা ধরণের বুকের অসুখ-বিসুখের কারণে রোগীর দেহে কফ-কাশির উপক্রম হয়। ফুসফুসের যক্ষ্মা মানুষের দেহের একটি জটিল ব্যাধি। কফ-কাশি হবার একটি অন্যতম ব্যক্ষব্যাধি হচ্ছে ফুসফুসের যক্ষ্মা। ফুসফুসের যক্ষ্মার একমাত্র প্রধান উপসর্গ হচ্ছে দীর্ঘকালীন কফ-কাশি। কোনো ব্যক্তির যদি তিন সপ্তাহের বেশি সময় কাশি থাকে, তবে চিকিৎসক ঐ ব্যক্তি যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে ধারণা করে থাকেন। ফুসফুসের ক্যান্সার, ফুসফুসের একটি মারাত্মক ব্যাধি। ফুসফুসের ক্যান্সারকে মরণ ঘাতকও বলা হয়ে থাকে। তাই ফুসফুসের ক্যান্সারের পূর্ব লক্ষণ হচ্ছে দীর্ঘ মেয়াদী কফ-কাশি।
এক্ষেত্রে কফ-কাশির সঙ্গে বুকে ব্যথাও থাকতে পারে। এ রোগের উপসর্গ হিসেবে কখনও কখনও কাশির সঙ্গে রক্ত নির্গত হতে পারে। বর্তমানে আমাদের দেশের অনেক লোক ব্রংক্রাইটেসিস নামক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এটি বুকের একটি রোগ। এই রোগটি সাধারণত মধ্য বয়সের পরে মানুষের দেহে প্রকাশ পায়। ব্রংক্রাইটেসিস হলে প্রচন্ড কাশির উপক্রম হয় এবং কাশির সঙ্গে হলুদ পাকা কফ নির্গত হতে পারে। এ সমস্ত রোগীর দীর্ঘ কালীন কাশির সঙ্গে মাঝে মাঝে রক্তপাত হয়। হাঁপানি প্রধানত একটি শ্বাস কষ্টজনিত রোগ। শ্বাসকষ্ট হাঁপানীর প্রধান লক্ষণ হলেও এর আর একটি প্রধান উপসর্গ হচ্ছে দীর্ঘস্থায়ী কফ-কাশি। ফুসফুসে কখনও কখনও ফোঁড়া দেখা দেয়।
ফুসফুসে ফোঁড়া যখন দীর্ঘস্থায়ী হয় তখন রোগীর দেহে কফ-কাশির উপক্রম হয়। এ রোগে আক্রান্ত রোগীর কাশির সঙ্গে যে কফ নির্গত হয় তা সাধারণত পেকে হলুদ হয়ে যায় এবং প্রচন্ড দুর্গন্ধ হতে পারে। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে কফ কাশির লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়। এ জাতীয় রোগীদের কফের রং সাদা বা হলুদ হয়ে থাকে। নিউমোনিয়া যখন মারাত্মক আকার ধারণ করে তখন কফের রং লালচে ধরনের হয়ে থাকে।
এছাড়া ফেরেনজাইটস, পোস্ট নেজান ড্রিপ (সাইনোসাইটিস জাতীয় রোগ) ইত্যাদি রোগের লক্ষণ হিসেবেও কফ-কাশির সৃষ্টি হয়ে থাকে। কফ-কাশির আলাদা বা নির্দিষ্ট কোনো রোগ নয়। কোন কোন ব্যক্ষব্যাধির উপসর্গ হচ্ছে কফ-কাশি। তাই কফ-কাশি প্রতিকারের জন্য সর্বপ্রথম করণীয় হচ্ছে, যে সকল রোগের উপসর্গ হিসেবে কফ-কাশির প্রকাশ ঘটে সে সমস্ত রোগ প্রতিরোধ করা।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি