মাগুরা প্রতিনিধি:
মাগুরা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রেজাউল ইসলাম আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। বৃহস্পতিবার সদর উপজেলার পারনান্দুয়ালি নিজ বাসায় তিনি গলায় ফাঁস নেন। তবে পরিবারের লোকজন টের পেয়ে দ্রুত তাকে রক্ষা করেন। পরে রেজাউল ইসলামের স্ত্রী মমতাজ বেগম অভিযোগ করেন, শর্মি নামে স্থানীয় এক স্কুলশিক্ষিকা তার স্বামীর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন। এতে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকায় তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
তিনি জানান, বেশ কিছুদিন ধরে একই এলাকার স্কুলশিক্ষিকা শর্মি অর্থনৈতিক সুবিধার আশায় তার স্বামীকে ব্ল্যাকমেইল করছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২০ ফেব্রুয়ারি মাগুরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে রেজাউলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন শর্মি। তবে ওই স্কুলশিক্ষিকার দাবি, রেজাউলের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক মেলামেলাও করেছেন তারা। এক পর্যায়ে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে রেজাউলই সেটি নষ্ট করার সব ব্যবস্থা করেন।
শর্মি রেজাউলের সঙ্গে মোবাইলে ধারণকৃত তার অন্তরঙ্গ আলাপচারিতার বেশ কয়েকটি রেকর্ডেড তথ্য সাংবাদিকদের কাছে উপস্থাপন করেন, যাতে উভয়ের মধ্যকার পরকীয়া, শর্মির অন্তঃসত্ত্বা, জোরপূর্বক ভ্রুণ নষ্টসহ বিভিন্ন বিষয়ের কথোপকথন রয়েছে। ছাত্রলীগ নেতার স্ত্রী মমতাজ বেগমের বক্তব্যকে কল্পকাহিনীও বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মাস্টার্স ডিগ্রিধারী মাগুরা সদর উপজেলার শ্যাওলাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা শর্মি জানান, একটি ব্যাংকে চাকরির জন্য ২০১৫ সালের ১৮ এপ্রিল জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি শেখ রেজাউল ইসলামের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়। এরপর রেজাউল মাগুরার আলোচিত ছাত্রলীগ নেতা সেন সুমনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে নিয়ে যান। বিয়ের প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি ভয় দেখিয়েও এরপর থেকে তার সঙ্গে মেলামেলা করেন রেজাউর।
শর্মির দাবি, এক পর্যায়ে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিয়ের জন্য চাপ দেন। কিন্তু, উল্টো ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক তার ভ্রূণ নষ্ট করান রেজাউল। তিনি বলেন, বিয়ের প্রশ্নে বারবারই রেজাউল আমাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন এবং বন্ধুদের দিয়ে হত্যার হুমকি পর্যন্ত দেন। এজন্য বাধ্য হয়ে গত ২০ ফেব্রুয়ারি আদালতে মামলা করেছি। মামলার পর থেকে প্রাণনাশের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলেও জানান শর্মি।
এ বিষয়ে মাগুরা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রেজাউল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগোযোগ করেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। নিরাপত্তাহীনতার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সদর থানার ওসি ইলিয়াস হোসেন।