নিজস্ব প্রতিবেদক:
যেহেতু জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়েছে এবং সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী একজন বয়স্ক নারী, সেই বিবেচনায় তাঁকে জামিন দেওয়া যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানির সময় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
খালেদা জিয়ার আইনজীবীর জামিনের বিরোধিতা করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষ থেকে সময়ের আবেদন করা হলে আদালত বলেন, ‘সাত বছর পর্যন্ত সাজাপ্রাপ্ত যেকোনো ব্যক্তিকে এই আদালত জমিন দিতে পারেন। খালেদা জিয়া পাঁচ বছরের জন্য সাজা পেয়েছেন। তাই তাঁকে আদালত জামিন দিতে পারেন। তারপর তিনি নারী ও বয়স্ক, তিনি জামিন পেতে পারেন। আজ হাইকোর্ট বেঞ্চে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আপিলের শুনানি শুরু হয়। খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আপিল গ্রহণের জন্য আবেদন জানালে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম প্রস্তুতির জন্য দুই ঘণ্টা সময় চান। আদালত তখন দুপুর ১২টায় শুনানি শুরুর আদেশ দেন।
দুপুরে শুনানির পর আদালতে খালেদা জিয়ার প্যানেল আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী জামিনের নথি উপস্থাপন করে বক্তব্য দেন। এ সময় আদালত খালেদা জিয়ার আপিল আবেদন গ্রহণ এবং জরিমানা স্থগিতের কথা জানান। পাশাপাশি আদালত ১৫ দিনের মধ্যে বিচারিক আদালতের কাগজপত্র জমা দিতে বলেন। পরে খালেদা জিয়ার জামিনের ওপর শুনানি শুরু হয়। তখন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশিদ আলম খান মামলার নথি দেখে প্রস্তুতির জন্য আদালতে সময় চান। এই পরিপ্রেক্ষিতে আদালত আগামী রোববার দুপুর ২টা পর্যন্ত শুনানি মুলতবির আদেশ দেন। দুদকের আইনজীবী আদালতকে বলেন, ‘দুদক আজ সকাল সাড়ে ৯টায় মামলার রায়ের সত্যায়িত কপি পেয়েছে। সেই কারণে আমরা তা দেখতে পারি নাই। কাগজপত্র দেখে এ ব্যাপারে শুনানি করতে হবে। সেই কারণে সময়ের প্রয়োজন।’
এ সময়ই আদালত সাত বছরের নিচে কেউ দণ্ডপ্রাপ্ত হলে হাইকোর্ট বেঞ্চ তাঁর জামিন দিতে পারেন বলে উল্লেখ করেন। এ সময় আদালত দুদকের আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, ‘এটা কি শুনানির প্রয়োজন আছে?’ তখন খুরশিদ আলম খান বলেন, ‘কোনো মামলায় দুদককে পক্ষভুক্ত করা হলে দুদকের প্রভিশন অনুযায়ী তাকে সময় দিতে হয়। আমরা জামিনের বিরোধিতা করছি না। কিন্তু আমি শুনানির জন্য সময় চাইছি।’ এর পর আদালত বলেন, ‘আপনাদের দাবি যুক্তিযুক্ত। এ জন্য আমরা আগামী রোববার দুপুর ২টা পর্যন্ত শুনানি মুলতবি রাখছি।’
এর আগে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের বিরোধিতা করে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। পরে আদালত থেকে বেরিয়ে খুরশিদ আলম খান গণমাধ্যমের কাছে আদালতের বক্তব্য উদ্ধৃত করেন। পাশাপাশি আদালতে উপস্থিত ছিলেন খালেদা জিয়ার প্যানেল আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদিনও গণমাধ্যমকে আলাদাভাবে ব্রিফ করেন এবং আদালতের এই বক্তব্য তুলে ধরেন। আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী আবদুর রেজাক খান, খন্দকার মাহবুব হোসেন প্রমুখ।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি