রাজশাহী প্রতিবেদক:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক ছাত্রীর অসুস্থতার জন্য মাস্টার্সের চূড়ান্ত পরীক্ষা ৪৯ দিন স্থগিত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা (সংস্কৃত) বিভাগের ২০১২-১৩ সেশনের চলমান মাস্টার্স পরীক্ষায় এ ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, ওই ছাত্রীর নাম সুরাইয়া জাহান সুরভী। তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মন্নুজান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
সুরাইয়া জাহান সুরভী বলেন, ‘আমি অসুস্থ থেকেও প্রথম ২টি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলাম। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ডাক্তার আমাকে পুরোপুরি এক মাস বিশ্রাম নিতে বলেছেন। এজন্য আমার বন্ধুরা পরীক্ষা স্থগিত করার জন্য বিভাগের চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করে। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে স্যারেরা পরীক্ষা স্থগিত করেছেন। এখানে আমি কোনও দলীয় প্রভাব খাটাইনি।’
ভাষা (সংস্কৃত) বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত জানুয়ারি মাসের ২৮ তারিখে ২০১২-১৩ সেশনের মাস্টার্স চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। পরীক্ষা রুটিন অনুযায়ী সেদিন এমএ ৫০১-সংস্কৃত রুপক-১ কোর্সের পরীক্ষা ছিল। কিন্তু তা অনুষ্ঠিত হয়নি। বিভাগের মোট ৩২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৯ জন বিভাগের বাইরে অন্য একটি পরীক্ষায় অংশ নেন। তাদের চাপেই সেদিনের মাস্টার্স পরীক্ষা নিতে পারেনি বিভাগ। এরপর ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে রুটিন অনুযায়ী পরীক্ষা শুরু হয়। সেদিন এমএ৫০২- সংস্কৃত রুপক-২ কোর্সের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় এমএ৫০৩- সংস্কৃত পদ্য কাব্য কোর্সের পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেই পরের দিন ৮ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি হন সুরাইয়া জাহান সুরভী। সেখানে তিনি ৫ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। এরপর ১৩ তারিখে তিনি হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে তার বাসা নাটোরে চলে যান।
এদিকে, হাসপাতালে থাকার কারণে ১২ তারিখের এমএ৫০৪- সংস্কৃত গদ্য কাব্যের পরীক্ষায় অংশ নেয়া সম্ভব হয়নি সুরভীর। বিভাগের কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর জোরাজোরিতে সেদিনের পরীক্ষাও নিতে পারেনি বিভাগ। পরে বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী পরীক্ষা স্থগিত করার জন্য বিভাগের চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত আবেদন করেন। যার ফলে ১৫ তারিখে একাডেমিক কমিটির সভা ডাকেন বিভাগের চেয়ারম্যান। সেদিনের একাডেমিক কমিটি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মার্চের ২৮ তারিখ পর্যন্ত পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।
সুরভীর সহপাঠী ও রাবি ছাত্রলীগ সদস্য শরিফুল ইসলাম পিন্টু বলেন, ‘চিকিৎসার জন্য সুরভীকে ভারতে নিতে হবে। তার ভারতে যাওয়ার ভিসার প্রক্রিয়া চলছে। তাই আমরা শিক্ষার্থীরা চেয়ারম্যান স্যারের কাছে পরীক্ষা স্থগিত করার জন্য আবেদন করেছিলাম।’
এ বিষয়ে ভাষা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক বিপুল কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের নিয়েই তো আমাদের বিভাগ। তাদের ভালো-মন্দ, বর্তমান-ভবিষ্যৎ তো আমাদেরই দেখতে হবে। তাই শিক্ষার্থীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা পরীক্ষা স্থগিত করেছি। শুধু আমাদের বিভাগ নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগেরই এই বিষয়গুলো বিবেচনায় নেয়া উচিত।’
দৈনিক দেশজনতা /এন আর