নিজস্ব প্রতিবেদক:
সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রধান পদের মেয়াদ সর্বোচ্চ চার বছর নির্ধারণ করে সংসদে বিল পাস হয়েছে। সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সংসদ কাজে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ সংক্রান্ত ‘প্রতিরক্ষা বাহিনীসমূহের প্রধানদের (নিয়োগ, বেতন, ভাতা এবং অন্যান্য সুবিধা) বিল- ২০১৮’ সংসদে পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
এর আগে বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করা হয়। গত ৯ জানুযারি বিলটি সংসদে তোলেন আনিসুল হক। সেটি পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। এর আগে গত বছরের জুলাই মাসে বিলটি মন্ত্রিসভার অনুমোদন পায়।
সংবিধানের ৬২ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রতিরক্ষা বাহিনী প্রধানদের নিয়োগ ও বেতন-ভাতা আইন আনুযায়ী নির্ধারণ করতে বিলটি পাস করা হয়েছে। এতদিন জয়েন্ট সার্ভিসেস ইন্সট্রাকশনস (জেএসআই) নামে একটি সার্কুলার দিয়ে এ প্রক্রিয়াটি চলতো।
বর্তমান বেতন কাঠামো অনুযায়ী বাহিনী প্রধানরা মাসে ৮৬ হাজার টাকা মূল বেতনের সঙ্গে অন্যান্য ভাতা ও সুযোগ সুবিধা পাবেন। মূল বেতনের এই পরিমাণ মন্ত্রিপরিষদ সচিবের বেতনের সমান।
বাহিনী প্রধানরা বিশেষ আবাসিক সুবিধা, আবাসিক সংশ্লিষ্ট সুবিধা, সার্বক্ষণিক গাড়ি, সামরিক হাসপাতালে বিনা খরচে নিজে ও পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা, রেশন, ভবিষ্যৎ তহবিল ও সহায়ক জনবল সুবিধার পাশাপাশি এককালীন আউটফিট ভাতা (২৩ হাজার ৯৯০ টাকা), ভ্রমণ ভাতা, উৎসব ভাতা, নববর্ষ ভাতা ও শ্রান্তিবিনোদন ভাতা পান।
এছাড়া বাহিনী প্রধানরা প্রতিমাসে ডিস্টারবেন্স ভাতা (৭০৩ টাকা), কমান্ড ভাতা (৩ হাজার ২৫০ টাকা), যোগ্যতা ভাতা (৮০৩ টাকা), প্রতিরক্ষা সার্ভিস ভাতা (৬ হাজার টাকা), আপ্যায়ন ভাতা (২ হাজার টাকা), কিট ভাতা (১ হাজার ২০০ টাকা), ক্ষতিপূরণার্থ ব্যাটম্যান রশদভাতা (১ হাজার ৮৫ টাকা), ব্যাটম্যান ভাতা (৬০০ টাকা) পাবেন।
এর বাইরে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত হারে বাহিনী প্রধানরা উড্ডয়ন ভাতা, শিক্ষাসহায়ক ভাতা, পদক ভাতা এবং প্রচলিত অন্যান্য ভাতা পাবেন।
বিদ্যমান ব্যবস্থায় তিন বাহিনী প্রধানদের পদে চাকরির সময় নির্ধারণ ছিল না। বিলে বলা হয়েছে, চার বছরের জন্য বাহিনী প্রধানরা নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন। রাষ্ট্রপতি তাদের নিয়োগ দেবেন। বাহিনী প্রধানদের নিয়োগের মেয়াদ হবে, (একসঙ্গে বা বর্ধিতকরণসহ) নিয়োগ প্রদানের তারিখ থেকে অনূর্ধ্ব চার বছর। পাস হওয়া বিলে বলা হয়েছে, বাহিনী প্রধানরা পদ থেকে অবসর নেওয়ার দিন থেকেই তিনি অবসরপ্রাপ্ত বলে গণ্য হবেন। বেসামরিক কর্মকর্তাদের মতো এক বছরের অবসরোত্তর ছুটিও (পিআরএল) পাবেন।
কোনও বাহিনী প্রধান অবসর নেওয়ার পর কোনও সামরিক বা বেসামরিক পদে পুনঃনিয়োগ লাভের যোগ্য হবেন না। তবে চুক্তিভিত্তিতে কোনও বেসামরিক পদে নিয়োগ পেতে পারেন।
অবসরপ্রাপ্ত তিন বাহিনী প্রধানরা প্রজাতন্ত্রের কোনও কাজে সামরিক বা বেসামরিক নিয়োগের অযোগ্য বিবেচিত হলেও সাংবিধনিক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে বাধা থাকবে না।
এদিকে সোমবার বৈঠকে ‘ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড বিল-২০১৮’ পাসের কথা থাকলেও তা স্থগিত হয়। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রী কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি বিলটি আরও পর্যালোচনার জন্য সূচি স্থগিত করার অনুরোধ জানান। পরে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী তা স্থগিত করেন।
দৈনিক দেশজনতা /এন আর