২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৩:০০

প্রশ্নফাঁসের প্রমাণ মিলেছে: যাচাই কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

এসএসসি’র প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রমাণ পেয়েছে এ বিষয়ে গঠিত যাচাই বাছাই কমিটি। কমিটি জানিয়েছে, এ পর্যন্ত দেখা প্রশ্নপত্রের কোনোটির আংশিক আবার কোনটি হুবহু মিলে যাওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। আর একটি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হুবহু মিলে যাওয়ায় সেই পরীক্ষা বাতিলের সুপারিশও করা হবে। তবে এটি পুরোপুরি বাতিল হবে নাকি আংশিক বাতিল হবে সে সিদ্ধান্ত নেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সব পরীক্ষা শেয় হওয়ার পর আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত বৈঠক শেষে এসব সুপারিশ করবে কমিটি।

রবিবার যাচাই-বাছাই কমিটির দ্বিতীয় বৈঠকের পর কমিটির প্রধান কারিগরি ও মাদ্রসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর এ তথ্য জানান।

বৈঠকের পর তিনি বলেন,‘যেমন অঙ্ক (বিষয়)দেখলাম, ফেসবুকে তারা বলেছে চার সেটই ফাঁস করলাম। আমরা মিলিয়ে দেখলাম একটাও মেলেনি। কিন্তু আবার ইংরেজির দেখলাম,কিছু মিল পেয়েছি। এজন্য আমরা আরও দেখবো, দেখে সিদ্ধান্ত নেবো। বাকি সব পরীক্ষা দেখবো।’

এ পর্যন্ত ফাঁসের প্রমাণ পাওয়া গেছে কিনা—জানতে চাইলে মো. আলমগীর বলেন,‘পাবো না কেন? আছে তো, আংশিকতো আছেই। কিছু কিছু প্রশ্নপত্রের আংশিক আছে, কিছু কিছু পুরোপুরি আছে।’

হুবহু মিলে যাওয়া প্রশ্ন নিয়ে সচিব বলেন,‘কিছু কিছু তো সরাসরি হুবহু মিলে গেছে। সেটা কেনও আমরা সাজেশন মনে করবো?’

কোন বিষয়ের প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রের সঙ্গে হুবহু মিলে গেছে জানতে চাইলে সচিব বলেন,‘একটা পেয়েছি আমরা। এটা তো এখন বলবো না। যখন সুপারিশ করবো তখন বলবো।’

যে বিষয়ের প্রশ্নপত্র হুবহু মিলে গেছে বলছেন সেটা বাতিলের সম্ভাবনা আছে কিনা জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘হতে পারে। আমরা সুপারিশ করবো। কিন্তু বাতিল করবে কিনা, এটা তো অথরিটির বিষয়।’ তবে এমসিকিউ না গোটা পরীক্ষা- তা বলেননি সচিব।

ওই পরীক্ষা বাতিলের সুপারিশ প্রসঙ্গে আরও জানতে চাইলে সচিব বলেন,‘হ্যাঁ, যদি দেখা যায় কোনও প্রশ্ন হুবহু পুরো মিলে গেছে এবং সেটা যদি দেখা যায় যে পরীক্ষার দিন..। যেমন মনে করেন, অবজেকটিভ টাইপের প্রশ্ন যদি ফাঁস হয়ে থাকে তাহলে বাকিটা পরীক্ষা নতুন করে নেবো না। শুধু অবজেকটিভের জন্য পরীক্ষা হবে, যদি পরীক্ষা চলার এক’দুঘণ্টা আগে বা তিন ঘণ্টা আগে বা আগের দিন ফাঁস হয়ে থাকে। আর যদি দেখা যায় পরীক্ষা চলাকালীন ফাঁস হয়েছে, তাহলে তো পরীক্ষা চলাকালীন বা আধা ঘণ্টা আগে পরীক্ষার্থীরা ঢুকে গেছে। তখন হয়তো ৫০০ ছেলেমেয়ে এটার সঙ্গে জড়িত, তখন তো ২০ লাখ ছেলেমেয়ের পরীক্ষা বাতিল করা ঠিক হবে না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ২৫ ফেব্রুয়ারি বসে পরীক্ষা করবো কতজন প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত ছিল বলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা বিভিন্ন মাধ্যমে খবর এসেছে। আর কতক্ষণ আগে ফাঁস হয়েছে বা কত নম্বরের ফাঁস হয়েছে, কত নম্বরের মিলেছে। ওই দিন সেগুলো (ঠিক)করবো।’

এ বৈঠকের সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ২৬ ফেব্রুয়ারি গণমাধ্যমকে জানানো হবে বলে জানান সচিব।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে তথ্য পাওয়া গেছে উল্লেখ করে সচিব বলেন,‘ফেসবুক গ্রুপগুলো কখন প্রশ্ন বেচাকেনা করেছে, গ্রেফতারকৃতদের কাছে কী প্রশ্ন পাওয়া গেছে তারা এটা বলেছে। যেমন ফরিদপুরে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার কাছে যে প্রশ্ন তা হুবহু মিলে গেছে।’

প্রশ্নফাঁসের মূল হোতা কারা জানতে চাইলে সচিব বলেন,‘এটা তো আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিষয়। এখন তো তারা ফাঁস করবে না। বলা হলে তো কেয়ারফুল হয়ে যাবে।’

পাঁচ লাখ টাকার ঘোষণায় কেউ সাড়া দিয়েছে কিনা জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘পুলিশ বলেছে এখনও কিছু বলেনি তারা। যে ৩০০ নম্বরের বিষয়ে বলেছে সেগুলো এবং প্রতিদিন নতুন নতুন নম্বর পাচ্ছে।’

দৈনিক দেশজনতা /এন আর

প্রকাশ :ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৮ ৮:২৪ অপরাহ্ণ