২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৭:৪০

দূষিত বায়ুতে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়

দৈনিক দেশজনতা অনলাইন ডেস্ক: 

যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থা ইপিএর সর্বশেষ প্রতিবেদনে বিশ্বে সবচেয়ে দূষিত বায়ুর দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। পরিবেশদূষণ নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রগুলোর অবস্থান-বিষয়ক প্রতিবেদনটি গত ২৩ জানুয়ারি ইপিএ প্রকাশ করেছে। সংস্থাটি বিশ্বের ১৮০টি দেশ সামগ্রিকভাবে পরিবেশ সুরক্ষায় কী ধরনের ভূমিকা রাখছে, তা নিয়ে একটি সূচক তৈরি করেছে। তাতে বাংলাদেশ ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৭৯তম স্থানে নেমে এসেছে।
২০০৬ সালে সর্বপ্রথম ওই সূচকটি তৈরি করা হয়েছিল, সে বছর বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১২৫তম। অর্থাৎ গত এক যুগে দূষণ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ৫৪ ধাপ নিচে নেমেছে। বিশ্বের শীর্ষ দূষিত বায়ুর দেশ হিসেবে প্রথমে নেপাল, তারপর পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশ, ভারত, চীন, পাকিস্তান ও কঙ্গোর নাম উঠে এসেছে। আর নির্মল বায়ুর দেশ হিসেবে প্রথমে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এরপর রয়েছে বার্বাডোজ, জর্ডান, কানাডা ও ডেনমার্ক।
বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্মল বায়ু ও টেকসই পরিবেশ (কেইস) প্রকল্প থেকে দেশের আটটি শহরের বায়ুর মান প্রতিদিন পর্যবেক্ষণ করা হয়। তাতে ২ মাস ধরে ঢাকার পাশাপাশি রাজশাহী, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল ও খুলনা শহরের বায়ুর মান মারাত্মক ও খুব অস্বাস্থ্যকর হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে দূষিত বায়ুর শহর হলো রাজধানী ঢাকা। এরপর রয়েছে রাজশাহী। বরিশাল সবচেয়ে কম দূষিত শহর হলেও এর বায়ু মানমাত্রার চেয়ে খারাপ, অর্থাৎ আশঙ্কাজনক।
পরিবেশ অধিদপ্তরের দৈনিক বায়ু মানবিষয়ক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গতকাল শনিবার দেশের আটটি প্রধান জেলা শহরের মধ্যে নারায়ণগঞ্জের বায়ুর মান ছিল সবচেয়ে খারাপ।
ইপিএর প্রতিবদেনে একে মারাত্মক অস্বাস্থ্যকর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। একই দিনে ঢাকা ও সিলেটের বায়ু খুবই অস্বাস্থ্যকর। গাজীপুর ও চট্টগ্রামের বায়ু ছিল অস্বাস্থ্যকর। রাজশাহী ও বরিশালের বায়ুকে অস্বাস্থ্যকর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
গত ডিসেম্বর থেকে বায়ুর এই খারাপ অবস্থা রয়েছে। ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসজুড়ে ওই শহরগুলোর অধিকাংশের বায়ুর মান মারাত্মক অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় ছিল। পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্মল বায়ু প্রকল্পের পরিচালক মনজুরুল হান্নান খান গণমাধ্যমকে বলেন, শীতের সময় সাধারণত বাতাসে দূষণের জন্য দায়ী ক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বস্তুকণার পরিমাণ বেড়ে যায়। রাজধানীসহ দেশের প্রধান শহরগুলোর আশপাশে গড়ে ওঠা প্রায় ছয় হাজার ইটভাটা দূষণের জন্য প্রধানত দায়ী। শীতে এগুলো চালু হয়। একই সঙ্গে বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ ও মেরামত বেড়ে যাওয়ায় বাতাস স্বাভাবিকভাবেই দূষিত হয়ে পড়ে।
বায়ুর বৈশ্বিক মানদণ্ডকে অনুসরণ করে পরিবেশ অধিদপ্তর বায়ুর মান পর্যবেক্ষণ করে। বায়ুর মানমাত্রার সূচক ১০০-এর ওপরে উঠলে তা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক হয়ে ওঠে। বায়ুতে ক্ষুদ্র বস্তুকণা ও চার ধরনের গ্যাসীয় পদার্থ পরিমাপ করে এ সূচক তৈরি করা হয়।
পরিবেশ আইন অনুযায়ী, বাতাসে ক্ষুদ্র বস্তুকণা বা ‘পিএম ২.৫’-এর মানমাত্রা হচ্ছে প্রতি কিউবিক মিটারে ১৫ মাইক্রোগ্রাম। ‘পিএম ১০’ বা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বস্তুকণার মানমাত্রা ৫০ মাইক্রোগ্রাম। ২০১৫ সালে রাজধানীতে পিএম ২.৫-এর গড় ছিল ৮১ মাইক্রোগ্রাম। ২০১৬ সালে ছিল ৭৬ মাইক্রোগ্রাম। পিএম ১০-এর গড় ২০১৫ সালে ১৪৮ মাইক্রোগ্রাম ও ২০১৬ সালে আরও বেড়ে হয়েছে ১৫৮ মাইক্রোগ্রাম।

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি 

প্রকাশ :ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৮ ১০:৫০ পূর্বাহ্ণ