নিজস্ব প্রতিবেদক:
বর্তমান প্রক্রিয়ায় কোনোভাবেই প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকানো সম্ভব নয়। আমাদের এমন কোনো প্রক্রিয়ায় যেতে হবে যেখানে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সুযোগ থাকবে না। আর এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। ব্যক্তিগতভাবে আমি উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছি। খুব দ্রুতই এই প্রক্রিয়া হয়তো আমরা উদ্ভাবন করতে পারবো।’ প্রশ্ন ফাঁস বিষয়ে আদালতের দেয়া নির্দেশের বিষয়ে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসেন এসব কথা বলেন।
কোর্টের রায়ের প্রসঙ্গ টেনে সচিব বলেন, ‘আমরা আমাদের কর্মকর্তাদের কোর্টে পাঠিয়েছি। কোর্ট কী আদেশ দিয়েছে সেটি সংগ্রহ করার জন্য। অবশ্যই আদালত যে আদেশ দেবে সেটি আমরা পরিপূর্ণভাবে পালন করবো। কিভাবে প্রতিপালন করবো সেটা মন্ত্রীসহ বসে নির্ধারণ হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি আদালতের কোনো বিষয় না জেনে কোনো কথা বলার জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত নই। আদালত যেকোনো সিদ্ধান্ত দিলে আমরা সেটা প্রতিপালন করতে বাধ্য। আপনারা বলছেন আমাদের নিস্ক্রয়তা আছে, এটা থাকলে আমরা তা আদালতের কাছে তা বলবো।’
‘সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, আমাদের একটি প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করতে হবে; যে প্রক্রিয়ায় প্রশ্নফাঁস হওয়ার অবকাশ থাকবে না। আর তাতে সকলে মিলে এগিয়ে আসতে হবে,’ যোগ করেন শিক্ষা সচিব।
তিনি বলেন, ‘পাবলিক পরীক্ষা যথাযথ পরিচালনা করা এককভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দ্বারা সম্ভব নয়। আগেও কখনো সম্ভব হয়নি। এখানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ আরোও বিভিন্ন উইং যুক্ত।’
শিক্ষা সচিব আরো বলেন, ‘সারাদেশে এ পরীক্ষার সাথে ২৭ থেকে ২৮ হাজার মানুষের ইনভলভমেন্ট। এতগুলো মানুষের মধ্যে একজন লোকও যদি অসৎ হোন তাহলে বাকী সমস্ত সৎ মানুষের অবদান ভেস্তে যায়।’
প্রশ্ন ফাঁস দ্রুত ছড়াতে ইন্টারনেট দায়ী এমন প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘প্রশ্ন যদি দ্রুত প্রচারের জন্য নেট সিস্টেম না থাকতো তাহলে যারা প্রশ্ন ফাঁসের সাথে জড়িত তাদের জন্য এ কাজটা এতোটা সহজ হতো না। মুহূর্তের মধ্যে একটি জায়গায় প্রশ্ন ফাঁস হলেই তা ছড়িয়ে যাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নেটের কারণে প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে তা নয়। বরং যেখানেই প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে তা দ্রুততার সাথে ছড়িয়ে যাচ্ছে। আর এই নেট যদি না থাকতো তাহলে এতো দ্রুত ফাঁস হওয়া প্রশ্ন ছড়িয়ে যেত না। হয়তো কেউ জানতেই না।’
‘আগে মানুষের নৈতিকতা ছিল উন্নত। তখন প্রশ্ন কোনো স্থানে ফাঁস হলেও তা একজন আরেকজনকে বলতো না। লজ্জা করতো। ভাবতো আমাকে খারাপভাবে নেবে। এখন তা নয়। এখন নিজের থেকে অন্যকে প্রশ্ন অনলাইনে পাঠিয়ে দেয়,’ বলেন শিক্ষা সচিব।
তিনি বলেন, ‘এখন ফেসবুকে ষ্ট্যাটাস দিয়ে প্রশ্ন ফাঁস জানান দিচ্ছে। এটা গার্ডিয়ান থেকে শুরু করে সকলের মধ্যে এ প্রবণতা শুরু হয়েছে।’
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ