২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | দুপুর ১:৪৭

জ্যাকব জুমার বিদায় ঘন্টা বাজছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে রবার্ট মুগাবের বিদায়ের পর দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমার বিদায় ঘণ্টা বেজে উঠেছে। ক্ষমতাসীন দল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (এএনসি) তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করতে আহ্বান জানাবে। কিন্তু তিনি পদত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে বলা হয়, মঙ্গলবার দিনের শুরুর দিকেও এএনসির সিনিয়র নেতারা ম্যারাথন বৈঠক করেন। এ সময় সিদ্ধান্ত হয়, জ্যাকব জুমাকে পদত্যাগ করতে বলা হবে।

তবে তাতে এখনও ৭৫ বছর বয়সী জুমার শরীরে নাড়া লাগে নি। যদি তিনি পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটের মুখোমুখি হন তাহলে হেরে যাওয়ার আশঙ্কাই বেশি। তিনি ২০০৯ সাল থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট। কিন্তু তার বিরুদ্ধে অনেক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তবে তিনি সব সময়ই জোর দিয়ে এ অভিযোগ অস্বীকার করছেন। ২০১৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বোচ্চ আদালত রায় দেয় যে, ব্যক্তিগত বাসা মেরামতে জ্যাকব জুমা সরকারি যে অর্থ খরচ করেছেন তা ফেরত দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। এর মাধ্যমে তিনি সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। গত বছর দেশটির সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ রায় দেয়, তাকে দুর্নীতি, প্রতারণা অর্থ পাচার সহ মোট ১৮টি অভিযোগের মুখোমুখি হতে হবে।

সম্প্রতি একটি খবর প্রকাশিত হয়। তাতে বলা হয়, ভারতীয় বংশোদ্ভূত সম্পদশালী এক গুপ্ত (পদবী) পরিবারের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক রয়েছে জ্যাকব জুমার। ওই পরিবারটির বড় রকম প্রভাব আছে সরকারের ভিতরে। এ খবর প্রকাশ হওয়ার পর জ্যাকব জুমার জনপ্রিয়তায় ধস নামে। ডিসেম্বরে জ্যাকব জুমার পদত্যাগ দাবি ক্রমশ বাড়তে থাকে। এ সময় এএনসির নতুন নেতা হিসেবে আসেন সাইরিল রামাফোসা। জ্যাকব জুমাকে পদত্যাগের জন্য চাপের পিছনে কি তার হাত আছে! এ বিষয়টি নিশ্চিত নয়। তবে এটাও নিশ্চিত করে বা স্পষ্ট করে বোঝা যাচ্ছে না, আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগের দাবি উঠলে জ্যাকব জুমা কিভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবেন। ধারণা করা হচ্ছে মঙ্গলবার দিনের শেষভাগে জ্যাকব জুমাকে পদত্যাগের আনুষ্ঠানিক আহ্বান জানাবে এএনসি।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এএনসি আনুষ্ঠানিকভাবে জ্যাকব জুমাকে পদত্যাগের আহ্বান জানানোর বিষয়ে নিশ্চিত হয় নি। তবে দলীয় বিভিন্ন সূত্র দক্ষিণ আফ্রিকার মিডিয়া ও বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বিষয়টি অবহিত করেছে। ওদিকে এএনসির সিনিয়র নেতাদের বৈঠক চলাকালে জাতীয় নির্বাহী কমিটির ওই বৈঠক থেকে উঠে যান সাইরিল রামাফোসা। তিনি সোজা চলে যান জ্যাকব জুমার বাসায়। সেখানে গিয়ে তিনি প্রেসিডেন্ট জুমাকে হানিয়েছেন, স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করলে তাকে পদত্যাগ করতে বলা হবে। এ কথা জানিয়ে তিনি পরে আবার ওই বৈঠকে ফিরে যান। এখন জ্যাকব জুমার ভাগ্যে আসলে কি ঘটবে তা নিশ্চিত করে বলা মুশকিল।

তবে বলা হচ্ছে, যদি তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করতে বলা হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা বা সেই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করা জ্যাকব জুমার জন্য খুবই কঠিন হয়ে যাবে। আবার রিপোর্টে বলা হচ্ছে আইনগতভাবে পদত্যাগ করতে বাধ্য নন জ্যাকব জুমা। তিনি যদি দলীয় আস্থা হারান তাহলেও কৌশলগতভাবে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট থেকে যেতে পারবেন। যদি সেটাই হয়, তাহলে তার সামনে আসতে পারে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোট। এরই মধ্যে এ ভোটের জন্য দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হয়েছে। সেটা হলো ২২ শে ফেব্রুয়ারি। এর আগে এমন বেশ কিছু ভোটে উতরে গেছেন তিনি। তবে শেষ রক্ষা হওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি

প্রকাশ :ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৮ ২:৪১ অপরাহ্ণ