নিজস্ব প্রতিবেদক:
৩৬তম বিসিএস নন-ক্যাডার পদে আবেদনকারী প্রায় সব পরীক্ষার্থী এবার চাকরি পাচ্ছেন। নন-ক্যাডার পদে উত্তীর্ণ তিন হাজার ৩০৮ জনের মধ্যে ২৭শ’ পরীক্ষার্থী আবেদন করেছেন। এই ২৭শ’ প্রার্থীকে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করবে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। আগামী মার্চ মাসের শেষদিকে প্রথমদফা প্রথম শ্রেণির পদে এ সুপারিশ করা হতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এদিকে, আবেদনকারী প্রার্থীরা নন-ক্যাডার দ্বিতীয় শ্রেণিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে যেতে সন্তুষ্ট নন বলে জানিয়েছেন। তারা বলছেন, প্রধান শিক্ষক পদে যেতে তাদের আপত্তি নেই। প্রধান শিক্ষকের পদ এখনও ১২তম গ্রেড। পিএসসি নন-ক্যাডারে নবম ও দশম গ্রেড ছাড়া নন-গেজেটেড পদে নিয়োগ দিতে পারে না। একই বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়েও কাউকে নবম-দশম গ্রেড ও কাউকে ১২তম গ্রেড প্রদানকে বৈষম্য হিসেবে দেখছেন তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেন, শূন্য পদের চাহিদা থাকা সাপেক্ষে পিএসসি বিভিন্ন পদে নিয়োগের সুপারিশ করে থাকে। এখানে পিএসসির কিছু করার নেই। তবে প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষক পদ কোন্ গ্রেডে অন্তর্ভুক্ত হবে, সেটা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় দেখবে। আমরা আশা করছি ৩৬তম বিসিএস থেকে এবার সর্বোচ্চ সংখ্যক নন-ক্যাডার প্রার্থী নিয়োগের জন্য সুপারিশের চেষ্টা করবো।
পিএসসি সূত্রে জানা গেছে, ৩৬তম বিসিএস থেকে নন-ক্যাডারে আবেদনকারী সব প্রার্থীকে চাকরির জন্য নিয়োগের সুপারিশ করতে চায় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। ইতিমধ্যে নন-ক্যাডারের ৪২২টি প্রথম শ্রেণি, ৩৬৫টি দ্বিতীয় শ্রেণির এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে চার হাজার ৩২০টি শূন্য পদের তালিকা এসেছে। এমতাবস্থায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রার্থীকে নিয়োগের সুপারিশ করা ছাড়া পিএসসির বিকল্প নেই। এছাড়াও কোটা শিথিলের জন্য ইতিমধ্যে আবেদন করছে কমিশন। দ্রুত ইতিবাচক ফলাফল পাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গত বছরের ১৭ অক্টোবর ৩৬তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। এতে দুই হাজার ৩২৩ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়। পর্যাপ্ত ক্যাডার পদ না থাকায় তিন হাজার ৩০৮ জনকে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগে সুপারিশের জন্য উত্তীর্ণের তালিকায় রাখা হয়েছে। এর মধ্যে নন-ক্যাডার পদের জন্য প্রায় দুই হাজার ৭০০ প্রার্থী আবেদন করেছেন। প্রায় ৬০০ জন নন-ক্যাডারের জন্য আবেদন করেননি।
এর আগে ৩৫তম বিসিএস থেকে রেকর্ড সংখ্যক পরীক্ষার্থীকে নিয়োগের সুপারিশ করে পিএসসি। ওই বিসিএস থেকে দুই হাজার ১৬৩ জনকে শুধু নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। বিভিন্ন ক্যাডার পদে চূড়ান্ত ফলাফলে দুই হাজার ১৭৪ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছিল।
২৮তম বিসিএস থেকে বিসিএসের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও যারা কোনো ক্যাডার পাননি তাদের মধ্য থেকে প্রথম শ্রেণির নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ দেয়া হচ্ছিল। এক বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পর আরেকটি বিসিএসে উত্তীর্ণদের নিয়োগের আগ পর্যন্ত আগের বিসিএসে উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে প্রথম শ্রেণির নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ দেয়া হয়।
২০১৪ সালে নন-ক্যাডার নিয়োগ (বিশেষ) বিধিমালা ২০১০ সংশোধন করে বিসিএস উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা নিয়োগেরও সুযোগ করে দেয় সরকার। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও যারা ক্যাডার পায়নি তাদের মধ্যে যারা প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ পেতে ইচ্ছুক তাদের কাছে আবেদন চায় কমিশন। এরপর নিয়োগের সুপারিশ করছে পিএসসি। এতে করে মেধাবী পরীক্ষার্থীরা চাকরির নিশ্চয়তা পাচ্ছেন।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ