লাইফ স্টাইল ডেস্ক:
ভ্যালেন্টাইন’স ডে দুয়ারে। এ দিন পালিত হবে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। এ দিবসকে ঘিরে গড়ে উঠেছে কিছু প্রথা এবং মিথ। মানুষ কেন এসব প্রথার চর্চা করে। কেন পায়রা ভালোবাসার প্রতীক? কেন আমরা লাল পোশাকে আকৃষ্ট হই? কেন আমরা চুম্বন বোঝাতে ‘এক্স’ ব্যবহার করি চলুন জেনে নেই।
শান্তিপূর্ণ জীবনযাপনের জন্য বা শান্তির প্রতীক হিসেবে পায়রা পরিচিত। কিন্তু ভালোবাসা দিবসের নিদর্শন হিসেবেও এসব সাদা পাখির তুলনা হয় না। এরা ভালোবাসারও প্রতীক। পায়রার সঙ্গে ভালোবাসার যোগসূত্র গ্রীক পুরাণে পাওয়া যায়- পায়রা ছিল প্রেমের দেবী আফ্রোদিতির পবিত্র পাখি। তিনি তাদের পছন্দ করেছিলেন একগামী স্বভাবের জন্য। পায়রা প্রজনন মৌসুম একই সঙ্গীর সঙ্গে থাকে এবং নারী পায়রা বাচ্চা জন্ম দিলে পুরুষ পায়রা তাকে সেবা ও সহযোগিতা প্রদান করে।
অনেক আগে থেকে আবেগ ও যৌন আবেদনের রং হিসেবে লাল বিবেচিত হয়ে আসছে এবং বিজ্ঞানও এর পক্ষে কথা বলছে। ইউনিভার্সিটি অব রচেস্টারের মনোবৈজ্ঞানিকদের দ্বারা সম্পাদিত এক গবেষণায় পাওয়া যায়, ‘পুরুষরা লাল পোশাক পরিহিত নারী অথবা লাল ব্যাকগ্রাউন্ডের সামনে দাঁড়ানো নারীদের দিকে বেশি তাকায়। কারণ তাদেরকে অন্য রঙের পোশাক পরিহিত নারী বা অন্য রঙের ব্যাকগ্রাউন্ডের সামনে দাঁড়ানো নারীদের তুলনায় অধিক আকর্ষণীয়া ও যৌনাবেদনময়ী লাগে। লাল পোশাক পরিহিত পুরুষদের বেলায়ও নারীদের অনুভূতি একই। লাল রং বিশ্বাস, স্বতঃস্ফূর্ততা এবং দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক, যা রোমান্টিক সাধনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
মধযুগ থেকেই ‘এক্স’ চুম্বনের প্রতীক হিসেবে পরিচিতি পেয়ে আসছে। সর্বাধিক প্রচলিত থিওরি হচ্ছে, মধ্যযুগীয় যেসব লোকেরা পড়তে পারত না তারা ডকুমেন্টে এক্স সহকারে স্বাক্ষর দিত যা খ্রিস্টের প্রতীকের প্রতিনিধিত্বকারী। কারণ এটির সঙ্গে ক্রসের সাদৃশ্য ছিল। তারা ভক্তিস্বরূপ সশ্রদ্ধ চিত্তে এক্সকে চুম্বন করত। আলিঙ্গনের প্রতীক হিসেবে এবং এর উৎপত্তি সম্পর্কে তেমন স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি। এ সম্পর্কে একটি থিওরি হচ্ছে, এটি যৌনসহবাস থেকে এসেছে। অন্য একটি থিওরি হচ্ছে, এক্সওএক্স প্রতীক এবং টিক-ট্যাক-টো খেলা একই সময়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করে। হয়তো এভাবে এক্স এবং ও মানিকজোড় হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।
ভিক্টোরিয়ান যুগে লোকজন ফ্লোরিওগ্রাফি বা ফুলের ভাষার মাধ্যমে তাদের আবেগ প্রকাশ করত। কোনো বিশেষ ফুল কোনো নির্দিষ্ট অর্থ বহন করে, যেখানে লাল গোলাপ নির্দেশ করে রোমান্স। এখনো রোমান্সের প্রতীক হিসেবে লাল গোলাপ উপহার দেওয়া হয় এবং এগুলো আসলেই সস্তা। যদি এবারের ভালোবাসা দিবসে আপনি এক বাক্স চকলেট উপহার পান, তাহলে রিচার্ড ক্যাডবেরিকে ধন্যবাদ দিন। তিনি এবং তার ভাই তার পরিবারের চকলেট উৎপাদন ব্যবসার দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি হোল বিন থেকে পিউর কোকো বাটার নিষ্কাশন করার পদ্ধতি আবিষ্কার করেন এবং তা কোম্পানির চকলেট ড্রিংকে মেশান। এ প্রক্রিয়ায় প্রত্যাশার চেয়েও বেশি কোকো বাটার উৎপাদন হয়, তাই তিনি এটিকে খাওয়ার চকলেটের সঙ্গে যোগ করতে সমর্থ হন। তারপর ব্যবসায়ে আরো সমৃদ্ধি আনার জন্য ক্যাডবেরি তার নতুন চকলেটের জন্য (ভ্যালেন্টাইন’স ডে’র জন্য স্পেশাল চকলেটসহ) সুন্দর সুন্দর বাক্স ডিজাইন করেন। ধারণা করা হয়, তিনিই প্রথম হার্ট-আকৃতির ক্যান্ডি বাক্স তৈরি করেন, যদিও তিনি এটির প্যাটেন্ট করেননি।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি