আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
রূপাঞ্জনা দত্ত, লন্ডন, ব্রিটিশ সরকারের ‘অন্যায্য ও অমানবিক’ অভিবাসন নীতির বিরোধিতা করে প্রতিবাদে সামিল হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেদেশে কর্মরত উচ্চ কারিগরি মেধার ভারতীয় অভিবাসীরা। আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি পার্লামেন্ট স্কোয়ারে ওই প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি একইরকম শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে যোগ দিয়েছিলেন ভারত সহ পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার অভিবাসীরা। ওই কর্মসূচিতে বিপুল সাড়া মেলায় উজ্জীবিত ভারতীয় অভিবাসীরা ফের বৃহত্তর আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ইতিমধ্যেই এই মর্মে অভিবাসীদের একটি দল পিটিশন দাখিল করে প্রায় ২৫ হাজার সই সংগ্রহ করে ফেলেছে। ওই দলে ৬০০ জনের ওপর চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী, শিক্ষক, আইনজীবীরা রয়েছেন।
অতীতে টিয়ার ১ (সাধারণ) ভিসার আওতায় দক্ষ ও উচ্চমেধার অভিবাসী কর্মীরা ন্যূনতম পয়েন্টেই ব্রিটেনের ভিসার ছাড়পত্র পেয়ে যেতেন। ২০১০ সালে স্বরাষ্ট্র সচিবের পদে বসার পরই এই ভিসা বন্ধ করে দেন টেরিজা মে। পিটিশন দাখিলকারী অদিতি ভরদ্বাজ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা খবরে দেখি বেআইনি অভিবাসীদের জন্য ব্রিটেনে প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। কিন্তু, আসলে বর্তমান সরকারের আমলে বৈধ অভিবাসীদের ক্ষেত্রেও একই প্রতিকূল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই যাঁরা এখানে বড় সংস্থায়, বড় পদে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছেন, তাঁদেরও এই অমানবিক পরিস্থিতির মুখে পড়তে হচ্ছে।’ এমনই এক ভুক্তভোগী বার্মিংহামের কুইন এলিজাবেথ হাসপাতালের চিকিৎসক পাক বংশোদ্ভূত ডা: সৈয়দ কাজমির আবেদন নাকচ হয়ে যাওয়ায় ফেব্রুয়ারিতেই তাঁর পাকিস্তান ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে। কর জমা দেওয়া সংক্রান্ত কোনও অনিয়মের কারণেই তাঁর আবেদন বাতিল হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। অন্যদিকে, সবিতা ব্যাস নামে এক মহিলাও এই ভিসা-নীতির গেরোয়ে পড়ে বেশ কয়েক দিন হিথরোর নির্বাসনকেন্দ্রে কাটিয়েছেন বলে অভিযোগ।
প্রতিবাদীদের দাবি, সরকার অভিবাসন নীতি শিথিল করার পরিবর্তে বৈধ অভিবাসীদের ওপর আরও কঠিন শর্ত চাপিয়ে দিচ্ছে। যার ফলে প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সে দেশে বসবাসকারী বৈধ অভিবাসীদের সামনেও ব্রিটেন ছাড়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যদিও, ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্রের কথায়, ‘আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সমস্ত ভিসার আবেদনপত্রগুলির নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করছি। তবে, অপেক্ষাকৃত জটিল টিয়ার ১ ভিসা নিয়ে অনুমোদন ও যাচাই প্রক্রিয়ার গুরুত্ব অস্বীকার করার উপায় নেই।’
সহস্রতম ছাত্র
ব্রিটেনের বার্মিংহাম সিটি ইউনিভার্সিটি ইন্টারন্যাশনাল কলেজের সহস্রতম ছাত্র হিসেবে জায়গা করে নিল ভারতীয় বংশোদ্ভূত ছাত্র রচিত প্যাটেল। রচিত ওই কলেজের আর্ট অ্যান্ড ডিজাইন বিভাগে ভর্তি হয়েছে। গত সোমবার একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রচিতকে সম্বর্ধনা দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। সঙ্গে ভবিষ্যতের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য রচিতকে ১০০০ পাউন্ড অর্থ সাহায্যও করা হয়। সবশেষে বিশেষ কেক কেটে কলেজের এই তাৎপর্যপূর্ণ ‘মাইলফলক’ উদযাপন করা হয়।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ